Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

ব্লকেড নয়, বিক্ষোভ কর্মসূচি এনসিপির

গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনে নেমেছিল এনসিপির স্থানীয় নেতারা। পরে অবশ্য দলের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি তুলে নিতে বলা হয়।
গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনে নেমেছিল এনসিপির স্থানীয় নেতারা। পরে অবশ্য দলের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি তুলে নিতে বলা হয়।
[publishpress_authors_box]

গোপালগঞ্জে হামলার পর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা অবরুদ্ধ হয় পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ডাকলেও পরে তা থেকে সরে এসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে দলটি।

অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলায় আক্রান্ত হওয়ার বুধবার বিকালে এনসিপির ফেইসবুক পাতায় ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে এনসিপি সমর্থকরা সড়কে অবস্থান নিয়ে গাড়ি চলাচল আটকে দেয়।  

ঘণ্টাখানেক পরে দলীয় নেতারা নিরাপদে উদ্ধার পেয়েছেন জানিয়ে এনসিপির ফেইসবুক পাতায় ‘ব্লকেড’ তুলে নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়।

দলটির ফেইসবুকে পাতায় দেওয়া পোস্টে দলীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ‘জরুরি নির্দেশনা’ দিয়ে বলা হয়, “সারা দেশের রাজপথের ব্লকেড সরিয়ে নিন। রাস্তার একপাশে অবস্থান করুন। লড়াই চলবে।”

নাহিদের সঙ্গে গোপালগঞ্জে থাকা এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ফেইসবুকে লিখেছেন- “ব্লকেড সরিয়ে নিন। রাজপথের একপাশে অবস্থান করুন। লড়াই চলবে। -নাহিদ”

গোপালগঞ্জে থাকা এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীও ফেইসবুকে লিখেছেন- “ব্লকেড উঠিয়ে নিন, রাজপথে অবস্থান নিন।”

গোপালগঞ্জে সমাবেশের হামলা-সংঘর্ষের মধ্যে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন পদযাত্রা নিয়ে জেলাটিতে যাওয়া এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে তাদের উদ্ধারের একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় এসেছে। সেখানে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমসহ অন্যদের উঠতে দেখা গেছে।

এরপর এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ এক ফেইসবুক পোস্টে বলেন, “আমাদের ভাইয়েরা নিরাপদ আছেন। সারাদেশের বিক্ষুব্ধ জনতাকে ব্লকেড তুলে নিয়ে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে সকল জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ প্রদর্শন জারি রাখার অনুরোধ জানানো হলো।”

এর আগে অবরুদ্ধ অবস্থায় থেকে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী এসপি অফিসে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সারাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের সবাই গোপালগঞ্জে জড়ো হয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

“ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে যদি পুলিশ প্রশাসন, আর্মি প্রশাসন যদি তারা নিরাপত্তা দিতে না পারে, আমরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যুদ্ধ ঘোষণাতে প্রস্তুত হতে যাচ্ছি।”

তখন সারজিস ফেইসবুকে লিখেছিলেন, “গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের উপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, নাহয় ফিরব না।

“সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জের ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন।”

যে অভ্যুত্থানে গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে, তাতে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল এনসিপি গত ১ জুলাই উত্তরাঞ্চল থেকে পদযাত্রা শুরু করে। ষোড়শ দিনে গোপালগঞ্জে আসার পর প্রথম হামলার মুখে পড়ে তারা।

মঙ্গলবার রাতেই এনসিপির ফেইসবুক পাতায় ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল- “১৬ জুলাই ————– মার্চ টু গোপালগঞ্জ #NCP।” তারপর থেকে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত গোপালগঞ্জে উত্তেজনার আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল।

এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছার আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

এরপর বেলা পৌনে ২টার দিকে ২০০ থেকে ৩০০ লোক ‘জয় বাংলা স্লোগান’ দিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা চালায়।

পুলিশ ও এনসিপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ধাওয়ায় তা পিছু হটার পর পদযাত্রা পৌঁছায় গোপালগঞ্জে। পৌর পার্কে সমাবেশও করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই সমাবেশ থেকে হামলাকারীদের কঠিন জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন এনসিপি নেতারা। গোপালগঞ্জকে ‘মুজিবাবাদীমুক্ত’ করার ঘোষণাও দেন নাহিদ।

সমাবেশ শেষে এনসিপির গাড়িবহর রওনা হওয়া পরপরই আবার পৌর পার্কে হামলা হয়। হামলাকারীরা সমাবেশের মঞ্চ ভাংচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয়।

এনসিপির গাড়িবহর গাড়িবহর গোপালগঞ্জ ছেড়ে মাদারীপুরে রওনা হওয়ার সময় শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ব্যাপক হামলার মুখে পড়ে। তখন র‌্যাব-পুলিশের পাহারায় এনসিপি নেতাদের গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

অন্যদিকে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে হামলাকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হলে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত