জানুয়ারিতে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন দশ বছর বয়সী বাংলাদেশের দাবাড়ু রায়ান রশিদ মুগ্ধ। রাজধানীর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মুগ্ধ কার্লসেনের সঙ্গে অবিশ্বাস্য ওই ম্যাচটি খেলেন অনলাইন দাবার সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম চেস ডট কমে।
কিংবদন্তি গ্র্যান্ডমাস্টার কার্লসেনকে বুলেট গেমে হারিয়ে দেওয়া মুগ্ধ পড়েছেন ভীষণ দুশ্চিন্তায়। বাংলাদেশের প্রতিভাবান এই খুদে দাবাড়ুর ওয়ার্ল্ড ক্যাডেট চেস চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়াটা অনিশ্চিত। ১৮ সেপ্টেম্বর কাজাখস্তানে শুরু হবে এই প্রতিযোগিতা।
অনূর্ধ্ব-১০ বছর বিভাগে টানা তিনবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মুগ্ধ এরই মধ্যে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করেছে। কিন্তু স্পনসর না পাওয়ায় কাজাখস্তানে যাওয়া নিয়ে সংশয়ে পড়েছে সে। অথচ দুই বছর আগে কিরগিজস্তানে অনুষ্ঠিত ওয়েস্টার্ন এশিয়ান ইয়ুথ চেস চ্যাম্পিয়নশিপের অনূর্ধ্ব-১০ বিভাগে ব্রোঞ্জ জেতে মুগ্ধ।
বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড রেটিংয়ে অনূর্ধ্ব-১০ বছর বয়সীদের মধ্যে মুগ্ধ ১৭তম, এশিয়ায় সপ্তম। র্যাপিডে দ্বিতীয়। মুগ্ধর বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড রেটিং ২০৭০, র্যাপিড রেটিং ২১৭৫। ওয়ার্ল্ড ক্যাডেট চেস চ্যাম্পিয়নশিপে হয়তো নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যেতে পারতো সে।
স্পনসর নিয়ে সঙ্কটে মুগ্ধর চাচা মাকসুদুর রশীদ অসহায় সুরে বলেন, “মুগ্ধর মেধা বিকাশের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার বিকল্প নেই। পারিবারিক উদ্যোগে তাকে এর আগে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সব খরচ পরিবার থেকে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য আমরা পৃষ্ঠপোষকতা খুঁজছি। যদি কোনও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতো তাহলে মুগ্ধ হয়তো বিশ্ব দাবায় দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারতো।”
ওয়ার্ল্ড ক্যাডেট চেস চ্যাম্পিয়নশিপে অনূর্ধ্ব-৮, অনূর্ধ্ব-১০ এবং অনূর্ধ্ব-১২ ক্যাটাগরির স্ট্যান্ডার্ড, র্যাপিড এবং ব্লিৎজ এই তিন বিভাগে খেলা হয়। উদীয়মান দাবাড়ুদের জন্য যা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য কোচ নাঈম হকের অধীনে প্রায় ৩ মাস প্রস্তুতি নিচ্ছে মুগ্ধ। বয়স কম হওয়ায় অভিভাবক হিসেবে কাজাখস্তানে মুগ্ধর সঙ্গে তার কোচকে পাঠাতে আগ্রহী পরিবার। কিন্তু দুজনের কারোর জন্যই স্পনসর যোগাড় করা যায়নি।
মুগ্ধর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যাওয়ার ব্যাপারে ফেডারেশন কি কোনও উদ্যোগ নিয়েছে? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ সুজাউদ্দিন। তিনি বলেন, “আমি আসলে এসব ফাংশনাল বিষয় দেখি না। এগুলো দেখেন সুমন (সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান) ও হারুন (আন্তর্জাতিক আরবিটার)। শুধু মুগ্ধর খেলার ব্যাপারে অ্যাপ্রুভাল (অনুমোদন) দিয়েছি। এর বেশি কিছু জানি না।”
আর মুগ্ধর চাচা মাকসুদুর রশীদের দাবি, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতার ব্যাপারে কোনও সাড়া মেলেনি।