সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার স্ত্রী মোছা. হোসনে আরা বেগমের নামে থাকা জমি ও প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।
এছাড়া নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার স্ত্রীর নামে থাকা ৫৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
নুরুজ্জামানের ৩২ ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ৫০৪ টাকা এবং হোসনে আরার ২৫ ব্যাংক হিসাবে ৮১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৭ টাকা রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলাদা দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেয়।
দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন এসব আবেদন করেন।
জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে নুরুজ্জামানের গাজীপুরের পূর্বাচল নতুন শহরে দশ কাঠার একটি প্লট ও লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় সাত শতক জমি রয়েছে। এসব জমির মূল্য ধরা হয়েছে, ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। নুরুজ্জামানের স্ত্রী হোসনে আরা বেগমের নামে থাকা লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় ১১৬ শতক জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ দায়িত্বে পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রেখেছেন। তিনি অবৈধভাবে টাকার উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আসামি নুরুজ্জামান আহমেদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া একান্ত আবশ্যক।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর নুরুজ্জামান আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান চলাকালে গত ৩০ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিসের গলির মধ্যে তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নুরুজ্জামান আহমেদ, তার স্ত্রী মোছা. হোসনে আরা ও ছেলে মো. রাকিবুজ্জামান আহমেদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে দুদক।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, তার স্ত্রী মোছা. হোসনে আরা বেগমকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয় একই আদালত।
‘দুদক কর্মকর্তা’ পরিচয়ে ঘুষ চাওয়া প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য রিমান্ডে
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা পরিচয় ধারণ করে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যের দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেয়।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন, সেলিম (৪০), মো. তরিকুল ইসলাম (৪০), মো. আতিক (৩৮) মো. আবদুল হাই সোহাগ (৩৫) ও মো. সোহাগ পাটোয়ারী (৪০)।
এর আগে, মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানা আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করে। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৪ জুন দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ঘুষ চাওয়া নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ যে ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমে গত শনিবার ঢাকার মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি চক্রের চার জনকে গ্রেপ্তার করে দুদক। অন্যান্য আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের সহযোগিতায় আসামি সোহাগ পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশকে হস্তান্তর করেন।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি সনি ডিজিটাল এইচডি ক্যামেরা, বুম, সেলফি স্টিক, দুটি পাসপোর্ট, সমকাল পত্রিকার নামে আইডি কার্ড, সমকাল, এশিয়ান টিভি ও এফসি টিভির ভিজিটিং কার্ড, সোনালী ব্যাংকের চেক বই, ছয়টি মোবাইল সেট ও ১৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা দুদকের চেয়ারম্যান ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।