Beta
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশের টেবিল টেনিসে চীনের টনিক

২০২৪ সালের জুলাইয়ে ২৫ জনের বিশাল এক টেবিল টেনিস দল অনুশীলন ক্যাম্প করতে যায় চীনের হুনান প্রদেশে। ছবি : সংগৃহীত
২০২৪ সালের জুলাইয়ে ২৫ জনের বিশাল এক টেবিল টেনিস দল অনুশীলন ক্যাম্প করতে যায় চীনের হুনান প্রদেশে। ছবি : সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

১৯৭৫ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ ও চীন আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। বেইজিংয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সেই সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন হয়েছে ১৯ অক্টোবর। ক্রীড়াঙ্গনে অনেক এগিয়ে থাকা চীনের ক্রিকেটে এই সময়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। তেমনি ব্যক্তি উদ্যোগে চীনের টেনিস উন্নয়নে কাজ করছেন বাংলাদেশি কোচরা। এ নিয়ে সকাল সন্ধ্যার তিন পর্বের আয়োজন। আজ তৃতীয় পর্বে থাকছে টেবিল টেনিস। লিখেছেন রাহেনুর ইসলাম

টেবিল টেনিসে চীনের সুনাম আছে বিশ্ব জুড়েই। সেখানকার একাডেমিগুলোতে উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশি টিটি খেলোয়াড়দের স্বপ্ন। সেই স্বপ্নই পূরণ হয়েছিল ২০২৪ সালে। ২৫ জনের বিশাল এক টেবিল টেনিস দল অনুশীলন ক্যাম্প করতে গত চীনের হুনান প্রদেশে যায় গত বছরের জুলাইয়ে। বাংলাদেশ থেকে এত বড় টেবিল টেনিস দলের কোথাও অনুশীলনে যাওয়া সেটাই প্রথম।

নবীনদের গড়ে তুলতে ৪০ দিনের এ সফরে ছিলেন ২০ খেলোয়াড়। তাদের ১১ জন ছেলে ও ৯ জন মেয়ে। দক্ষিণ এশিয়া টিটিতে খেলা ১৪ খেলোয়াড় ছিলেন সেই দলে। ১০-১৩ বছরের খেলোয়াড়দের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে বাছাই করা হয়েছে বাকি ছয়জনকে। দলে ছিলেন চার কোচ এবং একজন সমন্বয়কারী।

প্রশিক্ষণ ক্যাম্পটি গত ২৮ জুলাই থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের হুনান প্রদেশের ভোকেশনাল কলেজে অনুষ্ঠিত হয়। চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এজেন্সি চীনের উন্নত প্রশিক্ষণের যাবতীয় ব্যয় বহন করে।

চীনে এই অনুশীলন ক্যাম্প আয়োজন নিয়ে টিটি ফেডারেশনের সহসভাপতি খন্দকার হাসান মুনীর বললেন, ‘‘এটা মোটেও সহজ ছিল না। এক বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ চীনা দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলে আসছিল। এরপর সম্ভব হয় এই অনুশীলনের ব্যবস্থা করা। এর সব খরচ বহন করবে চীনা সরকার। এটা চালু রাখতে চীন সম্মতি দিয়েছে। আশা করছি আগামীতেও আমরা এভাবে টিটি খেলোয়াড়দের চীনে পাঠাতে পারব।’’

চীন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেরা খেলোয়াড়দের কয়েকজন। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের টিটিতে অনেক সময়ই বিদেশি কোচ এসেছেন। ২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়া কোচ কিম সুং হানকে পাঁচ মাসের জন্য এনেছিল টিটি ফেডারেশন। সঙ্গে আসেন অনুশীলন পার্টনার কিম সু গান। ভারতের কোচ আংসুল গার্গ, ফ্রান্সের কোচ সারাহ হানফু, ভারতের অভিষেক মুখার্জির পাশাপাশি এসেছিলেন বিখ্যাত কোচ মিহির ঘোষও।

অল্প সময়ের জন্য এসে তেমন কিছু করতে পারেননি তারা। বড় একটা দলকে প্রশিক্ষণের জন্য চীনে ৪০ দিন রাখাটা বিশেষি কিছুই ফেডারেশনের জন্য। সেই ক্যাম্পে থাকা খৈ খৈ সাই মারমা সকালসন্ধ্যাকে জানালেন, ‘‘আমার অনেক উন্নতি হয়েছে হুনান প্রদেশের ভোকেশনাল কলেজের ক্যাম্পে। রিটার্ন, সুইং, জোড়ালো সার্ভ-সবকিছুতেই অনেক উন্নতি করেছি। এরকম বড় কোনো প্রতিষ্ঠানে এতদিন থাকতে পারাটা সৌভাগ্যের। কোচরা খুবই আন্তরিক ছিলেন। এই আয়োজনের জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’’

টিটি ফেডারেশনের এই উদ্যোগ খেলোয়াড়দের জন্য নতুন এক দরজাই খুলেছে। ছয়বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মাহবুব বিল্লাহ ও পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মানস চৌধুরীও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে চীনে প্রশিক্ষণের জন্য খেলোয়াড়-কোচ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানস।

সকালসন্ধ্যাকে মানস বললেন, ‘‘চীনকে ধন্যবাদ এমন একটা সুযোগ দেওয়ার জন্য। অনেক খেলোয়াড়কে সুযোগ করে দিয়েছে তারা। তবে খেলোয়াড় নির্বাচন করায় আমাদের ফেডারেশনকে আরও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। কারও নাম উল্লেখ করে ছোট করতে চাই না। আশা করব ভবিষ্যতে এমন সুযোগ এলে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে ফেডারেশন।’’

৪০ দিনের প্রশিক্ষণে বিকেএসপির ছিলেন ১২ জন। তাদের ৬ জন ছেলে- জয় ইসলাম, নাফিজ ইসলাম, আবুল হাসেম হাসিব, মো. তাহমিদুর রহমান, মো. মনিরুল ইসলাম ও মো. মাহাতাবুর রহমান এবং ৬ জন মেয়ে মুসরাত জান্নাত সিগমা, আসমা খাতুন, নুসরাত জাহান অনন্যা, হাবিবা খাতুন, খৈ খৈ সাই মারমা ও রেশমী অংশগ্রহণ করেছেন। প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিকেএসপির কোচ ইসরাত জাহান নাহিমা। 

প্রশিক্ষক ইসরাত জাহান নাহিমা বললেন, ‘‘বিকেএসপিতে টেবিল টেনিস প্রশিক্ষণের আধুনিক সবকিছু আছে। তবে চীন যেহেতু খেলাটার আঁতুরঘর তাই সেখানে সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি। আমি সেসব নিজে দেখে এসেছি। আশা করব সেই অভিজ্ঞতায় আমাদের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিতে।’’

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত