Beta
বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

বিএনপি জিতলে তারেক রহমানই হবেন প্রধানমন্ত্রী : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।

প্রথম আলো জানিয়েছে, শনিবার ঢাকায় ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জাতীয় কাউন্সিলে এমন মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান।

বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকেই সপরিবারে লন্ডনে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে নানা মামলায় দণ্ডের পর তার আর ফেরা হয়নি। তারেক রহমান আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস নাগাদ দেশে ফিরবেন বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন তার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

গত ৫ আগস্ট মঙ্গলবার জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার আগে নির্বাচন আয়োজনের সময় ঘোষণা করেন। এরপর শুক্রবার আন্দোলনের শরিক জোট ও দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সেখানে মির্জা ফখরুলও উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের জাতীয় কাউন্সিল আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় শুধু নয়, আমাদের ভবিষ্যৎ নেতা, ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি, ভবিষ্যতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখানে বসে আছেন। তার স্ত্রীও (জুবাইদা রহমান) একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক। এখান (ঢাকা) থেকে তিনি গ্র্যাজুয়েশন (স্নাতক) করেছেন…।”

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারেক রহমানের ফেরার আশায় ছিলেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। কারণ বিভিন্ন মামলার দায় থেকে একে একে মুক্তি পান তিনি।

এর মাঝে ছয় বছর পর কারামুক্ত খালেদা জিয়া গত মে মাসে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান, তখন তার ফিরে আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখছিলেন কেউ কেউ। তারেক রহমানের ফিরে না আসার মধ্যে তার যাওয়ায় নানা গুঞ্জন ভাসছিল। তবে সেই গুঞ্জনে অবসান ঘটে বিএনপি চেয়ারপারসনের ফিরে আসার মধ্যদিয়ে।

তারেক রহমানের এখনও না ফেরা রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয় হয়েই রয়েছে, যিনি বিএনপির নেতাদের কাছে কাণ্ডারী, কর্মীদের চোখে ভবিষ্যৎ। বিএনপি নেতারা বলে আসছেন, সময় হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান।

গত ৭ আগস্ট সিলেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের তফসিল নভেম্বর-ডিসেম্বরে ঘোষণা হবে ধরে নিয়েই তারেক রহমান ওই সময়ের দিকে দেশে ফিরবেন। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দলের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”

হুমায়ুন কবির বলেন, “আন্তর্জাতিক মহলে এখন বিএনপি ও তারেক রহমানের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। তিনি নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবেন এবং সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী হবেন— এমন প্রত্যাশা থেকেই এই আগ্রহ।”

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ওষুধ নীতি বিশেষ করে, যারা ওষুধ তৈরি করেন, প্রস্তুতকারক, তারা দুদিন আগে আমার কাছে এসেছিলেন। তারা গুরুতর সংকটে আছেন। বর্তমান সরকারপ্রধানের যিনি বিশেষ সহকারী আছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের, তিনি এমন কতগুলো ব্যবস্থা বা আইন দিচ্ছেন, যাতে করে (ওষুধ) শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই যে বিষয়গুলো, এগুলো কিন্তু আমাদের তুলে ধরতে হবে।”

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমার অনেক বয়স হয়ে গেছে। আমরা দেখতে চাই, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নয়, বাংলাদেশে শুধু মানুষের ভোটের অধিকার নয়, বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার, অন্নের অধিকার সব কিছু নিশ্চিত করতে হবে।”

কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ড্যাবের কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য লুৎফুর রহমানের সঞ্চালনায় অধিবেশনে বক্তব্য দেন কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড্যাবের এবারের কাউন্সিলে সভাপতি পদের দুই প্রার্থী এ কে এম আজিজুল হক ও হারুন আল রশীদ।

কাউন্সিল অধিবেশনের পর ড্যাবের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য বেলা ১টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়, যা বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে। এবার ভোটারের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি। নির্বাচনে ‘আজিজ-শাকুর’ ও ‘হারুন-শাকিল’ এ দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

‘আজিজ-শাকুর’ প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ কে এম আজিজুল হক। ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ড্যাবের সভাপতি ছিলেন তিনি। এ প্যানেলে মহাসচিব পদে আবদুস শাকুর খান, সিনিয়র সহসভাপতি পদে সাইফ উদ্দিন নিসার আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ পদে তৌহিদ উল ইসলাম এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে আবু মো. আহসান ফিরোজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

‘হারুন-শাকিল’ প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন হারুন আল রশীদ। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ড্যাবের নেতৃত্বে ছিলেন। এ প্যানেলের মহাসচিব পদে জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র সহসভাপতি পদে আবুল কেনান, কোষাধ্যক্ষ পদে মেহেদী হাসান এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে এ কে এম খালেকুজ্জামান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ দুই প্যানেল ছাড়াও ওবায়দুল কবির সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত