Beta
শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫

ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক মারা গেছেন

ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক। সংগৃহীত ছবি
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক। সংগৃহীত ছবি
[publishpress_authors_box]

ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই। রাজধানী ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মারা গেছেন। ৯৬ বছর বয়সী আহমদ রফিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আহমেদ রফিক রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার স্ত্রী মারা যান ২০০৬ সালে। এ দম্পতি নিঃসন্তান। আহমদ রফিক বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল তাকে।

প্রথম আলো জানিয়েছে, আহমদ রফিকের স্বাস্থ্যের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী। তিনি চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তার মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।

ইসমাইল সাদী বলেন, “আহমদ রফিক আজ রাত ১০টা ১২ মিনিটে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।”

আহমদ রফিককে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় গত রবিবার তাকে বারডেমে ভর্তি করা হয়।

ভাষা আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিষয়ে গবেষণা করেছেন আহমদ রফিক। কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে তার লিখিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি দুই বাংলায় অগ্রগণ্য। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন আহমদ রফিক।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্রনিক কিডনি ফেইলিওর, আলঝেইমার্স রোগ, পারকিনসন্স রোগ, ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স, বেডশোর, ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন আহমদ রফিক।

আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইসমাইল সাদী জানান, শনিবার সকাল ১১টায় সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আহমদ রফিকের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, “আহমদ রফিক দেহ দান করেছেন। ফলে তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালকে দেওয়া হবে।”

চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই শিক্ষার্থীর ইচ্ছা অনুযায়ী তার দেহ চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণায় দেওয়া হবে; যে কারণে তার দাফন হবে না।

ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর গ্রামে। মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। এরপর রসায়নে পড়তে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু ফজলুল হক হলের আবাসিক সুবিধা না পাওয়ায় পরে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে।

১৯৫২ সালে তৃতীয়বর্ষে পড়ার সময় ফজলুল হক হল, ঢাকা হল এবং মিটফোর্ডের ছাত্রদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলার কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি সভা-সমাবেশ মিছিলে ছিলেন নিয়মিত।

১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনকারী ছাত্রদের মাঝে একমাত্র তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

১৯৫৫ সালের শেষ দিকে প্রকাশ্যে বেরিয়ে এসে পড়াশোনায় ফেরেন আহমদ রফিক। এমবিবিএস ডিগ্রি নিলেও চিকিৎসকের পেশায় যাননি।

১৯৫৮ সালেই আহমেদ রফিকের প্রথম প্রবন্ধের বই ‘শিল্প সংস্কৃতি জীবন’ প্রকাশ হয়। তারপর লেখালেখিতেই জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন।

ডেইলি স্টার জানিয়েছে, আহমদ রফিকের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে ২০১৯ সালে। সে বছর চোখে অস্ত্রোপচার করা হলেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। ২০২৩ সালে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত