Beta
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শিবির এল ডাকসুতে

ডাকসুর ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে জয়ী ছাত্রশিবির নেতা (বাঁ থেকে) মো. আবু সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ ও মুহা. মহিউদ্দিন খান। বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
ডাকসুর ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে জয়ী ছাত্রশিবির নেতা (বাঁ থেকে) মো. আবু সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ ও মুহা. মহিউদ্দিন খান। বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
[publishpress_authors_box]

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি, জিএস ও এজিএস- শীর্ষ এই তিন পদে জয় পেয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের’ প্রার্থীরা। এছাড়া ১২টি সম্পাদক পদের মধ্যে ৯টিতে বিজয়ী হয়েছেন তাদের প্রার্থীরা। বাকি তিনটি পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

ডাকসুর ২৮টি পদের মধ্যে যে ১৩টি সদস্য পদ রয়েছে তার ১১টিতেও জয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সদস্যরা। বাকি দুটির একটিতে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, অন্যটিতে সাত বামপন্থী সংগঠনের প্যানেল প্রতিরোধ পর্ষদের প্রার্থী।

মঙ্গলবার সারারাত অপেক্ষার পর বুধবার সকাল ৮টার পর ফল এই ঘোষণা শুরু করেন ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক জসীম উদ্দিন।

নির্বাচনের এই ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা।

প্রথম আলো জানিয়েছে, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে শিবির নেতা মো. আবু সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। এরপর রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন, তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংসদের আব্দুল কাদের ১ হাজার ১০৩ ভোট এবং প্রতিরোধ পর্ষদের তাসনিম আফরোজ ইমি পেয়েছেন ৬৮ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বিজয়ী ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের শেখ তানভীর বারি হামিম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এরপর রয়েছেন প্রতিরোধ পর্ষদের প্রার্থী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মেঘমল্লার বসু, তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী ৪ হাজার ৪৪ ভোট এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংসদের আবু বাকের মজুমদার পেয়েছেন ২ হাজার ১৩১ ভোট।

সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে শিবিরের মুহা. মহিউদ্দিন খান পেয়েছেন ১১ হাজার ৭৭২ ভোট। এ পদে ছাত্রদলের তানভীর আল হাদী মায়েদ ৫ হাজার ৬৪ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমীদ আল মুদাসসীর ৩ হাজার ৮ ভোট পেয়েছেন। প্রতিরোধ পর্ষদের জাবির আহমেদ জুবেল পেয়েছেন ১ হাজার ৫১১ ভোট। এছাড়া মহিউদ্দিন রনি ১ হাজার ১৩৭, আশরেফা খাতুন ৯০০, আশিকুর রহমাস জিম ৭৯৬ ও হাসিব আল ইসলাম ৫২০ ভোট পেয়েছেন।

উৎসবমুখর পরিবেশে মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। ছবি : হারুন অর রশীদ
উৎসবমুখর পরিবেশে মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। ছবি : হারুন অর রশীদ

এছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতেমা তাসনিম জুমা (১০ হাজার ৬৩১ ভোট), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ইকবাল হায়দার (৭ হাজার ৮৩৩ ভোট), আন্তর্জাতিক সম্পাদক খান জসিম (৯ হাজার ৭০৬ ভোট ), ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ (৯ হাজার ৬১ ভোট), ক্রীড়া সম্পাদক আরমান হোসাইন (৭ হাজার ২৫৫ ভোট), কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা (৯ হাজার ৯২০ ভোট), মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক সাখাওয়াত জাকারিয়া (১১ হাজার ৭৪৭), স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ (৭ হাজার ৩৮ ভোট) এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম (৯ হাজার ৩৪৪ ভোট) বিজয়ী হয়েছেন।

শিবিরের প্যানেলের বাইরে সমাজসেবা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবাইর বিন নেছারী (৭ হাজার ৬০৮ ভোট), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ (৭ হাজার ৭৮২ ভোট) এবং গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বি (১১ হাজার ৭০৮ ভোট) বিজয়ী হয়েছেন।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে উৎসবের আমেজেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে উৎসবের আমেজেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

সদস্য পদে জয়ী কারা

ডাকসুর ১৩টি সদস্য পদের মধ্যে শিবিরের প্যানেল থেকে জয়ী ১১ জন হলেন- সাবিকুন নাহার তামান্না (১০০৮৪), সর্ব মিত্র চাকমা (৮৯৮৮), আফসানা আক্তার (৫৭৪৭), রায়হান উদ্দীন (৫০৮২), তাজিনুর রহমান (৫৬৯০), ইমরান হোসাইন (৬২৫৬), মিফতাহুল হোসাইন আল-মারুফ (৫০১৫), মো. রাইসুল ইসলাম (৪৫৩৫), শাহীনুর রহমান (৪৩৯০), আনাস ইবনে মুনির (৫০১৫) ও মো. বেলাল হোসেন অপু (৪৮৬৫)।

বামপন্থী প্যানেল থেকে সদস্য পদে জয় পেয়েছেন হেমা চাকমা (৪৯০৮)। সাত বামপন্থী সংগঠনের প্যানেল প্রতিরোধ পর্ষদের প্রার্থী ছিলেন তিনি। এছাড়া সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া (৪২০৯)।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের প্রকাশ্য রাজনীতির সুযোগ ছিল না৷ বিভিন্ন আবাসিক হলে শিবির সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঘটতো প্রায়ই। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে ছাত্রশিবির। প্রকাশ্যে আসার এক বছরের মাথায় ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিশাল জয় পেল তারা।

গত বছর শিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্য কার্যক্রম শুরু করার পর জানা যায়, নেপথ্যে থেকে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন কর্মসূচি নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন সাদিক কায়েম। তিনি যে শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি, সেটিও তখন সামনে আসে। এখন অবশ্য তিনি সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক।

ডাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি ( ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।
ডাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি ( ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।

ফল প্রত্যাখ্যান

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। এরপর শুরু হয় ভোটগণনা প্রক্রিয়া। কেন্দ্রভিত্তিক ফল ঘোষণা শুরু হয় মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসুর পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করা হয় বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায়।

তবে ডাকসু নির্বাচনের এই ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা।

ভোট গণনা চলার মধ্যে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার পর এক ফেইসবুক পোস্টে আবিদ লেখেন, “পরিকল্পিত কারচুপির এই ফলাফল দুপুরের পরপরই অনুমান করেছি। নিজেদের মতো করে সংখ্যা বসিয়ে নিন। এই পরিকল্পিত প্রহসন প্রত্যাখ্যান করলাম।”

এর ঘণ্টাখানেক পরে এক ফেইসবুক পোস্টে ডাকসু বর্জনের ঘোষণা দেন উমামা ফাতেমা। তিনি লেখেন, “বয়কট! বয়কট! ডাকসু বর্জন করলাম।” ডাকসু নির্বাচনকে ‘সম্পূর্ণ নির্লজ্জ কারচুপির নির্বাচন’ আখ্যায়িত করে উমামা ফাতেমা লেখেন, “৫ আগস্টের পরে জাতিকে লজ্জা উপহার দিল ঢাবি প্রশাসন। শিবির পালিত প্রশাসন।”

ছাত্রদলের প্যানেলের জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিমও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছেন।

রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি মনে করেন—এটিই তাদের রায়, তবে এই রায়কে আমি সম্মান জানাই। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষমাণ।” তিনি আরও লেখেন, “আজকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলা এ ভোটানুষ্ঠানে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকলেও কয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়ম দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গণনার ক্ষেত্রে মেশিনের ত্রুটি, জালিয়াতি ও কারচুপি পরিলক্ষিত হয়েছে।”

টিএসসি কেন্দ্রে গিয়ে ভোটগ্রহণে দেরির অভিযোগ তোলেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
টিএসসি কেন্দ্রে গিয়ে ভোটগ্রহণে দেরির অভিযোগ তোলেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

শান্তিপূর্ণ ভোট শেষে কারচুপির অভিযোগ

এবার ডাকসু নির্বাচনে ১০টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। স্বতন্ত্রভাবেও অনেকে নির্বাচন করেন। ডাকসুর ২৮ পদে সব মিলিয়ে প্রার্থী ছিলেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদের ২৩৪টি পদে প্রার্থী হন ১ হাজার ৩৫ জন। গত ২৬ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারে নানা প্রতিশ্রুতি দেন প্রার্থীরা। সবার প্রতিশ্রুতিতেই ক্যাম্পাসে আধিপত্য ও দখলদারির রাজনীতির বিলোপ এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিষয়টি ছিল।

মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে স্থাপিত আটটি কেন্দ্রে ভোট দেন শিক্ষার্থীরা। উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে প্রাথমিক হিসাবে ৭৮ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে।

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে ছিল ভোটারদের দীর্ঘ সারি। অনেকে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটের লাইনে ছাত্রীদেরও ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদেরও বিপুল উৎসাহে ভোটকেন্দ্রে আসতে দেখা যায়।

অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্যানেলের ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে থাকেন। কেউ কেউ পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষপাত থাকার অভিযোগও করেন।

ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে পৌনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে টিএসসি কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেন কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা। ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীর নেতৃত্বে উত্তেজনা শুরু হলেও পরে তার সঙ্গে স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী হাসিবুল ইসলাম যোগ দেন। তারা অভিযোগ করেন, তারা গণনা দেখতে ভেতরে যেতে চাইলেও প্রশাসন বাধা দিয়েছে।

আধা ঘণ্টার মতো টিএসসিতে অবস্থানের পর তারা সিনেট ভবনের দিকে যান। এ সময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ‘ভোট চোর ভোট চোর, জামায়াত-শিবির ভোট চোর’ বলে স্লোগান দেন। এ ঘটনার সময় টিএসসি কেন্দ্রের সামনে থাকা এলইডি স্ক্রিন কিছু সময় বন্ধ থাকার পর পৌনে ৮টার দিকে আবার চালু হয়।

প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু হুইল চেয়ারে এসে ভোট দেন। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

রাত ৮টার দিকে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের সামনে ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল হয়। এরপর বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে গিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ‘ভোট চোর’ বলে স্লোগান দেন।

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের রাতে টিএসসিতে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষপাত করেছে।

শান্তিপূর্ণভাবে এই নির্বাচন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

বুধবার সকালে ডাকসুর ফল ঘোষণার সময় তিনি বলেন, “এই ডাকসুর মাধ্যমে আমরা একটা সুন্দর একটা মডেল সেট করতে পেরেছি। যেটা বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়সহ, অনেক বড়ো বড়ো কলেজ আমাদেরকে অনুসরণ করবে আমরা আশা রাখি।”

ডাকসু নির্বাচনে এবার ভোটার ছিল ৩৯ হাজার ৮৭৪ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১৩টি ছাত্র হলে ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ জন এবং পাঁচটি ছাত্রী হলে ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহারার মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশেই ভোট দিতে পারার কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এই নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যে সংবাদ সংগ্রহে থাকাকাল তরিকুল ইসলাম নামের এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়। কার্জন হল ভোটকেন্দ্রের সামনে দুপুরে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, তবে বাঁচানো যায়নি।

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না হলেও পুলিশের সঙ্গে কাজ করে বিজিবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়। ভোটকেন্দ্রেও শিক্ষার্থীরা ঢোকেন আর্চওয়ের মধ্যদিয়ে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত