Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

সোনার দাম আরও কমল

jewelers-gold-200424-01
[publishpress_authors_box]

সোনার দাম আরও কমেছে। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এক সপ্তাহ আগে দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার ভরি ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকায় উঠেছিল। এর আগে কখনই সোনার দর অত উচ্চতায় ওঠেনি।

চার দিন পর ২২ অক্টোবর এক ধাক্কায় এই মানের সোনার দর ভরিতে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস); ভরি নামে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৫ টাকায়। ২৩ অক্টোবর এই দরে বিক্রি হচ্ছিল সোনা।

তিন দিনের মাথায় এই সোনার দাম ভরিতে আরও এক হাজার ৩৮ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাজুস; ভরি নেমেছে ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৮ টাকায়। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছে।

এ নিয়ে সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৯ হাজার ৪২৪ টাকা কমেছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ানো হচ্ছিল। আগস্টের মাঝমাঝি সময় থেকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়া শুরু হয়। তার সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারেও দাম বাড়িয়ে চলে বাজুস।

এই আড়াই মাসে দু-এক বার ছাড়া প্রতিবারই দাম বাড়িয়েছে বাজুস। ১৯ ও ২২ অক্টোবরের আগে দেশের বাজারে সোনার দাম কমানো হয়েছিল ২৭ সেপ্টেম্বর; সেদিন ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৮৯০ টাকা কমানো হয়।

১৯ অক্টোবরের আগে ১৪ অক্টোবর ২২ ক্যারেট মানের সোনার দর ভরিতে ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়ায় বাজুস; ভরি ওঠে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকায়। ১৫ অক্টোব সারা দেশে এই দরে বিক্রি হয় সোনা।

তার একদিন আগে ১৩ অক্টোবর ৪ হাজার ৬১৯ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি ওঠেছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকায়। ১৪ অক্টোবর ওই দরে বিক্রি হয় সোনার গহনা বা অলঙ্কার।

তার পাঁচ দিন আগে ৮ অক্টোবর ৬ হাজার ৯০৫ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি উঠেছিল ২ লাখ ৯ হাজার ১০০ টাকায়। তার একদিন আগে ৭ অক্টোবর ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। ৮ অক্টোবর ২ লাখ ২ হাজার ১৯৫ টাকা ভরিতে বিক্রি হয়।

৬ অক্টোবর ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৪৯ টাকা বাড়ানো হয়। ভরি ২ লাখ টাকার মাইলফলক ছাড়িয়ে ২ লাখ ৭২৬ টাকায় ওঠে।

তার দুই দিন আগে ৪ অক্টোবর বাড়ানো হয় ভরিতে ২ হাজার ১৯৩ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি ওঠে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকায়।

২৯ সেপ্টেম্বর বাড়ানো হয় ২ হাজার ৪১৪ টাকা বাড়ানো হয়; ভরি ওঠে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৪ টাকায়।

তার আগে কয়েক দফা বাড়ানোয় দেশের বাজারে সোনার ভরি রেকর্ড গড়ার পর ২৭ সেপ্টেম্বর ভরিতে ১ হাজার ৮৯০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। এতে ভরি নামে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৯ টাকায়।

২৩ সেপ্টেম্বর এই মানের সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৬৬২ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।

তার আগে টানা আট দফায় সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার ভরি ১৮ হাজার টাকার বেশি বাড়ানোর পর ১৭ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৪৭০ টাকা কমিয়েছিল বাজুস।

১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এই মানের সোনা ১ লাখ ৮৮ হাজার ১৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। দুই দিন না যেতেই ২০ সেপ্টেম্বর সোনার দাম ফের বাড়ানো হয়; ভরিতে বাড়ে ১ হাজার ১৫০ টাকা।

২১ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৭ টাকায় বিক্রি হয়। একদিন পর ২২ সেপ্টেম্বর আরও ১ হাজার ৮৯০ টাকা বাড়ানো হয়।

১ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়ানো হয়। ৩ সেপ্টেম্বর বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪ টাকা।

তার আগে গত ৩০ আগস্ট ভরিতে ১ হাজার ৬৬৮ টাকা বাড়ানো হয়। ২৬ আগস্ট বাড়ানো হয়েছিল ১ হাজার ৫০ টাকা।

এর আগে প্রায় এক মাস দেশের বাজারে মূল্যবান এই ধাতুর দাম একই জায়গায় স্থির ছিল।

বাজুসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে অস্থির ছিল দেশের সোনার বাজার। পুরো মাসে মোট ১২ বার দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। এর মধ্যে ১০ বারই বেড়েছে দাম, কমেছে মাত্র দুইবার।

সেপ্টেম্বর মাসে ২২ ক্যারেট মানের প্রতিভরি সোনার দাম বেড়েছে ২১ হাজার ৬৬ টাকা।

সেই উল্লম্ফন অক্টোবর মাসেও চলে। এই মাসে সাত দফায় ২২ ক্যারেট মানের সোনর দাম ভরিতে ২১ হাজার ৯৯৭ টাকা বেড়েছিল; দুই দফায় অবশ্য ৯ হাজার ৪২৪ টাকা কমেছে।

চলতি বছর (২০২৫ সাল) এখন পর্যন্ত মোট ৬৮ বার সোনার দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। এর মধ্যে ৪৮ বারই বেড়েছে, আর কমেছে মাত্র ২০ বার।

গত বছর (২০২৪ সাল) পুরো সময়ে দাম সমন্বয় হয়েছিল ৬২ বার।

গত ২০ আগস্ট থেকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম টানা বাড়ছিল। সেই দামের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজুসও দেশের বাজারে এই ধাতুর দাম বাড়িয়ে চলেছে। মাঝে দুই দিন নিম্মমুখী হওয়ায় দেশের বাজারেও কিছুটা কমানো হয়।

বাজুস সাধারণত রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে সোনার দাম বাড়ানো-কমানোর ঘোষণা দিয়ে থাকে। পরের দিন থেকে সারা দেশে সেই দরে সোনা বিক্রি হয়।

তবে মাঝে-মধ্যে দিনে দুই বারও সোনার দাম বাড়ানো-কমানোর ঘোষণা দিয়ে থাকে সংগঠনটি।

রববার রাত ৯টার দিকে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। দাম কমানোর ব্যাখ্যায় সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১৭ হাজার ৮২৯ টাকায় বিক্রি হবে। ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতিভরি বিক্রি হবে ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৮ টাকায়। ২১ ক্যারেটের এক ভরি কিনতে লাগবে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৯৮ টাকা।

১৮ ক্যারেটের ১ লাখ ৭০ হাজার ১৪৩ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৪১ হাজার ৪৯৬ টাকায় বিক্রি হবে।

রবিবার পর্যন্ত দেশের বাজারে ২২ ক্যারেট মানের প্রতিভরি সোনা ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৫ টাকায় বিক্রি হয়। ২১ ক্যারেটের বিক্রি হয় ২ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১ টাকায়।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৪২ হাজার ২১৯ টাকায় বিক্রি হয়।

হিসাব বলছে, তিন দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেটের সোনার দাম কমছে ১ হাজার ৩৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের কমছে ১ হাজার ৩ টাকা।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটে ৮৫১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম কমছে ৭২৩ টাকা।

বিশ্ববাজারেও কমেছে

বিশ্ববাজারেও সোনার দরে পতন হয়েছে; রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে প্রতি আউন্সের (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) দাম ৪ হাজার ২৫০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

রবিবার বিশ্ববাজার বন্ধ ছিল; ছুটির আগে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ৪ হাজার ১১৩ ডলার ৪৮ সেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর সোনার দাম হু হু করে বাড়ছিল। ২২ এপ্রিল প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৫০০ ডলার ছাড়ায়।

এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দর ৩ হাজার ৫০০ ডলারের নিচে লেনদেন হচ্ছিল। আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে বাড়তে থাকে মূল্যবান এই ধাতুর দর।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত