Beta
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের বাধা, মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন ভার্চুয়ালি

২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
[publishpress_authors_box]

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের আগে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির পালে হাওয়া লাগলেও যুক্তরাষ্ট্রের বাধায় নিউ ইয়র্ক যেতে পারছেন না মাহমুদ আব্বাস। তাই অধিবেশনে তাকে ভার্চুয়ালি যুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সাধারণ পরিষদ।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শুক্রবার বিপুল বিপুল ভোটে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণের প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়। সেই সঙ্গে নিন্দা জানানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি।

প্রস্তাবটিতে সমর্থন দেয় ১৪৫টি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলসহ পাঁচটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়। বাকি তিনটি দেশ হলো- হাঙ্গেরি, পালাউ ও নাউরু।

ছয়টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। সেগুলো হলো- হাঙ্গেরি, আলবেনিয়া, ফিজি, নর্থ মেসিডোনিয়া, পানামা ও পাপুয়া নিউ গিনি।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ৮০তম অধিবেশনের মূল পর্ব শুরু হবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এই অধিবেশনে যোগ দিতে ৮০ জনের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে নিউ ইয়র্ক সফরের পরিকল্পনা ছিল মাহমুদ আব্বাসের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিসা দিতে রাজি না হওয়ায় তার ভাষণ দেওয়ার পথ তৈরি করতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হলো।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নিয়ে সোমবার সাধারণ পরিষদে সৌদি আরব ও ফ্রান্স আয়োজিত একটি বৈঠকে যোগ দিতেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে রেকর্ড করা ভিডিও জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির সময় থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেওয়ার চল শুরু হয়।

তবে সাধারণ নিয়ম হলো ভাষণ সরাসরি দিতে হয়। সেক্ষেত্রে এবার সাধারণ পরিষদে মাহমুদ আব্বাসকে ভার্চুয়ালি কথা বলার জন্য ব্যতিক্রমী প্রস্তাব গ্রহণ করতে হয়েছে।

সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতভাবে সৌদি যুবজরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সোমবার দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বিষয়ক সম্মেলনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাবও অনুমোদন করে।

জাতিসংঘের এই অধিবেশন শুরুর ঠিক আগেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগাল। ফ্রান্সও স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর এই পদক্ষেপের উদ্যোগ দেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন গত মাসে জানায় যে তারা আব্বাস এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অন্যান্য কর্মকর্তাদের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেবে না।

শুক্রবার সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ওয়ািশংটনের এই সিদ্ধান্ত ১৯৪৬ সালের জাতিসংঘ সদর দপ্তর চুক্তি লঙ্ঘনের শামিল।

এই চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রকে সাধারণত নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রবেশের অনুমতি দিতে হয়।

তবে ওয়াশিংটনের দাবি, নিরাপত্তা, চরমপন্থা এবং পররাষ্ট্র নীতির কারণে ভিসা প্রত্যাখ্যানের অধিকার তাদের রয়েছে।

শুক্রবার সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটির আগে মার্কিন কূটনীতিক জোনাথন শ্রিয়ের বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করেই বলেছে যে আমাদের অবশ্যই পিএলও এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে অসলো চুক্তি অনুযায়ী তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো মেনে না চলার জন্য এবং শান্তির সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য জবাবদিহি করতে হবে।”

১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির অধীনে গঠিত পশ্চিম তীর-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা হিসাবে চিহ্নিত করেছে ইসরায়েল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে উৎখাত করার এবং পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার শপথ নেন।

ওই হামলার পর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যাতে এই পর্যন্ত অর্ধ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি মারা গেছে। এখন গাজার পুরোটা দখল করতে চাইছে ইসরায়েল।

তথ্যসূত্র : ইউএন নিউজ, টাইমস অব ইসরায়েল

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত