Beta
বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫

দুর্নীতির ৬ মামলায় শেখ হাসিনার বিচার শুরু

শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

দুর্নীতির ছয় মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।

বাসস জানিয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব মামলা করে। মামলায় শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও অভিযুক্ত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকার পৃথক দুটি বিশেষ জজ আদালত এই অভিযোগ গঠন করে। অভিযোগ গঠনের ফলে মামলাগুলোর আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছে আদালত।

শেখ হাসিনা-শেখ রেহানাসহ ১৭ জন, শেখ হাসিনা-আজমিনা সিদ্দিকসহ ১৮ জন এবং শেখ হাসিনা-রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করেন বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম। আগামী ১৩ আগস্ট এসব মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, শেখ হাসিনা-সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জন এবং শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করেন বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। এসব মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১১ আগস্ট।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

২০ জুলাই মামলাগুলোর আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার দিন ছিল। কেউ হাজির না হওয়ায় মামলাগুলো বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব।

মামলাগুলো চলতি বছরের ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

১২ জানুয়ারি প্রথম মামলায় শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। পরে তদন্তে আরও দুইজন যুক্ত হলে চূড়ান্ত আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে।

১৩ জানুয়ারি আরও তিনটি মামলা করা হয়। একটিতে শেখ রেহানাকে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। আরেকটিতে আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জন এবং তৃতীয়টিতে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়।

তদন্ত শেষে প্রত্যেক মামলায় আরও দুইজন করে আসামি যুক্ত হয়।

সবশেষ ১৪ জানুয়ারি হওয়া দুই মামলার একটিতে শেখ হাসিনাসহ ৮ জন এবং অন্যটিতে শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে যথাক্রমে ১২ ও ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতার মালা পরিয়ে তার প্রতি ঘৃণার প্রকাশ ঘটায় এই কর্মসূচির আয়োজকরা।
শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতার মালা পরিয়ে তার প্রতি ঘৃণার প্রকাশ।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৬ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনের। জুলাই মাসের সেই আন্দোলনের সময় তার সরকারের কঠোর দমননীতিতে বহু মানুষ হতাহত হন। জুলাই আন্দোলনের নিহতের সংখ্যা আট শতাধিক বলে সরকারি হিসাবে বলা হয়ে থাকে। বেসরকারি হিসাবে সংখ্যাটি দেড় হাজারের মতো।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মামলায় গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্য দিয়ে জুলাই গণহত্যা মামলায় প্রথম আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। এই বিচার হচ্ছে সেই ট্রাইব্যুনালে, যেখানে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল।

অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। গ্রেপ্তার আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন বলে অভিযোগ গঠনের পর প্রসিকিউশন জানিয়েছে।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামাল ভারতে অবস্থান করছেন। পলাতক দেখিয়েই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। এই ট্রাইব্যুনালে এরই মধ্যে আদালত অবমাননার দায়ে শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। তিনি গ্রেপ্তার কিংবা আত্মসমর্পণ করলে সেই সাজা কার্যকর হবে।

ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্যটি ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত