Beta
সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫

সমালোচনার মুখে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন রুশনারা আলী

রুশনারা আলী।
রুশনারা আলী।
[publishpress_authors_box]

বিতর্কের মুখে টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগ করেছেন আট মাস হলো; এবার সমালোচনার মুখে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হলো যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরেক রাজনীতিক রুশনারা আলীকে।

ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ ও ভাড়া বাড়ানোর ঘটনায় সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার তিনি গৃহহীনতাবিষয়ক উপমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন।

প্রধালমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার খবর এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের সরকারি ওয়েসসাইটে নিশ্চিত করা হয়েছে। রুশনারা আলী সোশাল মিডিয়ায় এক পোস্টেও তার পদত্যাগের কারণ জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যে রুশনারা আলীই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টে যান। লেবার পার্টিতে তার পথ ধরে পরে টিউলিপ সিদ্দিক, রুপা হক ও আপসানা বেগম এমপি নির্বাচিত হন।

গত বছর লেবার পার্টি কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে ক্ষমতায় ফেরার পর টিউলিপ সিটি মিনিস্টারের পদ পেয়েছিলেন, রুশনারা হন হোমলেসনেস আন্ডার সেক্রেটারির পদ।

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাকে কেন্দ্র করে নানা অনিয়মে তার ভাগ্নি টিউলিপের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। যুক্তরাজ্যেও বাড়ি নিয়ে কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে গত জানুয়ারিতে তিনি পদত্যাগ করেন।

এবার রুশনারাও পদত্যাগ করলেন সরকার থেকে। এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি লিখেছেন, “এই লেবার সরকারে কাজ করা আমার জন্য সম্মানের। সরকারকে আর কোনও বিক্ষোভের মুখে পড়া এড়াতে আমি মন্ত্রী পদ ছেড়ে দিচ্ছি।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, লন্ডনের বো এলাকার একটি চার বেডরুমের ফ্ল‍্যাটের মালিকানা ছিল রুশনারার নামে। গত বছরের নভেম্বরে বিক্রির কথা বলে সেই ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়াদের তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরপর ফ্ল্যাটটি বিক্রি না করে ভাড়া ৭০০ পাউন্ড বাড়িয়ে আরেকজনকে ভাড়া দেওয়া হয়।

বিষয়টি প্রকাশ পেলে গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক সমলোচনা হচ্ছিল রুশনারাকে নিয়ে। তিনি বিরোধী দলের তোপের মুখেও পড়েন।

কারণ তিনি নিজেই পার্লামেন্টে ‘ভাড়াটিয়া অধিকার বিল’-এ বাড়িওয়ালাদের এ ধরনের আচরণ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব রেখেছিলেন।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রাজনীতিকরা।

রুশনারার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। গৃহহীনদের নিয়ে পুরনো আইন বাতিল করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

স্টারমার আশা প্রকাশ করেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও পার্লামেন্টে থেকে রুশনারা তার নির্বাচনী এলাকা বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনির মানুষের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যাবেন।

প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ হিসাবে রুশনারা ২০১০ সালে টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে হাউস অব কমন্সের সদস্য নির্বাচিত হন।

এরপর টানা চার বার নির্বাচিত হওয়া পর গত বছর বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসন থেকে ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে পঞ্চম বারের মতো ভোটে জেতেন তিনি।

গত বছরের নির্বাচনে তার বোট কমলেও লেবার পার্টির জন্য আসনটি ধরে রাখেন তিনি। তিনি হারিয়েছিলেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ আজমল মাশরুরকে, যিনি ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তার বয়স যখন সাত বছর, তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তার পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক করেছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত