গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির যে অনুষ্ঠানে ‘মব’ এর পর সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সেই অনুষ্ঠানে সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খানও ছিলেন।
‘মব’র হেনস্থার শিকার হওয়া লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে পুলিশ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার দেখানোর পর তারা এখন কারাগারে।
সেদিন গ্রেপ্তার না হলেও ১০ দিন পর পুলিশ গ্রেপ্তার করল আবু আলম শহীদ খানকে। তাকে সোমবার শাহবাগ থানায় করা একই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
লতিফ সিদ্দিকীদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন শাহবাগ থানার এসআই আমিরুল ইসলাম। সেই মামলায় শহীদ খানকেও গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকালে ঢাকার আদালতে নেয় পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই তৌফিক হাসান আসামি হিসাবে শহীদ খানকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করলে তাতে সায় দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ওমর ফারুক ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, আবু আলম শহীদ খান মঞ্চ ৭১ এর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও তখন তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। সন্দিগ্ধ আসামি হিসাবে গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হলো।
এই মামলার এজহারে বলা হয়, “আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী মঞ্চ ৭১ এর ব্যানারকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও উপস্থিত অন্যদের প্ররোচিত করে বক্তব্য প্রদান করছিলেন।”
যদিও লতিফ সিদ্দিকী ওই সভায় কথা বলার আগেই ‘মব’ আক্রান্ত হন। ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে চড়াও হওয়া ব্যক্তিরা তাদের হেনস্থাও করে।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার দাবি তুলে ‘মঞ্চ ৭১’ সংগঠনটি গড়ে তোলেন গণফোরামের নেতা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বীর প্রতীক এবং সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
তাদের অনুষ্ঠানে গিয়ে লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল্লাহিল কাইয়ুমও গ্রেপ্তার হন। ওই অনুষ্ঠানের আলোচক আবু আলম শহীদ খানও এখন গ্রেপ্তার হলেন।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হয়ে অবসরে যান শহীদ খান। তারপর তিনি কিছুদিন যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে কাজ করেছিলেন। টিভি টক শোগুলোতে নিয়মিতই দেখা যেত তাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক ছাত্র আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ প্রেস সচিব ছিলেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় গেলে শহীদ খানকে ওএসডি করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর পদোন্নতি পেয়ে পেয়ে তিনি জ্যেষ্ঠ সচিব হন। ২০১৫ সালে অবসরে যাওয়ার আগে জনপ্রশাসনে বেশ প্রভাবশালী ছিলেন তিনি।