আয়কর বিবরণীতে সবক’টি ঘর ‘শূন্য’ রেখে প্রতিবেদন দাখিল করা যায় বলে সোশাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর প্রচার দেখে সবাইকে সতর্ক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।
রবিবার সংস্থার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আয়কর আইন অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনও প্রকার আয়কর বিবরণী দাখিলের বিধান নেই। আয়কর বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দিলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তি শ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেন। সেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে হয়।
গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রায় ৪৫ লাখ ব্যক্তি আয়কর বিবরণী জমা দেন; যেখানে কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীর (টিআইএন) সংখ্যা ১ কোটি ১৯ লাখ।
গত বছর ১৭ লাখ ১৮ হাজার করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেন। এবার সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, গত অর্থ বছরে যারা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছে, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ বিবরণীতে কর দেওয়ার কোনও তথ্য দেয়নি, অর্থাৎ ‘শূন্য রিটার্ন’ জমা দিয়েছে।
এভাবে আয়কর বিবরণী দাখিল করা যায় বলে সোশাল মিডিয়ায় কথা ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে আইন স্মরণ করিয়ে দিতে রবিবারের বিজ্ঞপ্তিটি আসে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল বিষয়ক কতিপয় ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত পোস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে।
“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ সকল পোস্টে রিটার্ন পূরণের সবক’টি ঘর ‘শূন্য’ হিসাবে পূরণ করে রিটার্ন দাখিল করা যায় মর্মে ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করা হচ্ছে। এসকল ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনও কোনও করদাতা তাদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন মর্মে জানা যায়।”
আয়কর আইন অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনও ধরনের রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই জানিয়ে বলা হয়, আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর বিবরণীতে দেখাতে হবে।
মিথ্যা তথ্য দিলে তার খেসারত হিসাবে জেল-জরিমানার বিধান স্মরণ করিয়ে এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “করদাতার জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়–সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে আয়কর আইনের ৩১২ ও ৩১৩ ধারা অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।”
তথাকথিত ‘শূন্য রিটার্ন’ দিলে এই খেসারত দিতে হতে পারে বলে হুঁশিয়ার করে এনবিআর বলেছে, “জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে যে সকল সম্মানিত করদাতা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে আয়কর রিটার্নে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হবেন।
“একই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত প্রতারণামূলক জিরো রিটার্নের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে সুরক্ষিত রাখবেন।”