Beta
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া : বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন রবিবার রাজধানীর লালবাগে পোস্তা চামড়া আড়ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ছবি : পিআইডি
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন রবিবার রাজধানীর লালবাগে পোস্তা চামড়া আড়ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ছবি : পিআইডি
[publishpress_authors_box]

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশুর চামড়া। নির্ধারিত দাম কার্যকরে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ দল।

রবিবার সন্ধ্যায় লালবাগের পোস্তায় কোরবানির পশুর চামড়া সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এতথ্য জানান বলে জানিয়েছে বাসস।

উপদেষ্টা এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমরা যে চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছিলাম সেটি ছিল লবণসহ দাম। সাতশ থেকে আটশ টাকা যেটা বিক্রি হচ্ছে সেটি লবণ ছাড়া। বিগত বহু বছর ধরে যে দামে বিক্রি হতো এই দাম তার থেকে বেশি।”

মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম পাচ্ছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “এটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসত্য। অসত্য এজন্য যে কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী যাদের চামড়া সংরক্ষণের ব্যাপারে কোনও অভিজ্ঞতা নেই, তারা চামড়া নিয়ে আধা পচা করে ফেলছে। আধা পচা চামড়া সাতশ আটশ টাকা বিক্রি হলে তো এটা অনেক বেশি। আর যেটা ভালো চামড়া সেটি বারো থেকে তেরোশ টাকা বিক্রি হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমরা যে কাজটা শুরু করি তা হলো স্থানীয়ভাবে মজুত এবং লবণ দেওয়াকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে চামড়া সংরক্ষণ ও মজুত উপযোগী করা। যার ফলে বাজার ব্যবস্থাপনায় একটা স্থিতি এবং বাজারের চাহিদা ও সরবারহের মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, “মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন চামড়া ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে। জাতীয় পর্যায়ে আমরা একটি কন্ট্রোল রুম করেছি। সেখানে ২৪ ঘণ্টা চামড়া ব্যবস্থাপনা মনিটরিং হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি চামড়ার উপযুক্ত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে যেটা লবণ দেওয়া চামড়া। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই সেটা বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ও মেইনস্ট্রিমের কিছু মিডিয়াও ভুল তথ্য প্রচার করছে।

“চামড়া পচে গিয়েছে এমন একটি তথ্য দেখলাম চিটাগাং এর রাঙ্গুনিয়ার। একজন মৌসুমী ব্যবসায়ী ৬২০ টির মতো চামড়া নিয়ে এসেছেন, তিনি চামড়াটি সংরক্ষণ উপযোগী করেননি। চামড়াটি আধা পঁচে গেছে।

এটা নিয়ে একটি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে চামড়ার বাজারে আবারও একটা ধস নামানোর পরিকল্পনা করছে।

সরকার উদারভাবে লবণ দিয়েছে শুধুমাত্র উপযোগী করার জন্য। সব দায় সরকারের উপর দিয়ে দিলে চলবে না আপনি যদি আপনার নিজের দায়িত্ব পালন না করেন আকাঙ্ক্ষা করাটাও শোভনীয় নয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “সরকার সক্ষমতা তৈরীর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এ কাজে সহযোগিতা করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। লবণ লাগিয়ে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে উপযুক্ত দাম চান আমি আশা করি উপযুক্ত দামই পাবেন। আমি আশা করছি তার চেয়েও বেশি দাম পাবেন।”

সরকার চাহিদা তৈরির জন্য কাঁচা চামড়া এবং ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। প্রণোদনার ২২০ কোটি টাকা ছাড় করিয়েছে। সারাদেশের প্রত্যেক জেলায়, উপজেলায়, গ্রামে মসজিদে মসজিদে লবন পৌঁছে দিয়েছে। এখন এর সঙ্গে সকলের সংযুক্ত হতে হবে।

তিনি বলেন, “এককভাবে সরকারকে দায়ি করে কিছু ভুল তথ্য ও অপতথ্য ছড়িয়ে চামড়ার বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা ন্যাক্কারজনক কাজ হবে বলে আমি মনে করি।”

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “চামড়ার দাম গতকালের তুলনায় আজকে বেড়েছে। আশা করছি লবণযুক্ত চামড়ার দাম আগামীকাল আরও বাড়বে। আমরা চামড়া সংরক্ষণের সক্ষমতা তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে দুই থেকে তিন মাস চামড়া ধরে রাখতে (সংরক্ষণ) পারবেন।”

ধরে রেখে উপযুক্ত দাম না পাওয়া পর্যন্ত বিক্রি না করার আহবান জানান তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমরা চামড়ার মূল্য বৃদ্ধি এবং এতিমদের হক আদায়ের উদ্দেশ্যে এটাকে উপযোগী করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব করার চেষ্টা করেছি। এ বছরের শিক্ষা থেকে আগামী বছর রাজনৈতিক সরকার আমার ধারণা আরও বেশি কিছু করবে।”

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশন(বিটিএ)-এর সভাপতি মো. শাহীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত