আগস্টেও চোখ রাঙাচ্ছে এইডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর। মাসের প্রথম ৬ দিনেই এ জ্বরে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪২৮ জন, এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।
আগেরদিন (মঙ্গলবার) হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা ছিল ৩১৯ জন আর মৃত্যু হয়েছিল ৩ জনের। অর্থাৎ টানা ২ দিন ৩ জন করে রোগীর মৃত্যুর খবর দিল অধিদপ্তর।
তাদের নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে অধিদপ্তরের তালিকায় থাকা হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছে ২২ হাজার ৮১২ জন, তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম ৬ দিনে সরকারি হিসেবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগী সংখ্যা এক হাজার ৮৩২ জন, যা কিনা গত মে মাসের থেকেও বেশি; তখন পুরো মাসে রোগী সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭৭৩ জন। এই ৬ দিনে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
এর আগে গত জুলাইয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৪১ জনের, যা কিনা চলতি বছরে এক মাসে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা ছিল গত জুনে; ১৯ জনের।
এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন জন, এপ্রিলে সাত জন, মে মাসে তিন জন মারা যান। মার্চ মাসে কোনও ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়নি।
আর গত জুলাই মাসে সরকারি হিসেবে রোগী সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৬৮৪ জন, যা কিনা বছরের সবচেয়ে বেশি রোগী। জুনে ছিল ৫ হাজার ৯৫১ জন। চলতি বছর জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন এবং মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪২৮ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী বরিশাল বিভাগে; ১০৪ জন। বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৯ জন, ঢাকা বিভাগে ৭৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৬২ জন, খুলনা বিভাগে ৩০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫০ জন আর রংপুর বিভাগে ৪ জন।
এ সময়ে প্রাণ হারানো ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগ, রাজশাহী বিভাগ আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকার মিরপুরের ডেল্টা হাসপাতালে ৪০ বছরের এক নারী, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ বছরের এক শিশু আর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭২ বছরের এক পুরুষ।
অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরে মোট মারা যাওয়া ৯২ জনের মধ্যে পুরুষ ৫৩ জন আর নারী ৩৯ জন।
২০০০ সালে দেশে ডেঙ্গুর তথ্য রাখতে শুরু করে সরকার। সে বছরে রোগী ছিল ৫ হাজার ৫৫১ জন। এই রোগে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ রোগীর সঙ্গে সর্বোচ্চ মৃত্যুও দেখে বাংলাদেশ।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন, তাদের মধ্যে মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন; তাদের মধ্যে মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের।