Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

তথ্য অধিকার আইনের দায়িত্বশীল ব্যবহার চান প্রতিমন্ত্রী

ss-info-min-080524
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

সাংবাদিকদের কাছে তথ্য অধিকার আইনের দায়িত্বশীল ব্যবহার আশা করে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, তথ্য চাওয়া ও দেওয়ার ক্ষেত্রে পেশাদারত্ব গড়ে তুলতে হবে।

বুধবার ঢাকার দারুস সালামে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘তথ্য অধিকার আইন এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

এসময় তথ্যপ্রতিমন্ত্রী দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু খবরের অপূর্ণাঙ্গ তথ্য ও ব্যাখ্যা উপস্থাপনের সমালোচনা করেন। তার মতে, পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপস্থাপনের ঘাটতির কারণে এ ধরনের সংবাদ ভুল বার্তা দেয়।

একইসঙ্গে তিনি বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্পর্শকাতর তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ‘খুবই স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান’ উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এ ধরনের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে অনেক কৌশল নিতে হয়। অনেক সময় অনিয়ম ঘটলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়। সেই কৌশল বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত ক্ষেত্র বিশেষে গোপন রাখতে হয়। এই তথ্য আগেভাবে প্রকাশ (লিকআউট) হয়ে গেলে বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

তবে সরকারি দপ্তরগুলোকে দ্রুত সময়ে গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য সরবরাহের আহ্বান জানান আরাফাত।

তবে তিনি বলেন, “তথ্য চাওয়া এবং প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে পেশাদারত্ব গড়ে তুলতে হবে। কোন তথ্য জনসম্মুক্ষে প্রকাশ করা উচিৎ, আর কোন তথ্য প্রকাশ করা উচিৎ নয়, সে বিষয়ে যথাযথ বোঝাপড়া থাকতে হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হুমকি নয়- এমন তথ্য যা আইনে প্রকাশের সুযোগ রাখা হয়েছে, সেই তথ্য আমার অস্বস্তির কারণ হলেও সরবরাহ করতে হবে।  

“আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে তথ্য অধিকার আইনের দ্বায়িত্বশীল ব্যবহার আশা করি। তথ্য অধিকার আইনে যেসব তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেই তথ্যের মালিক জনগণ। সরকার এই তথ্যের কাস্টডিয়ান মাত্র। এই তথ্য আমরা সরবরাহ করব। আমরা যত সঠিক তথ্য যত দ্রত সময়ে সরবরাহ করব, তত গুজব বা অপপ্রচারের সুযোগ কমবে। আমরা যদি সঠিক তথ্য দিতে একটু দেরি করে ফেলি, সেই সময়টাতে গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্র তৈরি হবে।”

তথ্য অধিকার আইনকে একটি অস্ত্রের সঙ্গে তুলনা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সরকার মূলত এই আইনের মাধ্যমে নিজেকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। এইটিই একমাত্র আইন, যা জনগণ সরকারের উপর প্রয়োগ করে। সরকারি দপ্তরগুলোতে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিতে এই আইনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকতার সুবিধার্থে কারিগরি পরিভাষাগুলোর প্রকৃত ব্যাখ্যা উপস্থাপনের জন্য জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করারও আশ্বাস দেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেন সভাপতিত্বে ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরামের (ইআরএফ) সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত ওই কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম।

খুরশীদ আলম বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সাংবাদিকরা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে দেশ ও অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ করছে। আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে অব্যাহত সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। সাংবাদিকদের তথ্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে চারজন ডেপুটি গভর্নর সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য দেওয়াসহ প্রশ্নের জবাব ও ব্যাখ্যা দেবেন।”

প্রধান তথ্য কমিশনার আবদুল মালেক বলেন, “২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা এবং উপজেলায় তথ্য অধিকার আইন নিয়ে সচেতনতে বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। এই আইনের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিতে প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

“সেইসঙ্গে তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করার কারণে জনপ্রতিনিধিসহ অনেক সরকারি কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। স্বপ্রোণোদিত তথ্য প্রকাশ নির্দেশিকা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তথ্যকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। মিথ্যা-বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করে গুজব সৃষ্টি করে যাতে কোনও গোষ্ঠি অরজকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপস্থাপন করতে হবে।”

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিশক্ষণ প্রকৌশল) মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) এ কে এম আজিজুল হক ও পরিচালক (প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান) ড. মো. মারুফ নাওয়াজ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালা পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠানের উপপরিচালক নুসরাত জাবিন এবং কর্মশালা সমন্বয়ক হিসেবে উপপরিচালক আব্দুল মান্নান ও সহকারী পরিচালক নাফিস আহমেদ দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত