জাকসুতে ভোট শুরুর আগেই অভিযোগ উঠছিল বহিরাগতদের অবস্থান নিয়ে, বৃষ্টি মাথায় ভোট শুরুর পর ব্যবস্থাপনার নানা ত্রুটি বেরিয়ে আসতে থাকে; ভোট শেষের আগে ছাত্রদল দিল বয়কটের ঘোষণা।
ডাকসু নির্বাচনের দুদিন পর বৃহস্পতিবার এমন দৃশ্য সাজিয়েই শেষ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল ছাত্র সংসদের নির্বাচন।
ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরুর কথা; তা শেষ হলেই জানা যাবে কে জিতল, কে হারল? ডাকসুতে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল আসতে প্রায় ২০ ঘণ্টা সময় লেগেছিল।
৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন, ছাত্র ৬ হাজার ১৫ জন।
এদের মধ্যে কত শতাংশ ভোট দিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশ ভোট গ্রহণ হওয়ার একটি হিসাব দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা মহানগরীর কাছের সাভার উপজেলায় স্থাপিত আবাসিক এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট নির্বিঘ্ন করতে বহিরাগতদের অবস্থান নিষিদ্ধ করেছিল প্রশাসন।
কিন্তু তা উপেক্ষা করে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নেতা হলে অবস্থান করেন বলে খবর পাওয়া যায়। তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভও দেখা দেয়।
তার মধ্যেই সকাল ৯টায় সকালে কড়া নিরাপত্তায় ২১টি আবাসিক হলে ২২৪টি বুথে এক যোগে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু হয়।
তবে ছাত্রীদের বেগম ফজিলাতুন্নেছা হলে ভোট গ্রহণ শুরুতে প্রায় আধা ঘণ্টা দেরি হয় প্রস্তুতির জন্য। ছাত্রদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলেও ভোটগ্রহণ শুরু হয় খানিকটা দেরিতে।
সকালে ভোটকেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। ঘণ্টা দুয়েক পর বৃষ্টি শুরু হলে হলগুলো বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। অন্ধকারে ভোটগ্রহণ হয় ব্যাহত, এরপর জেনারেটর চালু করে বিদ্যুৎ ফেরানোর আগে চার্জার লাইটের ব্যবস্থা করতে করতেও কিছু সময় গড়িয়ে যায়।
এরমধ্যে আবার দেখা যায়, ভোট দেওয়ার সময় যে অমোচনীয় কালির চিহ্ন দেওয়া হচ্ছিল ভোটারদের আঙুলে, তা উঠে যাচ্ছে। ফলে জাল ভোটের শঙ্কা তৈরি হয়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার সময় ভোটারের আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
১৫ নম্বর ছাত্রী হলে শিবিরের পক্ষে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রদলের নেতারা সেখানে যান। সেখানে হট্টগোলের কারণে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।
ভোটার তালিকায় ছবি না থাকায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে সেখানে ভোট গ্রহণ আধা ঘণ্টার মতো বন্ধ থাকে।
এটাকে ‘ব্যবস্থাপনাগত সমস্যা’ বলে স্বীকার করে নেন জাকসু নির্বাচনের সেন্ট্রাল মনিটরিং দলের সদস্য সালেহ আহমদ খান।
ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বিএনপি সমর্থক তিন শিক্ষক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামীমা সুলতানা।
এমন পরিস্থিতিতে ভোট চলার মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী বলেন, “ভোটকেন্দ্র মনিটর করার জন্য জামায়াত নেতার কোম্পানি ঘিরে টেলিকাস্টসহ ভিডিও ক্যামেরা সাপ্লাই দিয়ে সিসি টিভির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে পুরো ভোটকেন্দ্র শিবিরকে মনিটর করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
“আমাদের বিজয় ব্যাহত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে এক হয়ে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের রায়ের সত্যিকার প্রতিফলন ঘটছে না। তাই আমরা নির্বাচন বর্জ করতে বাধ্য হচ্ছি।”
তার আগে দুপুর ১টায় ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান একই অভিযোগ তুলে সাংবাদিকদের বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর নেতার কোনও এক অখ্যাত কোম্পানি থেকে যথাযথ ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নির্বাচন কমিশন জাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার ও ভোট গণনার ওএমআর মেশিন সরবরাহ করেছে।
“আমরা এ নিয়ে ভোট গণনায় কারচুপির শঙ্কা করেছি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু একই কোম্পানির সরবরাহকৃত ব্যালট পেপার দিয়েই আজকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ছাত্রশিবির তাদের নিজস্ব কোম্পানি থেকে আলাদা করে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হওয়ার জন্য নীল নকশা করে রেখেছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশে জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতা-কর্মী জড়ো হয়ে রয়েছে বলেও দাবি করেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী।
অন্যদিকে ছাত্রশিবিরও নির্বাচনে ব্যাপক অসঙ্গতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে।
সংগঠনটি সমর্থিত প্যানেল ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’র ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ বলেছেন, “আমরা গতকাল থেকে দেখতে পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
“সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনারের যে পরিমাণ প্রস্তুতি থাকার কথা, তার একটি প্রস্তুতিও তারা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি।”
ওএমআর মেশিন ও ব্যালট পেপারে সঙ্গে জামায়াত নেতার কোম্পানির সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, “এইচআরসফট বিডি নামে যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে, তার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রোকমুনুর জামান রনি বিএনপি সমর্থক। অথচ এ নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।”
বহিরাগত নিয়ে পাল্টা অভিযোগ তুলে আরিফ বলেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং হলগুলোতে সাবেক ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের দেখা গেছে। তারা ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ভোট দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
বামদের একটি প্যানেল ‘সম্প্রীতির ঐক্য’র দুপুরের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, “আজ ভোটগ্রহণে চূড়ান্ত অনিয়ম এবং প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা সকাল থেকে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ঘুরে সকাল থেকে নানা অনিয়ম দেখেছি।”
অনিয়মের নজির দেখিয়ে বলা হয়, পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দিলেও তাদের কোনও লিস্টিংয়ের সুযোগ দেওয়া হয়নি, ভোটারদের হাতে কালো কালির মার্ক দেওয়া হয়নি, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে স্থাপনকৃত এলইডি স্ক্রিনে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচারের কথা থাকলেও সেগুলো বিকল হয়ে পড়েছিলো। প্রায় প্রতিটি হলেই ছাত্রশিবির ও ছাত্রীসংস্থার কর্মীরা নিজ প্রার্থীদের নাম সম্বলিত চিরকুট বিলি করেছে। জাহানারা ইমাম হলে একজন শিক্ষার্থীকে মারধরকরা হয়েছে। নজরুল হলে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে সব প্রার্থীর নাম না থাকায় সেখানে প্রথমে বাকি প্রার্থীদের নাম ছাড়াই নির্বাচন চলতে থাকে এবং পরে হাতে লিখে প্রার্থীদের নাম ব্যালট পেপারে যোগ করা হয়।
“এ সকল অনিয়মে আমরা মনে করছি এই নির্বাচন যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে হচ্ছে না। এবং আমরা এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছি,” বলেন এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী শরণ এহসান।
বাম সংগঠনগুলোর আরেকটি প্যানেল সংশপ্তক পর্ষদও অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
তাদের এক ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়, “জাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ন্যক্কারজনক ভূমিকা ও ছাত্রশিবিরকে ভোট জালিয়াতি সহযোগিতার প্রতিবাদে জাকসু বর্জন।”
ভোট শেষের সঙ্গে সঙ্গে ভোটের হার জানাতে না পারলেও বেলা ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি ভোট গ্রহণ হয় বলে জানান জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার টিটু।
তিনি বলেন, “কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার জন্য কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। আমরা সেসব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দিষ্ট সময়ের পরও ভোটার এলে কিছু সময়ের জন্য ভোট নিতে বলেছি।”
১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত ৯ বার অনুষ্ঠিত হয়েছে জাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯২ সালে। সেবার ছাত্রদল জাকসু এবং হল ছাত্র সংসদগুলোতে বিজয়ী হয়েছিল। জাকসুতে ভিপি হয়েছিলেন মাসুদ হাসান তালুকদার, জিএস হয়েছিলেন শামসুল তাবরীজ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পরিবর্তিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়।
তফসিল ঘোষণার পর গত ১০ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয় ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর যাচাই-বাছাই, আপত্তি শুনানির পর ২৯ আগস্ট চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১০ দিন প্রচারের সময় দিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণের দিন ঠিক করা হয়।
জাকসুতে ২৫ পদে মোট প্রার্থী এখন ১৭৭ জন। হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ৪৪৫ জন।
বেগম সুফিয়া কামাল হল ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে সব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। ফলে এই দুই হলে শুধু কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
বেগম সুফিয়া কামাল হলে ১৫ পদের ১০টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন, বাকি পাঁচ পদ শূন্য রয়েছে। নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে ১৫ পদের ছয়টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন প্রার্থীরা, বাকি ৯টি পদ শূন্য রয়েছে।
এবারের জাকসু নির্বাচনে ব্যাপক আলোচনা চলছে অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল নিয়ে। ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাবেক এই সভাপতি ভিপি প্রার্থী ছিলেন।
অনিয়মিত হওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। আওয়ামী লীগ আমলে বহিষ্কৃত হওয়া তার এই অনিয়মিত হওয়ার কারণ দেখিয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা চলছে।
৭ প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ অর্থাৎ জাকসুতে ২৫ পদের জন্য লড়াইয়ে রয়েছে ১৭৭ জন। তার মধ্যে ভিপি পদে ৯ জন এবং জিএস পদে ৮ জন প্রার্থী। হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ৪৪৫ জন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সাতটি প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে; এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছে অনেক।
ছাত্রদলের প্যানেলে ভিপি প্রার্থী করা হয়েছে মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রদলের সভাপতি মো. শেখ সাদী হাসানকে। জিএস প্রার্থী হয়েছেন ১৩ নম্বর ছাত্রী হল ছাত্রদলের সভাপতি তানজিলা হোসাইন বৈশাখী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে মো. সাজ্জাদুল ইসলাম এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে আঞ্জুমান আরা ইকরা ছাত্রদলের প্যানেলে লড়বেন।
ডাকসুতে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে জয়ী ইসলামী ছাত্রশিবির জাকসুতে লড়ছে ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে। তাদের ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ, জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে লড়বেন ফেরদৌস আল হাসান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে লড়বেন আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা।
অভ্যুত্থানকারীদের গড়া দল এনসিপির ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই প্যানেলে ভিপি প্রার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল, জিএস প্রার্থী আবু তৌহিদ মো. সিয়াম। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে জিয়া উদ্দিন আয়ান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে মালিহা নামলাহ লড়ছেন।
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের একাংশসহ বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতি সংগঠন মিলে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা করে। এই প্যানেলে ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় থাকলেও তিনি লড়াই থেকে বাদ পড়ায় এখন জিএস প্রার্থী থাকছেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি শরণ এহসান।
১১ জন নারী, ৭ জন আদিবাসী, ৬ জন সনাতন ধর্মাবলম্বী, ৩ জন বৌদ্ধ ও ২ জন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীকে নিয়ে সাজানো এই প্যানেলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রার্থী নুর এ তামীম স্রোত এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে প্রার্থী ফারিয়া জামান নিকি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুর রশিদ জিতুর নেতৃত্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’। এই প্যানেলে ভিপি প্রার্থী জিতুর সঙ্গে জিএস প্রার্থী রয়েছেন শাকিল আলী। এই প্যানেলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রার্থী রয়েছেন তৌহিদুল ইসলাম নিবির ভূঁঞা।
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলে ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ নামে একটি আংশিক প্যানেল দিয়েছে। এই প্যানেলে ভিপি প্রার্থী নেই, জিএস পদে লড়ছেন জাহিদুল ইসলাম ইমন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে প্রার্থী হয়েছেন সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের একাংশের মুখপাত্র মাহফুজ ইসলাম মেঘের নেতৃত্বে আট সদস্যের ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ নামে আরেকটি আংশিক প্যানেল ভোটের লড়াইয়ে রয়েছে। মাহফুজ এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী, জিএস প্রার্থী তানবীর হোসেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে এই প্যানেলের প্রার্থী নাজমুল ইসলাম।