Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

চাকরিতে ঢোকার বয়স বাড়ালে ফল কী হবে

সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়স ৩৫ বছর করতে আন্দোলন চলছে বহুদিন ধরে।
সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়স ৩৫ বছর করতে আন্দোলন চলছে বহুদিন ধরে।
Picture of শেখ শাফায়াত হোসেন

শেখ শাফায়াত হোসেন

সরকারি চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার সুপারিশ করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে।

দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রীর এই সুপারিশে চাঙা হয়েছে। সুপারিশ যাতে বাস্তব রূপ পায়, সারা দেশের চাকরিপ্রত্যাশীরা যাতে আবারও রাজপথে সক্রিয় হয়, সে লক্ষ্যে আগামী ১১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ করার ঘোষণাও দিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করলে কি বেকার সমস্যা সমাধান হবে, নাকি বেকারের তালিকা আরও বড় হবে- তা বিশ্লেষণের দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেউ কেউ বলছেন, এতে অসম প্রতিযোগিতা শুরু হবে, আরও বাড়বে বেকার সমস্যা। আবার কর্মক্ষমতারও সবটা পাওয়া যাবে না।

সরকারি চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা প্রতিবেশী দেশ ভারতে ৩৫ থেকে ৪৫ বছর। কাতার, তাইওয়ান, ইতালিতে ৩৫ বছর। ফ্রান্সে ৪০ বছর। শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় ৪৫ বছর। সুইডেন ও কানাডায় ৪৭ বছর। আর যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ বছর।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে সরকারি চাকরির বয়স নির্ধারণের বিষয়টি শুরু হয় ব্রিটিশ ভারতে। তখন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ছিল ২৩ বছর। পাকিস্তান শাসনামলে এই সীমা বাড়িয়ে ২৫ বছর করা হয়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর এই বয়স আরও দুই বছর বাড়ানো হয়। এইচ এম এরশাদের শাসনামলে এই বয়সসীমা ২৭ থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়।

চাকরির বাজারের কী হাল

পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৪-৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে চাকরির বাজারে আসে। যেখানে প্রতিবছর সরকারি চাকরিতে কর্মসংস্থান হয় ৪-৫ হাজার প্রার্থীর।

এছাড়া সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে আরও ২-৩ হাজার কর্মসংস্থান হয়। এ ধরনের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর। এরপর আর সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করার সুযোগ থাকে না।

অবশ্য মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, উপজাতি কোটা থেকে যারা সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করে, তাদের জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৩২ বছর। সেবিকার চাকরির ক্ষেত্রে তা ৩৬ বছর এবং বিভাগীয় প্রার্থীর কোটায় ৩৫ বছর।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গত ফেব্রুয়ারিতে সংসদে জানিয়েছিলেন, সরকারে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদের বিপরীতে ৫ লাখ ৩ হাজার ৩৩৩টি শূন্য রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সোমবার ৭ মে শ্রমশক্তির যে জরিপ প্রকাশ করেছে, সে অনুসারে গত মার্চ মাস পর্যন্ত দেশে বেকার ছিল ২৫ লাখ ৯০ হাজার জন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়েছে। এতে ৩ হাজার ১৪০টি আসনের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ৩ লাখ ৩৮ হাজার।

সরকারি দপ্তরের শূন্য পদের সংখ্যা জানা গেলেও বেসরকারি খাতের চাকরির বাজার ঠিক কত বড়, তাতে ঠিক কতজন চাকরি করছে, কত পদ ফাঁকা আছে- তার সঠিক কোনও হিসাবে পাওয়া যায় না।

ধারণা করা হয়, সব মিলে বছরে নতুন শিক্ষিত বেকার যোগ হয় ৮-৯ লাখ।

আন্দোলনকারীদের কী যুক্তি

চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর। বয়স নয়, যোগ্যতাই এখানে বিবেচ্য হওয়া উচিৎ। বাংলাদেশে ৩৩ বছর আগে ১৯৯১ সালে বয়সসীমা ২৭ বছর থেকে ৩০ বছর করা হয়। যখন গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে। কিন্তু চাকরির আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়েনি।

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে ১২ বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে সাধারণ শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ নামের একটি সংগঠন, যারা আগামী ১১ মে ঢাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। 

পরিষদের মুখপাত্র শরিফুল হাসান শুভ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ২৪-২৫ বছর বয়সে স্নাতক শেষ করে বের হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক শেষ করতে ২৭-২৮ বছর বয়স হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া অনেকে অসুস্থতাজনিত কারণে সময় মতো পড়ালেখা শেষ করতে পারেন না।

তিনি বলেন, “অনেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়ে যখন দেশে ফেরেন তখন বয়স বেশি হয়ে যায়। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা সবার যোগ্যতা প্রমাণের জন্য চাকরিতে প্রবেশের আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। এটা হলে সবার জন্য একটি লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে বলে আমরা মনে করি।”

আন্দোলনকারীদের দাবি, বয়সসীমার জন্য অনেকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পেতে পরীক্ষা দিতে পারছে না।

বয়স বাড়ালে কি সমস্যাও বাড়বে

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করে দীর্ঘ দিন স্বায়ত্তশাসিত একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন মো. মেজবাউল হক। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছরের বেশি না করার পক্ষে তিনি।

মেজবাউল হক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বর্তমানে পাঠদান পদ্ধতি অনেক উন্নত হয়েছে। আগের মতো সেশন জট নেই। ফলে একজন শিক্ষার্থী ২৪-২৫ বছর বয়সের মধ্যেই স্নাতক শেষ করে চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারছে। সরকারি চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সময় পাচ্ছে ৫-৬ বছর। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৭ বছরেরও বেশি সময় পাওয়া যায়।”

নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের জন্য এটা যথেষ্ট সময় বলে মনে করেন এই সরকারি চাকরিজীবী।

মেজবাউল বলেন, “এই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩৫ বছর করা হলে নতুন গ্রাজুয়েটদের অসম প্রতিযোগিতায় পড়তে হবে। কারণ যেসব চাকুরি প্রার্থী ৮-১০ বছর ধরে পরীক্ষার পড়া পড়ছেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে থাকবেন।”

বয়সসীমা বাড়ানোর আরও কিছু নেতিবাচক দিক দেখিয়ে তিনি বলেন, “বয়সসীমা ৩০ পেরিয়ে গেলে অনেক চাকরি প্রার্থী বাধ্য হয়ে বেসরকারি চাকরিতে ঢুকে পড়েন। অথবা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হতে চেষ্টা করেন। এই বয়সসীমা ৩৫ বছর করা হলে তাদের অনেকেই সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করে থাকবেন। এতে বিশাল সংখ্যক চাকরি প্রার্থীর মূল্যবান সময় নষ্ট হবে।”

এছাড়া ৩৫ বছরে চাকরিতে যারা প্রবেশ করবেন তাদের অনেকের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ২৪ বছর ধরে সরকারি চাকরি করা মেজবাউল হক।

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ৩৫ বছরে চাকরিতে ঢুকলে চাকরির বয়সই থাকবে ২৪ বছর। তাছাড়া ৩৫ বছরে অনেকেরই বিয়ে হয়ে যাবে, সন্তানাদি হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে চাকরিতে ঢুকে তারা প্রতিষ্ঠানের কাজে পুরোপুরি মনোযোগী হতে পারবে কি না, সন্দেহ রয়েছে।

বয়স কি দুদিকেই বাড়াতে হবে

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোয় কোনও অসুবিধা দেখছেন না সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ। তিনি সেইসঙ্গে অবসরের বয়সও বাড়ানোর পক্ষপাতি।

ইকরাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি বহু দিনের। অনেকেই সময়মতো পড়ালেখা শেষ করতে পারে না। আবার অনেক সময় সরকারি চাকরির পরীক্ষায়ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেকের বয়স বেশি হয়ে যায়। ফলে বয়সসীমা বাড়লে আমি কোনও অসুবিধা দেখি না।

“তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এখন অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর সময় এসেছে। এখন দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। ফলে কোনও চাকরিজীবী যদি সুস্থ থাকে, তাহলে তাকে আরও বেশি সময় চাকরিতে রাখা যেতে পারে। অন্যান্য অনেক দেশেই এখন অবসরের বয়স বেড়েছে।” 

সরকারি চাকরি নিয়ে আকর্ষণের বিষয়ে সাবেক এই আমলা বলেন, “এখানে কেবল আর্থিক সুযোগ-সুবিধাদি বেশি- সেজন্যই সবাই সরকারি চাকরিতে আসে এমনটা নয়। মর্যাদার বিষয় রয়েছে। তাছাড়া জনগণের সেবা করার সুযোগ পাওয়া যায়। বেসরকারি চাকরিতে সেই সুযোগ নেই, তা বলব না। তবে সরকারি চাকরি করলে এই সুযোগটা বেশি পাওয়া যায়।”

সমস্যার মূল কি অন্য খানে

চাকরির বয়স বাড়ালেই বেকার সমস্যার সমাধান আসবে, তেমনটা মনে করেন না দীর্ঘদিন শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করে আসা সাবেক সাংবাদিক শরিফুল হাসান, যিনি এখন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক।

শরিফুলের মতে, বয়সসীমা মূল সমস্যা নয়, সমস্যা হলো চাকরির বয়স বাড়ানোর পদক্ষেপে তারুণ্যের শক্তি ও মেধার অপচয় ঘটবে।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “একজন চাকরিপ্রার্থী যদি ৫০ বছরেও সরকারি চাকরি করতে চায়, আমি কোনও সমস্যা দেখি না। কিন্তু সরকারি চাকরির নেশায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের মূল যে লেখাপড়া, তা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

“এভাবে কেবল চাকরির জন্য পড়ালেখা করায় আমরা তরুণদের সম্ভাবনাকে, মেধাসম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারছি না। সবচেয়ে ভালো ছেলে-মেয়েরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।”

শরিফুল বলেন, “আমাদের দেশের তরুণদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যে মানসিকতা দেখা যায়, তাতে তাদের জীবনের একটা বড় সময় চাকরির পেছনে ছুটতে গিয়ে চলে যায়। আর কিছুই তেমন করা হয় না। এটা ৩৫ বছর করা হলে আরও পাঁচটি বছর চলে যাবে।”

শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ চাঙা করেছে আন্দোলনকারীদের; তাকে ধন্যবাদও জানাচ্ছে তারা।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের প্রচলিত একটি পদ্ধতি বিসিএসের আওতায় পরীক্ষা। তার মাধ্যমে একজন চাকরিপ্রত্যাশীর সম্পূর্ণ নিয়োগ পেতে ৩-৪ বছর সময় লাগে। ৩০ বছর বয়সে কেউ এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরিয়ে চাকরি শুরু করতে হলে তার বয়স অন্তত ৩৩-৩৪ বছর হয়ে যায়। এই বয়সসীমা ৩৫ বছর করা হলে একজন প্রার্থীকে নিয়োগ পাওয়ার পর সব ধরনের প্রশিক্ষণ শেষ করে কাজ শুরু করতে ৩৭-৩৮ বছর বয়স হয়ে যেতে পারে।

২৮ বছর বয়সে একজন চাকরিতে ঢুকলে তার সক্ষমতা যত থাকবে, ৩৮ বছর বয়সী একজনের সেই সক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে কমে আসার কথা।

একজন ব্যক্তি ৩০ বছরের মধ্যে চাকরিতে প্রবেশ করলে একজন প্রার্থী অপেক্ষাকৃত তরুণ থাকে এবং প্রশিক্ষণসহ নানা ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে তার যতটা আগ্রহ থাকবে, ৩৫ বছরের বেশি বয়সের প্রার্থীর ততটা আগ্রহ থাকবে না।

এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে শরিফুল হাসান বলেন, “বর্তমানে যে পরিমাণ শিক্ষিত তরুণ চাকরির জন্য অপেক্ষা করে থাকে, এই বয়সসীমা আরও দুই-তিন বছর বাড়ানো হলে আরও বেশি সংখ্যক তরুণ অপেক্ষমাণ থাকবে। দীর্ঘমেয়াদে গিয়ে এই পরিস্থিতি সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বা শিক্ষিত বেকার বাড়ার মতো এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।”

তারুণ্যের শক্তির অপচয় রোধে বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে উপযুক্ত সুবিধা ও চাকরির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছেন তিনি।

তরুণরা যাতে উদ্যোক্তা হতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে সবার জন্য যাতে একটি সমান্তরাল ক্ষেত্র তৈরি করা যায়, সেদিকে নজর দিতেও পরামর্শ দেন তিনি।

পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে চাকরির পেছনে না ছুটে যুবসমাজ চাকরিদাতা হয়ে উঠবে বলে মনে করেন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদও।

সিদ্ধান্ত কি হচ্ছে

গত ২৯ এপ্রিল সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

শিক্ষামন্ত্রীর ওই প্রস্তাব পেয়েছেন জানিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রবিবার বলেন, এটি রাষ্ট্রের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ প্রস্তাব উপস্থাপিত হওয়ার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তিনিই সিদ্ধান্ত দেবেন।

২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “তখন তো বিয়ে-শাদি হবে, ছেলে-মেয়ে হবে, বউ সামলাতে হবে, ঘর সামলাতে হবে আর পরীক্ষা দিতে হবে। তখন তো আরও করুণ অবস্থা হবে। একটা কাজ করবার তো একটা সময় থাকে, একটা এনার্জি থাকে।”

সোমবারও সংসদে এনিয়ে কথা বলেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ। এক সংসদ সদস্যের সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করা হবে।

“তবে আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোনও সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। আগামীতে বাড়াব কি বাড়াব না, বাড়ালে ভালো হবে কি না? এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। বিষয়টি আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে দেখব।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত