‘মব’ সৃষ্টি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাকে মারধরের ঘটনায় সেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও মামলার প্রধান আসামি মোজাম্মেল হক ঢালীসহ তিন জনের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
বুধবার শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্যাহর আদালত এ আদেশ দেয়।
জামিন পাওয়া বাকিরা হলেন, উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ ও উত্তরা পূর্ব থানা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কাইয়ূম।
গত ২৩ জুন রাতে সেনাবাহিনীর একটি দল হানিফকে উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে। এ ঘটনায় ২৪ জুন উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক সজীব হাসান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। হানিফের পক্ষে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে জামিন শুনানির দিন বুধবার ধার্য করেন।
এদিকে আসামি মোজাম্মেল হক ঢালী এবং কাইয়ুম আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত জামিনযোগ্য ধারায় অপরাধ হওয়ায় আগামী ধার্য তারিখ আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত পাঁচশ টাকা মুচলেকায় তাদের জামিনের আদেশ দেয়।
আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
সাবেক আমলা নূরুল হুদা ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন। ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। ‘দিনের ভোট রাতে’ কথাটি এসেছে ওই নির্বাচন থেকে।
গত ২২ জুন কে এম নূরুল হুদাকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতেই একদল মব তাকে নানাভাবে লাঞ্ছিত করে। শারীরিকভাবেও হেনস্তা করা হয় সাবেক এই সিইসিকে। সেই ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে এটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিষয়টি নজরে আসার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি আসে। তাতে আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
গ্রেপ্তারের পর প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে বিএনপির করা মামলায় ২৩ জুন নুরুল হুদাকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে চার দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) অনুমতি পায় পুলিশ।