Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

সত্য তথ্যভিত্তিক সমালোচনা স্বাগত জানায় সরকার : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

মাইডাস সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি : পিআইডি
মাইডাস সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি : পিআইডি
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

সত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সমালোচনা করা হলে সরকার সেটিকে স্বাগত জানায়, বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

তিনি বলেন, “সরকারের সমালোচনা করা সমস্যা নয়। সত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো সমালোচনাকে সরকার স্বাগত জানায়। কিন্তু যখন পরিকল্পিতভবে অপতথ্যের প্রচার করা হয়, দেশের উন্নয়ন থামানোর জন্য সাংবাদিকতার অপব্যবহার করা হয়, অপতথ্য প্রচারের জন্য পরিবেশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেটিই সমস্যা তৈরি করে।”

বৃহস্পতিবার ঢাকার ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক এ আলোচনা আয়োজন করেছিল ইউনেস্কো, টিআইবি এবং আর্টিকেল নাইন্টিন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতা বন্ধে সরকার, পেশাদার গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজ একসঙ্গে অংশীদার হয়ে কাজ করতে পারে।”

তথ্যের অবাধ প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের সবস্তরে অপতথ্যের অস্তিত্ব বিরাজ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খুবই কার্যকর, যখন এর ব্যবহার করা হয়। অপতথ্যের বিস্তৃতির মাধ্যমে যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অপব্যবহার করা হয়, তখন এটি অত্যন্ত নেতিবাচক হয়।

“এটি সমাজে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে নেতিবাচকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং জনগণের ক্ষতি করে। এ ব্যাপারে আমাদেরক সতর্ক থাকতে হবে। অপতথ্য প্রতিরোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলছি না, সরকারের কোনো ব্যর্থতা বা ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। অবশ্যই যাবে। একই সময়ে আপনাদের পুরো চিত্রটাও দেখতে হবে। সেখানে কতটা সফলতা অর্জন হয়েছে সেটাও বলতে হবে। সেই সঙ্গে আর্থ-সামাজিক বাস্তবতাও বিবেচনায় নিতে হবে।’

সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায় বলে জানান মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

তিনি বলেন, “যখন আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলব, তখন সেটা জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে হতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যাতে কোনও গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অপব্যবহার না হয়। যখনই আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করব, তা যেন গণমাধ্যমের সঠিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে হয়, অপব্যবহারের ক্ষেত্রে নয়।”

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে অনেক ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ভারতে করতে দেওয়া হয়নি, এ জন্য বাংলাদেশের পরিবেশের ক্ষতি করে এখানে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। এনটিপিসি যারা আমাদের পার্টনার তাদের ঠেকা পড়েনি যে এখানে প্ল্যান্ট করবে। ভারতের নিজেরই প্রচুর জ্বালানি প্রয়োজন।

“আমরা নিজের স্বার্থে তাদের এনেছি। এনটিপিসি নিজে ৭০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। তাদের আরো ৭০ হাজার উৎপাদন করার সক্ষমতা আছে। ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে আমরা বিনিয়োগ এনেছি, এনটিপিসির সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছি। যেহেতু তাদের বিনিয়োগ ৫০ শতাংশ, অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি ৫০ শতাংশ লাভ নেওয়া যাবে। দিন শেষে এটা ব্যবহার করবে এদেশের মানুষ। এটা পুরোটাই বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ করে।”

প্রতিমন্ত্রী পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী না হলেও, বাংলাদেশ এর অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের অঙ্গীকার রয়েছে, তাই যারা এর বিরুদ্ধে কাজ করছে তাদেরকে সরকারের মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নেই।”

পরিবেশ সুরক্ষার পক্ষে প্রতিবেদন বা সাংবাদিকতাকে সরকার অবশ্যই স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্ত পরিষ্কার। আমরা পরিবেশকে সুরক্ষা দিতে চাই। যারা এর বাইরে অন্য কিছু করবে তাদের ব্যাপারে সাংবাদিকরা সঠিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে সেটাকে সরকার স্বাগত জানাবে। কারণ এটি পরিবেশের ব্যাপারে সরকারের কেন্দ্রীয় অঙ্গীকারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। সরকার শুধু উন্নয়নে বিশ্বাস করে না বরং টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে, যা পরিবেশগত সুরক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করে।”

প্যানেল আলোচনায় আরও অংশ নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও অফিস প্রধান সুজান ভাইজ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক।

এসময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ২০২২-২৩ মেয়াদে ১২ জন পরিবেশকর্মী নিহত হয়েছেন।”

তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের বাক-স্বাধীনতা যাতে খর্ব না হয়, সেজন্য সুশাসনের ওপর অঙ্গীকারনামা রক্ষার আহ্বান জানায় টিআইবি।

প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন আর্টিকেল নাইন্টিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম।

প্যানেল আলোচনার আগে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা করেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শামসুদ্দিন ইলিয়াস এবং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক উসরাত ফাহমিদা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত