নাম বদলে যাওয়া বৈশাখী শোভাযাত্রার জন্য ‘ফ্যাসিবাদ’র মুখাবয়বের যে মোটিফ তৈরি হয়েছিল, তা দেওয়া হয়েছিল পুড়িয়ে। তারপর এক দিনের মধ্য নতুন একটি মোটিফ তৈরি করে বের হলো এই শোভাযাত্রা।
সোমবার পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত এই বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় প্রতিপাদ্য ছিল- ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে চলে আসা এই শোভাযাত্রার নাম ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা; রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে এবার সেই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা।
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেরণা থেকে এবার এই শোভাযাত্রার জন্য ‘ফ্যাসিবাদ’র মুখাবয়বের একটি মোটিফ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার ভোরে তা পুড়িয়ে দেয় এক দুষ্কৃতী।
সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট ও বাদামি প্যান্ট পরা এক যুবক চারুকলা অনুষদের দক্ষিণ দিকের ফটক টপকে ভেতরে ঢুকে দেড় মিনিটের মধ্যে মোটিফে তরল দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আবার ফটক টপকে পালিয়ে যান।
ওই মোটিফটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদলে তৈরি করা বলে সমালোচনা উঠেছিল।
মোটিফটি পুড়ে যাওয়ার পর সেটি নতুন করে তৈরির কাজ শুরু করেন চারুকলার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাতেই থার্মোকল বা সোলা দিয়ে নতুন করে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ বানানোর কাজ শুরু হয়।

সোমবার তা নিয়েই চারুকলা থেকে শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। এটি ছাড়াও তরমুজের ফালি, বাঘ, ইলিশ, শান্তির পায়রা ও পালকির মোটিফ শোভা বাড়ায় শোভাযাত্রায়। জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে পানির বোতলের মোটিফও ছিল শোভাযাত্রায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ উদ্দিন আহমদ খানের নেতৃত্বে শুরু হয় এই শোভাযাত্রা। নানা মুখোশ পরে এতে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ অগুনতি মানুষ।
র্যাব-পুলিশের পাহারার মধ্যে শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হয়।



