ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা আরও কিছুটা কমেছে, তবে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ৩৬৩ জন। এর আগে বুধবার ৪৪৫ জন, মঙ্গলবার ৪৭৩ জন, সোমবার ৫৫২ জন এবং রবিবার ৫৬৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হওয়ার তথ্য জানানো হয়।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আগেরদিন বুধবার দুইজন, এর আগে মঙ্গলবার তিনজনের মৃত্যুর খবর দেয় অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নতুন ৩৬৩ জনকে নিয়ে চলতি বছরে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৩ হাজার। শুধু সরকারি তালিকায় থাকা হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি রোগী সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩০৯ জন। সর্বশেষ তিনজনকে নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হলো ১৩০ জনের।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ ৩৬৩ জনকে নিয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম চারদিনে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৮৩৩ জন। আগস্ট মাসে ভর্তি হয় ১০ হাজার ৪৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী বরিশাল বিভাগে; ৮৮ জন। বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৫০ জন, ঢাকা বিভাগে ৭০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫৬ জন, খুলনা বিভাগে ১৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৬ জন আর সিলেট বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে একজন।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে জুলাই মাসে, ১০ হাজার ৬৮৪ জন। এছাড়া জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫১ জন, জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন এবং মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়।
চলতি মাসের প্রথম দিন ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি; মাসের দ্বিতীয় দিন তিনজন, তৃতীয়দিনে দৃইজন আর গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এই তিনজনের মধ্যে দুইজন নারী আর একজন পুরুষ। তাদের মধ্যে আট বছরের এক কন্যাশিশু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ৪০ বছরের এক নারী চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে আর ৪০ বছরের এক পুরুষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তাদেরকে নিয়ে চলতি মাসের প্রথম চারদিনে আটজনের মৃত্যু হলো ডেঙ্গুতে। এ রোগে আগস্ট মাসে মৃত্যু হয় ৩৯ জনের। এ বছর সবচেয়ে বেশি, ৪১ জন মারা গেছে জুলাই মাসে। এছাড়া জুন মাসে ১৯ জন, জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন জন, এপ্রিলে সাত জন, মে মাসে তিন জন মারা যায়। মার্চ মাসে কারও মৃত্যু হয়নি।
মোট মারা যাওয়া ১৩০ জনের মধ্যে পুরুষ ৭১ জন, নারী ৫৯ জন।
২০০০ সালে দেশে ডেঙ্গুর তথ্য রাখতে শুরু করে সরকার। সে বছর রোগী ছিল ৫ হাজার ৫৫১ জন। এ রোগে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ রোগীর সঙ্গে সর্বোচ্চ মৃত্যুও দেখে বাংলাদেশ।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন, তাদের মধ্যে মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। ২০২৪ সালে ভর্তি হয় ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন, মারা যায় ৫৭৫ জন।

