প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর রাজধানী ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথে পুরোপুরি মেট্রোরেল সেবা চালু হয়েছে।
গতকাল রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেইট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে এক পথচারীর প্রাণহানির পরপরই উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তির মুখে পড়েন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় এই গণপরিবহনের যাত্রীরা।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে যাত্রীদের ধৈর্য ধারণের অনুরোধ জানায় ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে প্রাণ গেল পথচারীর, যোগাযোগ বিঘ্নিত
প্রথম আলো জানিয়েছে, সোমবার বেলা ১১টার দিকে এই সেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে আবার চালু হয়েছে।

রবিবারের দুর্ঘটনায় নিহত পথচারী আবুল কালাম আজাদের (৩৫) বাড়ি শরীয়তপুরে। স্বজনরা জানিয়েছেন, তার মা-বাবা নেই। স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি থাকতেন নারায়ণগঞ্জে। ঢাকায় ট্রাভেল এজেন্সির কাজে এসেছিলেন তিনি।
দুর্ঘটনার আড়াই ঘণ্টা পর রবিবার বিকাল ৩টার দিকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। আর পৌনে সাত ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।

ফার্মগেইটের যেখানে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে, সেখানে সোমবার সকালে তা নতুন করে লাগানো হয়। এরপর বন্ধ অংশে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়।
ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, আগারগাঁও থেকে শাহবাগ অংশে একাধিক দফায় পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। এতে কোনও সমস্যা পাওয়া যায়নি। তাই বেলা ১১টায় পুরোদমে মেট্রোরেল চালু করা হয়।
পুরোদমে চালুর পর বেলা ১১টা ১৬ মিনিটে উত্তরামুখী প্রথম ট্রেন ফার্মগেইট ছাড়ে। একই সময় আরেকটি ট্রেন মতিঝিলের পথে ফার্মগেইট ছাড়ে।
বিডিনিউজ জানিয়েছে, এর আগে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর একই এলাকায় বিয়ারিং প্যাড পড়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হলেও সেবার কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।

কম্পন প্রতিরোধের জন্য সেতু বা উড়াল সেতুতে এই ইলাস্টোমোরিক বিয়ারিং প্যাড বসানো থাকে। এ প্যাড নিওপ্রেন বা প্রাকৃতিক রাবার দিয়ে তৈরি, যা পিয়ার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো হয়। কোনোটির ভেতরে কয়েক পরতে থাকে স্টিলের কাঠামো, আর উপরে থাকে রাবার। এগুলো ওজনে অনেক ভারী হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার দুপুরে ওই প্যাড পড়ে একজন মারা যাওয়ার পাশাপাশি ফুটপাতে একটি চায়ের দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির পরিবারকে নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।



