সুইডেনের কিংবদন্তি জ্লাটান ইব্রাহিমোভি। আয়াক্স, বার্সা, মিলান, জুভেন্টাস, পিএসজির মত ক্লাবে দাপটে খেলা এই কিংবদন্তি সুইডেনে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মালমো ক্লাবে। সুইডেনের শীর্ষ লিগ আলসভেনসকানে গত ১২ মৌসুমে ৮ বার চ্যাম্পিয়ন মালমোর যা বাজেট তার মাত্র ১৫ শতাংশ বাজেট এই লিগৈরই আরেক দল মিয়ালবির। সেই মিয়ালবি গড়ল নতুন ইতিহাস। তিন ম্যাচ বাকি থাকতে জিতে নিল লিগ।
গতকাল (সোমবার) গোথেনবার্গকে ২–০ গোলে হারানোর পর সুইডেনের লিগ জয় নিশ্চিত হয় মিয়ালবির। ২৬ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে মিয়ালবি। ২৭ ম্যাচে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকা হ্যামারবাইয়ের সঙ্গে ১১ পয়েন্টে এগিয়ে তারা। বাকি ৩ ম্যাচ হারলেও মিয়ালবিকে টপকে যেতে পারবে না কেউ।
এমন সাফল্যের পর মিয়ালবিকে নিয়ে আলোচনারে ঝড় উঠেছে বিশ্ব ফুটবলে। ‘দ্য অ্যাথলেটিক’ এই সাফল্যকে তুলনা করেছে ২০১৫–১৬ মৌসুমে লেস্টার সিটির ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ের সঙ্গে। লেস্টার তখন যেমন খুব অপ্রত্যাশিতভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, মিয়ালবিও তাই।
ক্লাবটি উঠে এসেছে সুইডেনের দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের গ্রাম হ্যালেভিক থেকে। এই গ্রামের জনসংখ্যা মাত্র ১০০০–এর মত। সেখান থেকে উঠে এসে লিগ জেতাটা রূপকথার মতই। হ্যালেভিক গ্রামের দেয়ালে খোদাই করা আছে, ‘মেক দ্য ইম্পসিবল পসিবল’। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে তারা।
মিয়ালবির কোচ টরস্টেনসন এই সাফল্য নিয়ে বললেন, ‘‘এটা নিয়ে আপাতত ভাবার দুঃসাহস দেখাতে চাই না। এটাই আমার ঘর। আমি মিয়ালবি গ্রামে জন্মেছি। অল্প সুযোগ–সুবিধা, অল্প বাজেট নিয়ে মিয়ালবি অনেক বছর ধরেই সুইডিশ ফুটবলে আন্ডারডগ ছিল।’’
টরস্টেনসন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা। একটা স্কুলের প্রধান শিক্ষকও। সময় বের করে মিয়ালবির খেলোয়াড়দের কোচিং করান তিনি। ক্লাবটির বাল্টিক সাগর তীরবর্তী স্টেডিয়াম স্ট্রানভ্যালেনে অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ হবে না। কারণ এখানে মাত্র ৬ হাজার দর্শকই একসঙ্গে খেলা উপভোগ করতে পারেন, যা উয়েফার মানদণ্ডের সঙ্গে যায় না।
দলের খেলোয়াড়দের গড় বয়স ২৪ বছর। বেশির ভাগই থাকেন মিয়ালবির নিকটবর্তী সবচেয়ে কাছের শহর সলভেসবোর্গে। তারা সাধারণ গাড়িতে বা গাড়িতে একসঙ্গে গাদাগাদি করে অনুশীলনে আসেন। সেই তাদের এমন সাফল্য অবিশ্বাস্যই।