Beta
বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

যুদ্ধবিরতিতে সম্মত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

thai-combodia
[publishpress_authors_box]

‘দ্রুত ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে’ রাজি হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। সোমবার মধ্যরাতে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। সীমান্তে টানা কয়েকদিনের উত্তেজনা শেষে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে দুই দেশ।

অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় দুই দেশের শান্তি আলোচনা হয়।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ও থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথম ওয়েচায়াচাই মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কাছে পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে দুই দেশই এই সংঘাত সৃষ্টির জন্য একে অন্যকে দায়ী করেছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের আঞ্চলিক কমান্ডাররা মিটিংয়ে বসবেন।

দুই দেশের সীমান্ত নিয়ে এমন বিরোধ চলে আসছে প্রায় দশকব্যাপী। সাম্প্রতিক সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৫ জন, আহত হয়েছে ২০০ জনেরও বেশি।

যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের সরকার প্রধান জানিয়েছেন, দ্রুত যুদ্ধ থেমে যাবে। যদিও সোমবার সকালে শান্তি আলোচনার আগে আগে সংঘাত চলতে দেখা যায়। কম্বোডিয়া এদিনও সকালে দুটি জায়গায় আঘাত হানার অভিযোগ তোলে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে থাই সেনারা তিনটি প্রদেশে সংঘাত চলার কথা জানিয়েছে।

দুই দেশের যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নেয় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, সোমবার আলোচনার সময়ে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছিলেন।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “উত্তেজনা কমানো এবং শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

শান্তি আলোচনায় সহায়তার জন্য মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী, চীনা সরকার ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দেন তিনি।

হুন মানেত ঘোষণা দেন, দুই দেশ মিলে কম্বোডিয়া-থাই জেনারেল বাউন্ডারি কমিটি গঠন করা হবে, যারা আগামী ৪ আগস্ট কম্বোডিয়ায় সভা করবে।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বিবৃতিতে বলেন, “আজকের ফলাফল থাইল্যান্ডের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। পাশাপাশি আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের জীবন রক্ষার প্রতিশ্রুতি।”

তিনি বলেন, “আমরা একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছি, যা উভয়পক্ষ আন্তরিকতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করবে।”

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম জানান, যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য মালয়েশিয়া একটি দল পাঠাতে প্রস্তুত। পাশাপাশি, উভয় দেশ তাদের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ে সরাসরি যোগাযোগ পুনস্থাপন করবে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থল সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘ কালের। ২০১১ সালে এক সপ্তাহব্যাপী সংঘাতে দুই দেশের ডজন খানেক মানুষের মৃত্যুও ঘটেছিল।

গত মে মাসে সীমান্তে গোলাগুলিতে কম্বোডিয়ার এক সেনা নিহত হওয়ার পর আবার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারপর কম্বোডিয়ার পেতে রাখা স্থলমাইনে এক থাই সেনার মৃত্যু উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে।

তবে কম্বোডিয়া সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছ, কয়েক দশক আগের যুদ্ধের সময় পেতে রাখা স্থলমাইনে পা রেখে প্রাণ হারান থাই সেনা। এরপর দুই দেশের সম্পর্ক গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছায়।

গত কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনা ২৪ জুলাই সংঘর্ষে গড়ালে থাইল্যান্ডের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কম্বোডিয়ায় কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণ করে।

থাইল্যান্ড তার আগের দিন ২৩ জুলাই কম্বোডিয়া থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং ব্যাংকক থেকে কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে।

তথ্যসূত্র : সিএনএন

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত