দুর্নীতি দমন কমিশনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বাসস জানিয়েছে, সোমবার রাজধানীর ফরেইন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২০তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি একথা জানান।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য আছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আওতায় থেকে দুর্নীতির লাগাম টানতে দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন কর্তৃক দুদককে সংবিধানে একটি নতুন অনুচ্ছেদে যুক্ত করার প্রস্তাবটি ইতিবাচক মর্মে সকল রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিগণ মতামত দিয়েছেন। তবে আলোচনায় প্রস্তাবিত কাঠামোর কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ দেওয়া হয়। কেউ কেউ নতুন প্রস্তাবও দিয়েছেন।
তিনি জানান, এ সমস্ত বিবেচনায় নিয়ে ঐকমত্য কমিশন আজকে বসে সিদ্ধান্ত নিবে। আগামীকালও এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
চারটি সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান যেমন- সরকারি কর্মকমিশন, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন ও ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান সম্পর্কিত এবং সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সরকারি কর্মকমিশন নিয়ে নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সরকারি কর্মকমিশনের আলোচনার অগ্রগতি উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, কর্মকমিশনকেও দুদকের অনুরূপ শক্তিশালী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য রয়েছে। আলোচনায় প্রস্তাবিত কাঠামোর কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ দেওয়া হয়।
তিনি জানান, আলোচনায় কমিটি গঠন সংক্রান্ত দলগুলোর অবস্থান ও ভিন্নমত এবং পরামর্শ এসেছে। সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে ঐকমত্য কমিশন পর্যায়ক্রমে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
দিনের শুরুতে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধিগণ প্রতিবাদ জানিয়ে কিছু সময়ের জন্য বৈঠক ত্যাগ করে। এ প্রসঙ্গে কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, কমিশন তাদের এই অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রত্যাবর্তনের জন্য জানানো হয়। অনুরোধে তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়ে পরবর্তী আলোচনায় অংশগ্রহণ করায় তিনি বিএনপির প্রতিনিধিগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে সোমবারের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য গড়তে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসবে কমিশন।