Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে প্রাণ গেল পথচারীর, যোগাযোগ বিঘ্নিত

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

রাজধানী ঢাকার ফার্মগেইট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ গেছে এক পথচারীর। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকের এ দুর্ঘটনার কারণে মেট্রোরেল চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে ভোগান্তির মুখে পড়েছেন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় এই গণপরিবহনের যাত্রীরা।

দুর্ঘটনার পরপরই উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ঘটনার আড়াই ঘণ্টা পর বিকাল ৩টায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। আর পৌনে ৭ ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।

মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) রবিবার সন্ধ্যায় এক বার্তায় এ তথ্য জানায়। অর্থাৎ দুর্ঘটনার প্রায় ৭ ঘণ্টা পরও মতিঝিল-উত্তরা পুরো পথে মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব হয়নি। শাহবাগ থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা বন্ধ ছিল।

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে যাত্রীদের ধৈর্য ধারণের অনুরোধ জানিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ডিএমটিসিএল।

নিহত পথচারী আবুল কালাম আজাদের (৩৫) বাড়ি শরীয়তপুরে। স্বজনরা জানিয়েছেন, তার মা-বাবা নেই। স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি থাকতেন নারায়ণগঞ্জে। ঢাকায় ট্রাভেল এজেন্সির কাজে এসেছিলেন তিনি।

আবুল কালাম আজাদ। ছবি : পরিবারের সৌজন্যে

নিহত আবুল কালাম আজাদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার অর্থসহায়তা দেওয়া হবে। তার পরিবারে কর্মক্ষম কেউ থাকলে যোগ্যতা অনুযায়ী তাকে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

এর আগে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ফার্মগেইট এলাকায় মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়েছিল। এ কারণে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। এ ঘটনায় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়। এর মধ্যে রবিবার দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার ঘটনা ঘটল।

এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। রবিবার দুপুরে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই যুবকের লাশ দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। নিহত যুবকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রবিবার ফার্মগেইট স্টেশনের সংলগ্ন ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে একটি রাবারের বিয়ারিং প্যাড পড়ে।

বিডিনিউজ জানিয়েছে, ওই প্যাড পড়ে একটি চায়ের দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

রাজধানীর ফার্মগেইট এলাকায় নিচে পড়ে যাওয়া বিয়ারিং প্যাড। ছবি : প্রথম আলো

তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন বলেন, ফার্মগেইট মেট্রো স্টেশনের নিচে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনের ফুটপাত দিয়ে এক পথচারী হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় উপর থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালাম আজাদের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বিকাল ৩টার কিছু পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে উত্তরা অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেছে। বাকি অংশ চালু করতে একটু সময় লাগবে। কারণ, ক্রেন আসতে হবে। আবার দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য মেরামতের পর পরীক্ষা করতে হবে।

প্রথম আলো জানিয়েছে, মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের এসব বিয়ারিং প্যাড থাকে। এগুলোর প্রতিটির ওজন আনুমানিক ১৪০ বা ১৫০ কেজি। এসব বিয়ারিং প্যাড ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্যই মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে।

এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না স্বজনরা

রবিবার বিকালে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে দাঁড়িয়েছিলেন নিহত আবুল কালাম আজাদের স্বজন আরিফ হোসেন। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দুপুরে আবুল কালাম আজাদের নম্বর থেকে অপরিচিত একজন ফোন দিয়ে গুরুতর দুর্ঘটনা হয়েছে বলে জানান। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আসার জন্য বলে। হাসপাতালে এসে তিনি মৃত্যুর খবর পান।

প্রথম আলো জানিয়েছে, কিশোর বয়সে বাবা-মাকে হারিয়েছিলেন আবুল কালাম আজাদ। এরপর ভাই-বোনদের সংসারে বেড়ে ওঠেন। কঠোর পরিশ্রম করে সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে চেষ্টা করছিলেন। পরিবারের প্রিয় মানুষটি মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা গেছেন।

আবুল কালাম আজাদের স্বজনদের আহাজারি। রবিবার বিকালে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে। ছবি : প্রথম আলো

আবুল কালাম আজাদের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে। তার এমন অকালমৃত্যু মানতে পারছেন না স্বজন ও গ্রামের মানুষেরা।

ঈশ্বরকাঠি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গ্রামের জলিল চোকদার ও হনুফা বেগম দম্পতির ছেলে আবুল কালাম আজাদ। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে আবুল কালাম ভাইদের মধ্যে সবার ছোট। ২০ বছর আগে তার বাবা ও মা মারা যান। এরপর তিনি বড় হন বড় ভাই ও বোনদের কাছে।

সংসারের স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে ২০১২ সালে মালয়েশিয়ায় যান আবুল কালাম আজাদ। সেখান থেকে ফিরে ২০১৮ সালে পাশের গ্রামের আইরিন আক্তারকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের ছয় বছরের এক ছেলে ও চার বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায় বসবাস করতেন। ঢাকার মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কাজ করতেন। ওই কাজের জন্যই প্রতিদিন তিনি নারায়ণগঞ্জ–ঢাকা যাতায়াত করতেন।

প্রতিদিনের মতো রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ থেকে মতিঝিলে আসেন আবুল কালাম আজাদ। এরপর কাজের জন্য সেখান থেকে বের হন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেইট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে যায়। সেটির নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান তিনি। এরপর গণমাধ্যমের সংবাদে পরিবারের সদস্যরা তার মৃত্যুর খবর জানতে পারেন।

আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুর খবরে শোকার্ত ঈশ্বরকাটি গ্রামের বাসিন্দারা। কান্নায় ভেঙে পড়েন গ্রামে থাকা তার স্বজনরা। অনেকে ছুটে যান ঢাকায়।

নড়িয়া উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কীর্তিনাশা নদী। নদীর তীরের ঈশ্বরকাটি গ্রামটি উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার পশ্চিমে। রবিবার বিকালে ঈশ্বরকাটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের বাড়িতে চার ভাইয়ের টিনের চারটি বসতঘর রয়েছে। গ্রামে এলে একটি ঘরে থাকতেন আবুল কালাম আজাদ। সেই ঘরটি তালাবদ্ধ।

তার বড় ভাই খোকন চোকদারের ঘরে বসে কাঁদছিলেন বড় বোন সেলিনা বেগম; কাঁদছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও। তার মৃত্যুর খবর শুনে গ্রামের মানুষেরা ও এলাকার তার বন্ধুবান্ধব বাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন।

আবুল কালামের বাল্যকালের বন্ধু রিহিনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, “এক মাস আগে আবুল কালাম যখন গ্রামে এসেছিল, তখন আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আমার সেই হাস্যোজ্জ্বল বন্ধুটি আজ নেই, ভাবতে পারছি না।”

ঘরে বসে আবুল কালামের ছবি হাতে নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বড় বোন সেলিনা বেগম বলছিলেন, “আমার ভাইটি সারা জীবন কষ্ট করেছে। কিশোর বয়সে বাবা–মাকে হারিয়েছে। আজ দুই শিশুসন্তান রেখে সে নিজেও না ফেরার দেশে চলে গেছে। এখন এই শিশু দুটির কী অবস্থা হবে? কে তাদের পিতৃস্নেহ দেবে। তার বিধবা স্ত্রী কার কাছে গিয়ে দাঁড়াবে? আল্লাহ, তুমি আমার ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে এমন কেন করলা।”

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের স্বজনদের সান্ত্বনা দেন। ছবি : প্রথম আলো

আবুল কালাম আজাদের বড় ভাই খোকন চোকদার গ্রামের বাড়িতে থাকেন। পারিবারিক জমিজমা দেখাশোনা করেন। পারিবারিক সেসব জমিজমা ও ফসলাদির খোঁজ নেওয়ার জন্য গত মাসে আবুল কালাম আজাদ গ্রামের বাড়িতে আসেন। বড় ভাইয়ের সঙ্গে কাজ সেরে আবার ঢাকায় ফিরে যান।

খোকন চোকদার প্রথম আলোকে বলেন, “ওটাই যে আমার ভাইয়ের শেষযাত্রা হবে, আমি বুঝতে পারিনি। এখন সে ফিরবে প্রাণহীন দেহ নিয়ে। আমরা স্বজনেরা অপেক্ষায় আছি তার প্রাণহীন দেহটার জন্য। আমাদের পরিবারের সঙ্গে কেন এমন হলো। আমার ভাইটি তো কারও কোনো ক্ষতি করেনি। তাহলে কেন অকালে তাকে প্রাণ হারাতে হলো। তার স্ত্রী–সন্তানকেইবা এখন কে দেখবে?”

দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটি, ক্ষতিপূরণ পাবে নিহতের পরিবার

সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার ঘটনা নিয়ে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনাটা কি নাশকতা, নাকি নির্মাণত্রুটির কারণে হয়েছে, সেটা খুঁজে বের করতে সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পাঁচ সদস্যের এ কমিটিতে থাকছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ড. এ বি এম তৌফিক হাসান, এমআইএসটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাহিদুল ইসলাম, ডিএমটিসিএল-এর লাইন-৫-এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব। উপসচিব আসফিয়া সুলতানা কমিটিতে সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।

এই কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ফার্মগেইট এলাকায় রবিববার দুপুরে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে একজন পথচারী নিহত হন। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও মানুষের ভিড়। ছবি : প্রথম আলো

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরেও ফার্মগেইটে মেট্রোরেল লাইনের পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছিল। এবারের কমিটি আগের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করবে জানিয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খামারবাড়ির পাশের ফুটপাত দিয়ে চলার সময় আবুল কালাম আজাদের ওপর ভারী ওই বস্তুটি পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

এই মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ নিয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, নিহত আবুল কালাম আজাদের দাফন-কাফনের সব ব্যবস্থা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ করবে। তার পরিবারকে ৫ লাখ টাকার অর্থসহায়তা দেওয়া হবে। পরিবারে কর্মক্ষম কেউ থাকলে যোগ্যতা অনুযায়ী তাকে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়া হবে।

ভোগান্তিতে যাত্রীরা

প্রথম আলো জানিয়েছে, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়। উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে মেট্রোরেল চলাচল করে। ডিএমটিসিএলের তথ্য বলছে, উদ্বোধনের পর থেকে গত জুন পর্যন্ত ১৫ কোটি ৭৫ লাখের মতো যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেছেন।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিয়ারিং খুলে পড়ার পর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এই বৈদ্যুতিক ট্রেন চলাচল ১১ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এবার মেট্রোরেল চলাচল প্রায় আড়াই ঘণ্টা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার পর আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত চালুর ব্যবস্থা হয়।

রবিবার দুপুরে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধের পর স্টেশন থেকে যাত্রীদের চলে যেতে দেখা যায়।

কারওয়ান বাজারের মেট্রোস্টেশনে চারটি প্রবেশপথ রয়েছে। রবিবার দুপুরে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, আনসার ও পুলিশ সদস্যরা ভেতরে অবস্থান নিয়ে সব প্রবেশপথ বন্ধ করে রেখেছেন।

কারওয়ান বাজার মোড়ের বিএসইসি ভবন সংলগ্ন প্রবেশপথের মুখে অর্ধশতাধিক যাত্রীর ভিড় দেখা গেল। যাত্রীরা কখন মেট্রোরেল চালু হবে, জানতে চাইলে আনসার ও পুলিশ সদস্যদের কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।

এ সময় তোরাব হাসান নামের এক যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, “আমি কারওয়ান বাজার মেট্রোস্টেশন থেকে মতিঝিল যেতে এসেছিলাম। এসে দেখি প্রবেশপথ বন্ধ। শুনলাম দুর্ঘটনা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কখন মেট্রো চালু হবে। কেউ বলতে পারছেন না, কবে চালু হবে।”

মেট্রোস্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্য জুয়েল আহমদ যাত্রীদের উদ্দেশে বলছিলেন, “আজকে মেট্রোরেল চালু হবে না। আপনারা অপেক্ষা না করে চলে যান।”

জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, “ফার্মগেটে দুর্ঘটনার পর সাড়ে ১২টার দিকে গেট বন্ধ করেছি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই আমরা গেট খুলব।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত