Beta
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

ডেঙ্গু-কোভিড বাড়ছে, প্রস্তুতি কতটা

dengue
[publishpress_authors_box]

দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে এইডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা; বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে ৩০ জন এবং কোভিডে আটজনের প্রাণহানি হয়েছে। আগামীতে ডেঙ্গুর পাশাপাশি কোভিড রোগী আরও বাড়বে এবং পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হতে পারে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

তাদের আশঙ্কা, এবার এইডিস মশাবাহিত আরেক রোগ চিকুনগুনিয়াও বাড়বে। এ তিন রোগ মিলে, বিশেষ করে ডেঙ্গু ও কোভিড মানুষের ভোগান্তি, দুর্ভোগ বাড়াবে। কারণ, সরকার পরিবর্তন পর ১০ মাস পার হলেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়নি সমন্বিত কার্যক্রম। প্রয়োজনীয় ওষুধ, জনবল ও স্থান সংকটে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। এরই মাঝে করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরু করলেও দেশের সব এলাকায় নেই ভাইরাসটি পরীক্ষার কিট। অনেক এলাকায় নমুনা পরীক্ষা না হওয়ায় কোভিড রোগী থাকলেও ধরা পড়ছে না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতা থাকাকালেই দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস কোনোকালেই কোনও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কোনও কথা আমলে নেননি। যার কারণে সবসময়ই ঢাকা শহরের ভেতরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাসপাতালে রোগীও ভর্তি হয়েছে বেশি, মৃত্যুও বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবমতে, ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি বেড়েই চলেছে। গত মে মাসের চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে চলতি জুন মাসের মাঝামাঝিতেই। বরিশাল বিভাগে ধরা পড়ছে সবচেয়ে বেশি রোগী। এ বিভাগের মধ্যে বরগুনা জেলা হয়ে উঠেছে ডেঙ্গুর হটস্পট; ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারাও গেছে এ জেলায়।

‘বরিশালের কথা ৬ মাস আগেই জানিয়েছিলাম’

বরিশাল অঞ্চলে যে এবার ডেঙ্গু রোগী বেশি হবে সেটা বোঝা গিয়েছিল সরকারের এক জরিপ থেকেই। একই কথা সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছিলেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। কিটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশারও জানিয়েছিলেন বরিশালের অবস্থা শোচনীয় হবে।

ডা. মুশতাক জানালেন, বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর বিস্তারের শঙ্কা আগে থেকেই ছিল। সরকারকে প্রেজেন্টেশনও দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, তা নিয়ে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, “ব্যবস্থা নিলে হয়তো বরিশাল বিভাগে এত মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হতো না, এত মানুষের মৃত্যুও হতো না।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৪৪ জন। এই ২৪ ঘণ্টায় কোনও ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়নি। অধিদপ্তর এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৩৪ জনের এবং তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৪৯ জন ডেঙ্গু রোগীর হাসাপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্য জানিয়েছিল।

তাদেরকে নিয়ে চলতি মাসে সরকারি হিসাবে ডেঙ্গু রোগী দাঁড়াল ২ হাজার ১২১ জনে, যা আগের মাসে ছিল ১ হাজার ৭৭৩ জন। সব মিলে চলতি বছরে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৪৬৬ জন; তাদের মধ্যে মারা গেছে ৩০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মঙ্গলবার আরও জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া ২৪৪ জনের মধ্যে ১৩৮ জন ভর্তি হয়েছে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে। তাদের মধ্যে বরগুনা সদর হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছে ৮২ জন।

বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের হাসপাতালে ১৯ জন, ঢাকা বিভাগে ২৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে একজন আর রাজশাহী বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৪ জন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৫ হাজার ৬৯৮ জন।

বরগুনা সদর হাসপাতাল।

মোট রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয় ২ হাজার ৯৮০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৬৪ জন, ঢাকা বিভাগে ৬১৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫২৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৯২৯ জন, খুলনা বিভাগে ১৮১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ১২২ জন, রংপুর বিভাগে ২২ জন আর সিলেট বিভাগে ২১ জন।

“বরিশালের কথা ৬ মাস আগেই জানিয়েছিলাম,” সকাল সন্ধ্যাকে বলেন এইডিস মশা নিয়ে গবেষণাকারী কিটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার।

এশিয়ান ডেঙ্গু সামিটে অংশ নিতে ফিলিপাইনে অবস্থানরত এই গবেষক ক্ষোভ প্রকাশ করে সকাল সন্ধ্যাকে আরও বলেন, “সরকারকে বহু আগে থেকে বলে আসছি। কষ্ট হচ্ছে, দুঃখ লাগছে এখানে (ফিলিপাইন) এসে। কত মানুষ কথা বলছে, পরামর্শ নিচ্ছে। কিন্তু নিজ দেশের সরকারকে কথা বলেও কিছু হয়নি।”

তিনি বলেন, “বহু আগে, অন্তত জানুয়ারি থেকে বলে আসছি; বরগুনার কথা বলে আসছি। কেবল বরগুনা না, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের পরিস্থিতি খারাপ হবে- এটাও বহু আগে থেকে বলছি। বলেছি, খারাপ হবে অবস্থা। ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ খারাপ হবে। কিন্তু কেউ কথা আমলে নেয়নি।”

বরগুনার পরিস্থিতি জানতে চাইলে পরিবেশকর্মী, সাংবাদিক আরিফুর রহমান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এ এলাকার পৌরসভার ভেতরের অবস্থা অনেক খারাপ, বাইরের কথা তো বাদই রাখতে হয়।”

তিনি বলেন, “বরগুনা পৌরসভার মধ্যে দিয়া দুইটা খাল। একটা আমতলা খাল; আরটা কাঠপট্টি খাল। এই খালগুলোতে সারাবছর ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়; পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। এগুলোই বরগুনাতে ডেঙ্গুর কারখানা হিসেবে পরিচিত।

“সঙ্গে রয়েছে সদরের থানাপাড়া, কেজি স্কুল এলাকা, মনসাতলী, লাকুরতলা, আমতলাপাড়, গৌরিচন্না এলাকা।  ডেঙ্গু রোগী বাড়ার সঙ্গেসঙ্গেও যদি প্রশাসন ব্যবস্থা নিতো, তাহলে হাসপাতালের এ অবস্থা হতো না। আর এখন তড়িঘড়ি করে যেসব কাজ করছে সেগুলোও পর্যাপ্ত নয়।”

বরগুনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগো নারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা হাসি বলেন, “উপকূলীয় জেলা হিসেবে বরগুনা প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেমন ঝুঁকিতে থাকে তেমনি বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু ও ডায়রিয়ায় মতো রোগও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেয়।”

বরগুনা সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ড।
বরগুনা সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ড।

‘কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই’

বরগুনা সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ইনচার্জ আঁখি আক্তার সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সক্ষমতার বাইরে চলে গেছি আমরা, তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ৫০ বেড ছিল নির্ধারিত ডেঙ্গুর জন্য, কিন্তু এখন কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই। রোগীদের জন্য ডাক্তার নেই, নার্স নেই। অথচ আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, “জরুরি বিভাগের অবস্থা আরও খারাপ। একজন ডেঙ্গু পজিটিভ রোগী আসছে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে সবার একই অবস্থা। চাপ সামলাতে যাদের অবস্থা কিছুটা হলেও ভালো তাদেরকে বাসায় পাঠাচ্ছি। ভর্তি করার মতো অবস্থাতেই নেই আমরা, পা ফেলানোর জায়গাও নেই এখানে।”

বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সময়মতো যদি পদক্ষেপ নেওয়া হতো, এলাকাটা যদি পরিচ্ছন্ন করা যেত তাহলে এই অবস্থায় আজ আসতো না হাসপাতালের পরিবেশ।”

অগাস্টে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হওয়ার শঙ্কা

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনকার চেয়ে আগস্ট মাসে আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কিটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার।

সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “এখনওতো কিছুই হয়নি। পরিস্থিতি কী হতে যাচ্ছে, সেটা বোঝা যাবে আরও কয়েকদিন পর। আগস্টে গিয়ে দেখেন, কোথায় যায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি।”

এমন আশঙ্কার কারণ ব্যাখ্যায় অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে যেমন কার্যকর সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

বরগুনার হটস্পট হওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সরকারের যেমন কার্যক্রর উদ্যোগ নেই, তেমনি এ এলাকার মানুষও সচেতন নয়। বরগুনা এলাকার পানি ভালো নয় (লবণাক্ত)। যার কারণে মানুষ বৃষ্টির পানি জমা রাখে। সেখানেই এইডিস ডিম পাড়ছে এবং বংশবিস্তার হচ্ছে। কিন্তু এলাকার মানুষের কাছে এগুলো পানির পোক।

“সেইসঙ্গে গৃহপালিত গরু, ছাগল, মুরগির জন্য রাখা খাবারের পাত্রেও সমানতালে এইডিস বংশবিস্তার করে যাচ্ছে। এখনই ম্যাসিভ কার্যক্রম হাতে না নেওয়া হলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে যাচ্ছে।”

‘পরামর্শ দিয়েছে, বাকিটা ওদের বিষয়’

জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ মঙ্গলবার ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে পরামর্শ দিয়েছেন কী কী কার্যক্রম হাতে নেওয়া উচিত তা নিয়ে।

অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “উত্তর সিটি করপোরেশন সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। যেহেতু তাদের কিটতত্ত্ববিদ নেই তাই আঞ্চলিক কর্মকর্তা, ওয়ার্ড মশক সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল গত বছরে।

“তার আগেতো তারা অন্ধের মতো ছিল, একই রকম কাজ করতো। কিন্তু এইডিস নিয়ন্ত্রণ অন্য মশার মতো না, এটা তারা বুঝতো না। ডেঙ্গু মোকাবেলায় আমি পরামর্শ দিয়েছি, বাকিটা ওদের বিষয়।’

তিনি বলেন, “এবারে মশক নিধনকর্মীদের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সমন্বয় করা হচ্ছে, যাতে সব কাজ একসঙ্গে হয়। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবস্থা খুবই খারাপ। তারা এর আগেও কোনও উদ্যোগ নেয়নি। 

“কোনোদিনও কোনও জনস্বাস্থ্যবিদদের ইনভলভ করেনি। তাপস সাহেবতো কোনও পাত্তাই দিতো না। অথচ দেখেন, চলতি বছরতো বটেই সবসময়ই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে রোগী বেশি, মৃত্যুও বেশি।”

ছবি: ইয়েল মেডিসিন

‘সরকারের কোনও প্রস্তুতি রয়েছে মনে হয় না’

অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ মনে করেন, ডেঙ্গু ও কোভিড মোকাবেলায় সরকারের কোনও প্রস্তুতি রয়েছে বলে তার মনে হচ্ছে না।

“সরকারের কোনও প্রস্তুতি রয়েছে বলে আমার মনে হয় না,” বলেন তিনি।

একের পর এক কর্মসূচি বন্ধ হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক এই পরিচালক বলেন, “জনস্বাস্থ্য ভয়ানক ঝুঁকিতে পড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেভাবে কাজ করছে সেটা কোনও ধর্তব্যের ভেতরেই পড়ে না। সকল কার্যক্রম বন্ধ। করোনার এন্টিজেন অথবা পিসিআর পরীক্ষার কিট, করোনা-ডেঙ্গুর জন্য জনবল, ওষুধ, স্যালাইন কিছুইতো নেই। মোকাবেলা করবে কীভাবে?

অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, “বরগুনাতে যেভাবে ডেঙ্গু বাড়ছে আর এখন যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে…এটা যদি ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে…ছড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের তো সক্ষমতাই নেই। যে পরিমাণ অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দরকার হাসপাতালগুলোতে তা নেই। হাসপাতালে এত রোগী দেখা অসম্ভব এই অপ্রতুল জনবলে।”

তিনি বলেন, “এ অবস্থায় ঢাকারতো ডেঙ্গু প্রতিরোধ অসম্ভব, ম্যানেজমেন্ট অসম্ভব। ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে দেশ। ঢাকাতেই আমরা ২৫ বছরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি, তাহলে গ্রামাঞ্চলেতো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।”

ডেঙ্গুর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণও। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে।

সংক্রমণ বাড়ায় দেশের হাসপাতালগুলোতে আবার করোনা পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্তও নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রাথমিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরের হাসপাতালগুলোয় এ পরীক্ষা চালু হবে।

তবে অধিদপ্তরেরই করোনা বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, দেশের বেশিরভাগ এলাকায় এখনও শুরু হয়নি করোনা পরীক্ষা।

গত ১৭ জুনের করোনা বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও কুমিল্লা জেলা, রাজশাহী জেলা, খুলনা জেলা ছাড়া দেশের আর কোথাও করোনা পরীক্ষা হয়নি। অথচ চিকিৎসকরা বলছেন, যতো বেশি পরীক্ষা হবে, ততোই বেশি রোগী শনাক্ত হবে।

স্বাস্থ্য বিভাগ যা বলছে

দেশের কত হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা শুরু হয়েছে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর হালিমুর রশীদ ১৭ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, যেসব হাসপাতাল কিট নিয়েছে তাদের পরীক্ষা চালু হয়েছে। ৪০টিরও বেশি জেলা সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইনস্টিটিটিউট কিট নিয়েছে।

পর্যায়ক্রমে সব হাসপাতালে পরীক্ষা শুরু হবে কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেন, “হয়তোবা।”

তবে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন।

সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “তেমন কোনও কার্যক্রমতো চোখে পড়ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে যেরকম সতর্কবার্তা স্বাস্থ্যবিধি আশা করেছিলাম সেটা হাসপাতাল বা অন্যকোনও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে দেখা যায়নি। অথচ গত কয়েকদিনে যারা শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসকরাই বেশি।

“সেই শুরু থেকেই দেখেছি হাসপাতাল করোনার উৎস হয়েছে। অনেক চিকিৎসককে আমরা হারিয়েছি করোনাতে। কিন্তু এবারও সচেতনতা বৃদ্ধিতে হাসপাতালগুলোতে কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত