Beta
রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আমির হামজার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জাবি প্রশাসনের

আমির হামজা। ছবি : সংগৃহীত
আমির হামজা। ছবি : সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলোচিত ইসলামী বক্তা কুষ্টিয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা আমির হামজা যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আমির হামজার বক্তব্য সত্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।”

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমির হামজার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হওয়ার তথ্য সত্য নয়। আমির হামজা ‘আবাসিক হলে সকালে মদ দিয়ে কুলি করতে দেখার’ যে বর্ণনা দিয়েছেন তাও তার মনগড়া।

ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটায় বলে আমির হামজা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ‘সত্যের অপলাপ মাত্র’ বলে মনে করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে এ ধরনের ভিত্তিহীন বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানিয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনাব আমির হামজা নামে একজন বক্তার বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্পক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমির হামজা তার বক্তব্যে দাবি করেছেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আবাসিক হলে সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন। তিনি আরও বলেছেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটায়। প্রকৃত পক্ষে তার কোনও বক্তব্যই সত্য নয়।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালে ‘জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ’ চালু হয়- উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে এই বিভাগে প্রথম শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। সুতরাং তিনি জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হওয়ার যে তথ্য প্রকাশ করেছেন, তা সত্য নয়।

“আবাসিক হলগুলোতে সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করার প্রত্যক্ষ করার বর্ণনাটিও তার মনগড়া, যা অসত্য। প্রমাণসহ এমন নজির প্রশাসনের কাছে নেই। ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটানোর তার বক্তব্যটি সত্যের অপলাপ মাত্র। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষাথীর্দের আন্তঃসম্পর্কের বন্ধন সব সময়ই প্রশংসনীয়।”

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মনগড়া ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জনাব আমির হামজাকে এ ধরনের ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রদানে সতর্ক ও বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।”

আমির হামজাকে বিতর্কিত বক্তব্য না দেওয়ার পরামর্শ জামায়াতের

আলোচিত ইসলামী বক্তা আমির হামজা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী।

দেশ রূপান্তর জানিয়েছে, আমির হামজার বিতর্কিত বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তার জামায়াতে ইসলামী। দলটি তাকে রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত কোনও বিষয়ে বক্তব্য না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। মুফতি হামজা নিজেও এ কথা স্বীকার করেছেন।

কক্সবাজারে অবস্থানরত আমির হামজা রবিবার গণমাধ্যমকে জানান, তার দায়িত্বশীলরা তাকে সংগঠন থেকে বিতর্কিত কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য না দেওয়ার জন্য বলেছেন। দুই কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল তাকে মাহফিলে বক্তব্য দেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে বলেছেন।

আমির হামজা বলেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোরআনের তাফসিরের বাইরে আর কিছু বলব না। কোনও বিষয়ে তুলনা করে কথা বলতে গেলেই প্যাঁচ লেগে যায়। আমি আর এসবের মধ্যে নেই।”

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলে আযান দেওয়া নিয়ে বক্তব্যের সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের নাম বলতে গিয়ে মুহসিন হলের নাম বলে ফেলেছি। এটা মুখ ফসকে হয়ে গেছে, আমি এ জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।”

তিনি আরও বলেন, “মুহসিন হলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের জামানায় অনেক জুলুম-অত্যাচার হয়েছে। বাথরুমে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করার ঘটনা ছাত্রদের কাছে শুনেছি। এমন তো না সেখানে কোনও জুলুম হয়নি। কিন্তু আমার এভাবে বলা উচিত হয়নি, আগামীতে সতর্ক থাকব।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আবাসিক হলে সকালে মদ দিয়ে কুলি করতে দেখার’ প্রসঙ্গে তার বক্তব্যের সমালোচনা নিয়ে আমির হামজা বলেন, “আমি তো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছিলাম। ওই ক্যাম্পাসে কি হতো সবাই জানে। আমি কি অপরাধ করলাম? এখন বলেছে মদের বোতলে পানি খায়, আমি কি জানি! যদি তাই হয় আমি দুঃখিত। আমি এসব নিয়ে আর কিছুই বলব না।”

কালের কণ্ঠ জানিয়েছে, আলোচিত ইসলামী বক্তা আমির হামজা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এর আগে ভারতের অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানাকে নিয়ে তার দেওয়া এক বক্তব্য নিয়েও সমালোচনা হয়।

এ প্রসঙ্গে আমির হামজা বলেন, “মা হাওয়ার সৌন্দর্যের বর্ণনা প্রসঙ্গে আমি এ কথা বলেছিলাম। এজন্য মাফ চেয়েছি, আর কোনোদিন এসব বলব না। কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করছি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত