Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

‘ঘরে’ ফিরলেন মাহবুব উদ্দিন খোকন

মাহবুব উদ্দিন খোকন
মাহবুব উদ্দিন খোকন
Picture of আব্দুল জাব্বার খান

আব্দুল জাব্বার খান

সংগঠনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদ গ্রহণ করেছিলেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। এই ‘অপরাধে’ তাকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

তবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ফোরাম। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ফোরাম জানিয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মাহবুব উদ্দিন খোকনের পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দপ্তর সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আপনাকে সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ২৫ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে বিএনপির মহাসচিব এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও জনাব আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এর উপস্থিতিতে সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্মতিতে আপনার অব্যাহতিপত্র প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অত্র পত্রের মাধ্যমে নির্দেশক্রমে আপনাকে বিষয়টি অবহিত করা হলো।”

মঙ্গলবারই কায়সার কামালের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন মাহবুব উদ্দিন খোকন।

তিনি লিখেছেন, “গত ২২ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনে আপনার (কায়সার কামাল) বিরুদ্ধে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য প্রদান করেছি যা আপনার অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে বলে আমি উপলিব্ধ করেছি। সে কারণে আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত। এজন্য আপনার একজন সিনিয়র সহকর্মী হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করছি, আপনি এ বিষয়টি নিয়ে আমার প্রতি আর কোনও বিরূপ ধারণা পোষণ করে থাকবেন না।”

দ্বন্দ্বের শুরু যেভাবে

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি থেকে সভাপতি পদে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল অংশ নেন।

নির্বাচনে ভোট গণনা নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-মামলার ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের দুইপক্ষের বিরোধ ভোট গণনার দিন প্রকাশ পেলেও বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধ শুরু হয় ভোট গণনা এবং দায়িত্ব গ্রহণের প্রসঙ্গ থেকে।

বিএনপির আইনজীবীদের ভোট গণনা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। তবে দলীয় এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোট গণনায় অংশ নেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বলা হলেও সেটিও গ্রহণ করেন তিনি।

এ অবস্থায় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে গত ২১ এপ্রিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

২২ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে মাহবুব উদ্দিন খোকন তাকে অব্যাহতির বিষয়ে মুখ খোলেন। সেদিন তিনি ব্যারিস্টার কায়সার কামালের বিষয়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে কিছু কথা বলেন, যা নিয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি গড়ায় দলের শীর্ষ পর্যায়ে। এরপর হাই কমান্ড বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের নিয়ে আলাদা বৈঠক করে। পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য আব্দুল মঈন খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর উপর বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব পড়ে।

তারাই উদ্যোগী হয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে নিয়ে করা বক্তব্যের কারণে খোকনকে ক্ষমা চাইতে বলেন। আর খোকনকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলেও ঠিক হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম সজল সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মাহবুব উদ্দিন খোকন তার বক্তব্য নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এজন্য তাকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বারের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করবেন এবং ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতিও থাকবেন।”

বারের সদস্য পদে বিজয়ী হওয়া বাকী তিন সদস্য দায়িত্ব গ্রহণ করবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখন তাদেরও দায়িত্ব গ্রহনে বাধা নেই।

“আমরা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম একটি ঐক্যবদ্ধ পরিবার। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মান অভিমান থাকতেই পারে। তবে আমাদের অভিভাবক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশ ও পরামর্শে আমাদের মাঝে যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল তার অবসান হলো।”

গত ৬ ও ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হয়। নির্বাচনে ১৪টি পদের বিপরীতে সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ী হয়েছিল বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল। সম্পাদকসহ ১০টি পদে বিজয়ী হয় সরকার সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত