Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

বিমানের সেই ৩ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা আসলে কার?

গত ৭ মে সন্ধ্যায় বিমানের দুবাইগামী ফ্লাইটটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম আসে। তার আগেই কাস্টমসের হাতে ধরা পড়ে ৩ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রার চালান।
গত ৭ মে সন্ধ্যায় বিমানের দুবাইগামী ফ্লাইটটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম আসে। তার আগেই কাস্টমসের হাতে ধরা পড়ে ৩ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রার চালান।
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার অবৈধ বিদেশি মুদ্রা জব্দ করেছে কাস্টমস। এরমধ্যে ছিল সৌদির ৫০০ রিয়ালের নোট ১ হাজার ৮৭৫টি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই কোটি ৮৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। একই ব্যাগে ছিল ১০০টি ১০০ মার্কিন ডলারের নোট, যার মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ লাখ টাকা। ব্যাগটিতে একটি প্যান্টও পাওয়া যায়।

গত মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় উড়োজাহাজটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম আসে। চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের দুবাইয়ে রওনা হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই কাস্টমসের হাতে ধরা পড়ে ওই চালান। উড়োজাহাজটির একটি আসনের উপরে কেবিন লাগেজ রাখার স্থানে ছিল ব্যাগটি। তবে ব্যাগটি যার, তার সন্ধান পায়নি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে সকাল সন্ধ্যা কথা বলেছে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিদেশি মুদ্রার চালানটি যিনি ধরেন সেই কর্মকর্তা কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মো. আকরাম হোসাইনের সঙ্গে।

তিনি বলেন, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা উড়োজাহাজটিতে যাই এবং তল্লাশি করি। তল্লাশির একপর্যায়ে ১৭/এ সিটের উপরে থাকা লাগেজ রাখার স্থানে একটি ব্যাগ পাই। ব্যাগটি নিয়ে বিমানবন্দরে থাকা কাস্টমস মেশিনে স্ক্যানিংয়ে ১,৮৭৫ পিস সৌদি রিয়াল, ১০০ পিস মার্কিন ডলার এবং একটি প্যান্ট পাই। কোনও পরিচিতি না থাকায় ব্যাগটি আসলে কার তা ধরা যায়নি।”

কাস্টমস কর্মকর্তা আকরাম হোসাইন বলেন, “আমরা যখন বিদেশে ভ্রমণ করি তখন লাগেজ রাখার স্থানে তো যেকোনও যাত্রী তার লাগেজটি রাখেন। ফলে পরিচিতিমূলক চিহ্ন না থাকলে সেটি আসলেই কার লাগেজ বা ব্যাগ বোঝা মুশকিল। চিহ্ন না থাকলে আপনি চাইলেই তো লাগেজের নিচের আসনের যাত্রীকে ধরতে পারবেন না। ফলে যাত্রীকে ধরা যায়নি। মু্দ্রাগুলো আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উড়োজাহাজটির ১৭/এ আসনের উপরেই এই ব্যাগ রাখা ছিল। আসনটির যাত্রী ঢাকা থেকে আসেননি। বিমানটি যখন চট্টগ্রাম অবতরণ করে তখন আসনটি ফাঁকা ছিল। এরপর তল্লাশি ও বিদেশি মুদ্রা জব্দের পর চট্টগ্রাম থেকেই সেই আসনের যাত্রী ওঠেন। উড়োজাহাজে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় ঠিক কোন যাত্রী ব্যাগটি ওই আসনের উপরে রাখেন- তা জানা সম্ভব হয়নি।

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, অবৈধ মুদ্রা পাচারকারী সেই যাত্রী ঢাকা থেকেই ওঠেন। তিনি হয়তো কয়েক আসন আগে-পরে বসেই অভিযান দেখেন।

এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমার ধারণা সিটে বসেই আমাদের তল্লাশির বিষয়টি দেখেছেন সেই যাত্রী। কিন্তু নিজের অপরাধ প্রমাণ হওয়ার ভয়ে মুখ খোলেননি। আমাদের কাছে স্বীকার করেননি।”

ওই যাত্রী ‘বড় মাপের’ চোরাচালানকারী বলে ধারণা এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার।

বাংলাদেশ বিমানের চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সলিম উল্লাহ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “১৭/১ সিটে কে ছিল, সেই যাত্রীই যে এই বিদেশি মুদ্রা এনেছেন- তা বলা যাবে না। এমন কৌশলই মুদ্রা পাচারকারীরা নেয়।”

মুদ্রাগুলো ছিল সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের। উড়োজাহাজটির গন্তব্য ছিল আরব আমিরাতের দুবাই। কেন এতো রিয়াল দুবাই নেওয়া হচ্ছিল- তা পরিস্কার নয়।

সহকারী কমিশনার মো. আকরাম হোসাইনের ধারণা, দুবাইতে হয়তো ওই যাত্রীর রিয়ালের ব্যবসা আছে। সেজন্যই সেগুলো নেওয়া হচ্ছিল।

এর আগে গত ২৬ এপ্রিল এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইটে চট্টগ্রাম থেকে উড়াল দেওয়ার আগেই কায়সার হামিদ নামের যাত্রীর কাছ থেকে ৯ হাজার দিরহাম আটক করা হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৭ লাখ টাকা।

মুদ্রা নীতিমালা অনুযায়ী একজন যাত্রী এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার মার্কিন ডলার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা বৈধভাবে বিদেশে নিতে পারে। এর বেশি নিলে তা অবৈধ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত