অপেক্ষার পালা শেষ। আজ (সোমবার) প্যারিসের আলো ঝলমলে রাতে ঘোষণা করা হবে নতুন ব্যালন ডি’অর জয়ীর নাম। এবার ফেবারিট উসমান দেম্বেলে। গত মৌসুমে পিএসজিকে ট্রেবল জেতানো এই নায়কের প্রতিদ্বন্দ্বী লামিনে ইয়ামাল ও রাফিনিয়া।
যেভাবে শুরু ব্যালন ডি’অর
১৯৫৬ সাল থেকে ফরাসি সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবল এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। এর পর থেকে গত সাত দশকে এই পুরস্কার নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে, তবে আবেদন আছে আগের মতোই।
দুই ফরাসি ক্রীড়া সাংবাদিক—গ্যাব্রিয়েল আনো আর জ্যাক ফেরাঁর মাথায় প্রথম এসেছিল এই পুরস্কারের ভাবনা। দুজনই ছিলেন লেকিপের সাংবাদিক। ফেঁরা আবার ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন। তাদের পরিকল্পনাতেই ১৯৫৬ সাল থেকে ফ্রান্স ফুটবল বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেওয়া শুরু করে।
১৯৯৪ সাল পর্যন্ত পুরস্কারটি ছিল শুধুমাত্র ইউরোপে জন্ম নেওয়া ফুটবলারদের জন্য। ১৯৯৫ সাল থেকে ইউরোপের বাইরের খেলোয়াড়দের জন্যও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় পুরস্কারটি। আর প্রথম সংস্করণেই ব্যালন ডি’অর জেতেন লাইবেরিয়ান কিংবদন্তি জর্জ উইয়া।
কীভাবে নির্ধারণ হয় বিজয়ী
ব্যালন ডি’অর তিনটি প্রধান মানদণ্ডের ভিত্তিতে দেওয়া হয়:
১. ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স, ফল গড়ে দেওয়ার সামর্থ্য ও আকর্ষণীয় ফুটবলের প্রদর্শনী।
২. দলীয় পারফরম্যান্স ও সাফল্য।
৩. খেলোয়াড়ি মান ও ফেয়ার প্লে।
ভোট দেন কারা
শুরুতে শুধু ফুটবল সাংবাদিকদের ভোটেই ঠিক হতো ব্যালন ডি’অরজয়ী। ২০০৭ সালে জাতীয় দলের কোচ আর অধিনায়কেরাও ভোট দেওয়ার অধিকার পেলেন। তবে ২০১৬ সালে আবার শুধু সাংবাদিকদের ভোটের নিয়মে ফিরে গেল ফ্রান্স ফুটবল। ২০২২ সালে আবার এই নিয়মে বদল আসে, শুধু ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ১০০-তে থাকা দেশের একজন করে সাংবাদিক পান ভোটাধিকার।
প্রথমে ফ্রান্স ফুটবল আর ফরাসি পত্রিকা লেকিপ-এর সাংবাদিকেরা মিলে তৈরি করেন ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা। এরপর শুরু হয় প্রত্যেকে নিজের শীর্ষ-১০ ঠিক করেন—প্রথম স্থানে থাকা খেলোয়াড় পান ১৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয় ১২, তৃতীয় ১০; এরপর ক্রমানুসারে ৮, ৭, ৫, ৪, ৩, ২ আর ১ পয়েন্ট।
সব ভোট যোগ করে যিনি সর্বোচ্চ পয়েন্ট পান, তিনিই ব্যালন ডি’অর জেতেন।
কে কতবার জিতেছেন
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি রেকর্ড আটবার জিতেছেন ব্যালন ডি’অর। তারপরই আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো—পাঁচবার। ইয়োহান ক্রুইফ, মিশেল প্লাতিনি ও মার্কো ফন বাস্তেন জিতেছেন তিনবার করে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে জিতেছেন ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রি।
এবার ফেবারিট দেম্বেলে
নাটকীয় কিছু না ঘটলে আজ প্যারিসে সোনালি ট্রফিটা উঠতে যাচ্ছে উসমান দেম্বেলের হাতে। পিএসজির ২০২৪-২৫ মৌসুমে লিগ ওয়ান,, ফ্রেঞ্চ কাপ আর চ্যাম্পিয়নস লিগ। এই সাফল্যের অন্যতম রূপকার দেম্বেলে। মৌসুমে করেছেন ৩৫ গোল, সহায়তা করেছেন ১৬ গোলে।
ব্যালন ডি’অরের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ১৩ জুলাই পর্যন্ত পারফরম্যান্স। এই সময়ে মোহাম্মদ সালাহ, লামিনে ইয়ামাল, রাফিনিয়া, কিলিয়ান এমবাপ্পেরাও আলো ছড়িয়েছেন। তবে সাফল্যে সবাইকে ছাড়িয়ে দেম্বেলে।