Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

মাদক কারবারে বদির দুই ভাই, দাবি সিআইডির

বুধবার ঢাকার মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া মাদক মামলার অর্থ পাচার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
বুধবার ঢাকার মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া মাদক মামলার অর্থ পাচার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

মাদক মামলার অর্থ পাচার সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন- আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুর।

বুধবার ঢাকার মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। বদির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ পেলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।

কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নবম ও দশম সংসদে সদস্য নির্বাচিত হন বদি। সে সময় ইয়াবার কারবার নিয়ে সমালোচিত ও বিতর্কিত হন তিনি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনেও তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে। এসব প্রতিবেদনে মাদক কারবারিদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তাতেও তার নাম ছিল।

আব্দুর রহমান বদি

অবৈধ সম্পদের মামলায় জেলও খাটেন বদি। মামলা জটিলতায় সর্বশেষ দুই সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারেননি। দুইবারই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হন বদির স্ত্রী শাহীন আক্তার।

গত জানুয়ারিতে নির্বাচনোত্তর দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের ইয়াবা কারবারিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের নাম সংসদে প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকিও দেন আব্দুর রহমান বদি।

সিআইডির সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অর্থ পাচার মামলা তদন্ত করে মাদকের গডফাদারদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংকে থাকা অর্থ ফ্রিজ করানো হয়েছে।  

সিআইডি প্রধান বলেন, প্রাথমিকভাবে সিআইডি ৩৫টি মামলা তদন্ত করে। এতে মাদক মামলার হোতা তথা গডফাদারদের মাদক কারবারে অর্জিত ব্যাংক একাউন্টে জমা অর্থ, কেনা জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া যায়। এসব মামলায় অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৭৮.৪৪ কোটি টাকা।

তিনি জানান, সিআইডি তিনটি মামলায় গডফাদারদের ৯.১৪ একর জমি ও দুটি বাড়ি (যার মূল্য অনুমানিক ৮.১১ কোটি টাকা) ক্রোক এবং মাদক সংক্রান্ত অর্থ পাচারের বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে গচ্ছিত এক কোটি এক লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা ফ্রিজ করেছে। আরও ৩৫.১৭৩ একর জমি, ১২টি বাড়ি ও একটি গাড়ি (যার মূল্য আনুমানিক ৩৬.৮২ কোটি টাকা) ক্রোকের প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৮০ হাজার মাদক মামলা হয় জানিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা বাহক ও মাদকসেবীদের গ্রেপ্তার এবং মাদক উদ্ধার করে বিচারের আওতায় আনলেও গডফাদারদের বিরুদ্ধে কার্যত ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

তিনি বলেন, গডফাদাররা সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির প্রেক্ষিতে সিআইডি মাদক মামলা তদন্তে নতুন ডাইমেনশন এনেছে। সিআইডিই প্রথম মাদকের গডফাদারদের চিহ্নিত করতে ব্যবস্থা নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে মাদকের সব গডফাদারকে আইনের আওতায় আনা হবে।

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির নাম মাদকের কারবারে বার বার এসেছে। তিনিসহ তার পরিবার, ভাই ও স্বজনদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য মিলেছে। সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গ টেনে ৩৫ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বদি বা বদির ভাইয়ের মাদক কারবারে সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছেন কি না—জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে সিআইডিপ্রধান বলেন, “মাদক মামলার মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি।

“বদির বিরুদ্ধেও যদি আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ পাই, তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। যার বিরুদ্ধেই তথ্য-প্রমাণ পাব ধরা হবে। কক্সবাজারে পর্যায়ক্রমে মাদকের সব গডফাদারকে আইনের আওতায় আনা হবে।”

মাদক কারবার করে যারা অবৈধভাবে সম্পদ ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে, তাদের অবৈধ সম্পদ আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারি কোষাগারে চলে যাবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান সিআইডি প্রধান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত