Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

গাজায় যুদ্ধ : বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, ধরপাকড়

সোমবার নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: এএফপি।
সোমবার নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: এএফপি।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। গত সপ্তাহে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ ইয়র্ক ক্যাম্পাসে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ইয়েল ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও আরও উত্তাল হয়েছে।

বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সোমবার কানেকটিকাটের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যানহাটনের নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়েরও বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাবু টানিয়ে অবস্থান করায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার থেকে স্বশরীরে ক্লাস নেওয়া স্থগিত করা হয়েছে।

ইয়েলের বিক্ষোভকারীরা কানেকটিকাটের নিউ হ্যাভেনে ক্যাম্পাসের চারপাশে সোমবার রাস্তা অবরোধ করে সামরিক অস্ত্র উৎপাদকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানায়। ইয়েল ডেইলি নিউজ জানায়, পুলিশ ৪৫ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

সোমবার রাতে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীদের তাবুগুলো উঠিয়ে দেয় পুলিশ। সেখান থেকে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারও করা হয়।

ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি হামবোল্ড এর বিক্ষোভকারীরা একটি ভবনের প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করছে।

এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে, এমআইটি, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলিনা, বোস্টন ও টাফটস ইউনিভার্সিটি এবং এমারসন কলেজসহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জেরে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই যুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ এবং তর্ক-বিতর্ক শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। উভয়পক্ষের শিক্ষার্থীদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ ও ইসলামভীতি দুটোই বেড়েছে।

গত সপ্তাহে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হলে কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকে। এর জেরে ইয়েলসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

সোমবার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষকও বিক্ষোভে যোগ দেন।

গ্রেপ্তারের পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগও করা হচ্ছে।

রবিবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইহুদি সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তার প্রশাসন ফেডারেল সরকারকে পূর্ণশক্তি দিয়েছে।

বাইডেন বলেন, “সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আমরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে হয়রানি এবং সহিংসতার আহ্বান দেখেছি। এই নির্লজ্জ ইহুদি বিদ্বেষ নিন্দনীয় এবং বিপজ্জনক – এবং কলেজ ক্যাম্পাসে বা আমাদের দেশের কোথাও এর কোনও স্থান নেই।”

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরা বাইডেনের বিবৃতিটির সমালোচনা করে বলেছেন, আমাদের বিক্ষোভের কিছু সংগঠকও ইহুদি। আর সংবাদ মাধ্যমগুলো আমাদের প্রতিনিধিত্ব করে না শুধু এমন উত্তেজনা ছড়ানো ব্যক্তিদের খবর প্রকাশ করে আমাদের সম্পর্কে ভুল বার্তা দিচ্ছে।

তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা দৃঢ়ভাবে যেকোনও ধরনের ঘৃণা বা ধর্মান্ধতা প্রত্যাখ্যান করি।আর বহিরাগতদের বিরুদ্ধে সজাগ আছি, তারা ফিলিস্তিনি, মুসলিম, আরব, ইহুদি, কালো ও ফিলিস্তিনি সমর্থক সহপাঠী ও সহকর্মীদের মধ্যে সংহতি নষ্ট করতে চায়।

বার্নার্ড সোফোমোর লিয়া সেলিম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “এটা আমাদের কাছে খুবই স্পষ্ট যে, বাইরের লোকেরা বুঝতে পারছে না যে এই শিবিরটি কীসের।”

সেলিম গত সপ্তাহে কলম্বিয়ার লনে গ্রেপ্তার হওয়া ১৫ ইহুদি শিক্ষার্থীর একজন।

তিনি বলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্রের অপকর্মের সমালোচনা করলেই ইহুদিবিদ্বেষ হয় না।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত