২০২৪ সালের জুলাই আগস্টের আন্দোলনে আহতদের ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ বিষণ্নতায় ভুগছেন। এছাড়া ৬৪ শতাংশ মানুষ তীব্র আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপে ভুগছেন।
সোমবার বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে (বিএমইউ) ‘বিয়ন্ড দ্য হেডলাইনস: মেন্টাল হেলথ কনসিকোয়েন্সেস অব দ্য জুলাই আপরাইজিং অ্যান্ড মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত করা হয় এই সেমিনার।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহম্মদ শামসুল আহসান এ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেখানে অধ্যাপক নাহিদ মাহজাবিন ‘ইমপ্যাক্ট অফ ট্রমা অ্যান্ড ভায়োলেন্স এমং চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলোসেন্ট পপুলেশন’ শীর্ষক উপস্থাপনায় বলেন, শৈশবের ট্রমা ও সহিংসতা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করে দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দিলে দীর্ঘমেয়াদী মানসিক রোগ ও আচরণগত সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার শিকার ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবকদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন চিকিৎসকরা।
সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শামসুল আহসান জানান, জুলাই আন্দোলনে আহতদের মধ্যে বিএমইউ, নিটোর এবং এনআইইউতে ভর্তি হওয়া ২১৭ জন রোগীর মাঝে বিষণ্নতার হার ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা তীব্র আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপে ভোগা মানুষের হার ৬৪ শতাংশ। তাদের মধ্যে অনেকই বিষণ্নতা ও তীব্র আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ উভয় সমস্যায় ভুগছেন।
আহতদের মধ্যে যারা গ্রামীন এলাকার রোগী তারা নিজেদেরকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন এবং তারা অধিকমাত্রায় উদ্বিগ্ন জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের ধারণা হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার পরে তারা যথাযথ চিকিৎসা পাবেন না। সেই কারণে সর্বজনীন শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা ঢাকা ও ঢাকার বাইরে তৈরি করা জরুরি।
গত বছরের জুলাইয়ের ছাত্র জনতার আন্দোলনে ৭৩৭ জন নিহত আর ২২ হাজার ৯০৭ জন আহত বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।