ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার অবসান। বিদ্রোহের আগুণে নেপাল সরকারের পতনে কাঠমান্ডুতে আটকে পড়া জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা অবশেষে ফিরেছেন দেশে।
সকালে কাঠমান্ডুর ক্রাউন ইম্পিরিয়াল হোটেল থেকে বের হয়ে স্থানীয় সময় পৌনে ৯টায় বিমানবন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ দল। সেখানে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে দেশের বিমান ধরেন ফুটবলাররা।
বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলা এ কে খন্দকার ঘাটিতে জামাল ভূঁইয়াদের বহনকারী বিশেষ বিমানটি অবতরণ করেছে। তাদের সঙ্গে একই বিমানে ফিরেছেন ক্রীড়া সাংবাদিকরাও। দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বিমানবাহিনী তাদের ফেইসবুকে জামালদের ফেরা নিয়ে লিখেছে, ‘‘নেপালে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সি-১৩০বি বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে সফলভাবে দেশে প্রত্যাবর্তন করেছে।’’
গতকাল সন্ধ্যায় কাঠমান্ডু বিমানবন্দর সচল হয়। বাফুফে তখনই জাতীয় দলসহ সেখানে কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। সরকার, ফেডারেশন ও কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সম্মিলিত প্রয়াসে আজ দুপুরে বাংলাদেশ দলের ফ্লাইট নিশ্চিত হয়।
টিম হোটেল ছেড়ে স্থানীয় সময় নয়টার দিকে বাংলাদেশ দল বিমানবন্দরে পৌছায়। সেখানে প্রায় ছয় ঘণ্টা অপেক্ষার পর স্থানীয় সময় আড়াইটার পর উড্ডয়ন করে বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমান। সেই বিমান ঢাকায় অবতরণ করে বিকাল ৪.৪০ মিনিটে।
বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ কাভার করতে ঢাকা থেকে ১৫ জনের বেশি সাংবাদিক কাঠমান্ডু গিয়েছিলেন। বাংলাদেশ দলের মতো তারাও ভোগান্তিতে পড়েছিলেন। সেই সাংবাদিকরাও ফিরেছেন দলের সঙ্গে।
জাতীয় দল ৩ সেপ্টেম্বর নেপালে গিয়েছিল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে। ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। আন্দোলন ও সহিংসতার কারণে ৯ সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় ম্যাচ বাতিল হয়ে যায়। এরপর থেকে হোটেলবন্দী ছিলেন ফুটবলাররা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), কাঠমান্ডুর বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ সরকারের সম্মিলিত চেষ্টায় ফুটবল দলকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ দল চেয়েছিল গত রাতেই ফিরতে। ঢাকা থেকে বিশেষ ফ্লাইটের চেষ্টা চালানো হলেও সেটা সম্ভব হয়নি। অবশেষে আজ একটি বিশেষ ফ্লাইটে কাঠমান্ডু থেকে ঢাকায় ফিরল খেলোয়াড়, কোচ, স্টাফদের ৩২ জনের বহর। সঙ্গে ফিরেছেন আটকে পড়া সাংবাদিকরাও।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আগেই ফেইসবুকে লিখেছিলেন, ‘‘আটকে পড়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলকে নিরাপদে ফেরাতে নেপালের উদ্দেশে বিমানবাহিনীর বিমান পাঠিয়েছে সরকার।’’ সেই বিমানেই উৎকণ্ঠা পেরিয়ে দেশে ফিরলেন ফুটবলার ও সাংবাদিকরা।