পথ দেখিয়েছেন ফুটবলার হামজা চৌধুরী। সেই পথ ধরে অন্য ফেডারেশনগুলোকে প্রবাসী খেলোয়াড় আনার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)।
বাংলাদেশের ফুটবলে প্রবাসী খেলোয়াড়দের খেলা নিয়ে আলোচনা এখন বেশি চলছে। হামজা চৌধুরী এরই মধ্যে বাংলাদেশের জার্সিতে ম্যাচ খেলেছেন। কানাডাপ্রবাসী সমিত সোমও বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে শোনা গেছে।
শুধু ফুটবলই নয়, সব খেলাতেই যোগ্য প্রবাসী খেলোয়াড় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) সচিব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সকল ফেডারেশনকে অনুরোধ করেছে এনএসসি। এমনকি ফেডারেশনগুলোকে সহযোগিতা করতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যথেষ্ট আগ্রহী।
হামজা চৌধুরী বাংলাদেশ দলে আসার পরই ফুটবলের আবহ বদলে গেছে। দলীয় শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বত্রই এখন ফুটবল নিয়ে আলোচনা। সামিত সোমও যোগ হলে বাংলাদেশ দলের মান আরও অনেক বাড়বে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল ভূঁইয়া বাংলাদেশ দলে প্রথম খেলেন। সময়ের পরিক্রমায় তিনি বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়কত্ব করছেন অর্ধযুগের বেশি সময়। জামালকে অনুসরণ করে ফুটবল দলে তারিক কাজী, রাহবার হোসেন ও কাজেম শাহ খেলেছেন।
ফুটবলের মতো অন্য খেলাগুলোতেও বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ক্রীড়াবিদ অর্ন্তভুক্তির সুযোগ রয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। প্রবাসী ক্রীড়াবিদদের বাংলাদেশের হয়ে খেলতে হলে পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন, বাবা-মায়ের কাগজপত্র হালনাগাদসহ আরও অনেক বিষয়াদির আনুষ্ঠানিকতা থাকে।
এই সংক্রান্ত বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি কোনো ফেডারেশন বা ক্রীড়া সংস্থা এই সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করলে অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও পাশে থাকবে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান প্রবাসী জিমন্যাস্ট জ্যাক আশিকুল ইসলামের অনুকূলে বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সম্পৃক্ত রয়েছে।
ফুটবলের বাইরে অ্যাথলেটিকস, বক্সিং, জিমন্যাস্টিকস ও সাঁতারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ক্রীড়াবিদরা অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইংল্যান্ড প্রবাসী ইমরানুর রহমান এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকসে সোনা জিতেছেন। যা বাংলাদেশের অ্যাথলেটিকসের ইতিহাস। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাইক সিজার লন্ডন অলিম্পিকে খেলেছিলেন। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্টিকস দলের সহকারী কোচ ছিলেন। নিউজিল্যান্ড প্রবাসী জিমন্যাস্ট আলী কাদির ২০২২ সালে তুরস্কে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছিলেন। ২০২৩ হাংজু এশিয়ান গেমসে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জিনাত অংশগ্রহণ করেছিলেন। যদিও তিনি কাঙ্ক্ষিত আশা পূরণ করতে পারেননি। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে লন্ডন প্রবাসী জুনাইনা আহমেদ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।