Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
Beta
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

মুভি রিভিউ কবে থেকে শুরু?

film final
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

নতুন কোনও সিনেমা এলেই ফেইসবুকজুড়ে বয়ে যায় যেন ‘রিভিউ’র ঝড়। তা হোক হলিউড, বলিউড অথবা ঢাকাই সিনেমা। সোশাল মিডিয়ার এ যুগে ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে ‘রিভিউ’ লেখার বেশ জনপ্রিয় একটি সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়ার আগে দর্শক চাচ্ছেন সিনেমাটি নিয়ে মোটামুটি একটা ধারণা নিয়ে যেতে। 

তাছাড়া আজকাল ওটিটির মতো বিকল্প থাকতে কে-ই বা পয়সা জলে ঢালার ঝুঁকি নিতে চায়? ‘স্পয়লার’ হজম করার ঝুঁকিটুকু নিয়েও চলতি সিনেমা সম্পর্কে দু-একটা কথা জেনে নিতে চাওয়া তাই খুবই স্বাভাবিক। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই দর্শক হয়ত ঢু মারেন পরিচিত কারও প্রোফাইলে যিনি হয়ত একটু ‘রিভিউ-টিভিউ’ দেন। 

এছাড়াও ফেইসবুকে আছে বেশ জনপ্রিয় কিছু মুভি রিভিউ পেইজ এবং গ্রুপ। যেখানে ‘মুভি লাভার’রা রিভিউ দিয়ে থাকেন। এমন কিছু পেইজ এবং গ্রুপ হলো ‘মুভি লাভারস অব বাংলাদেশ’, ‘দারুণ সব সিনেমার খবর লিংক’ এবং ‘মুভি বাজার’। এছাড়াও আছে কাছাকাছি নামের ‘মুভিখোর’, ‘মুভিখোরদের আস্তানা’ এবং ‘মুভিখোরদের আড্ডা’ র মতো ফিল্ম রিভিউ গ্রুপ।

সাথে পত্র-পত্রিকা এবং নিউজ পোর্টালগুলো তো আছেই। যেগুলোতে নিয়মিত ছাপা হচ্ছে সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত থেকে শুরু করে বিশ্বের তাবৎ ক্লাসিক সিনেমার রিভিউ।

আর ‘আইএমডি এবং ‘রটেন টমেটোজ’ এর মতো জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী ফিল্ম রিভিউ এবং রেটিং সাইট চেনেনা এমন ‘মুভিখোর’ তো মেলাই ভার।   

ফেইসবুকে যারা রিভিউ লিখছেন তাদের ভেতর সৈয়দ নাজমুস সাকিব এক পরিচিত নাম। রিভিউ ছাড়াও, তিনি অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী, ছবির কারিগরি দিকসহ নানা বিষয় নিয়ে লিখছেন। তার বিশ্লেষণমূলক বেশ কিছু লেখা ফেইসবুকে প্রশংসা পেয়েছে।

ফেইসবুকের জনপ্রিয় রিভিউ লেখকদের মধ্যে মামুনুর রশিদ অন্যতম নাম। একাধিক জাতীয় পত্রিকা এবং অনলাইনে তিনি সিনেমা নিয়ে লিখছেন।

কিন্তু কবে থেকে শুরু হলো এই ফিল্ম ‘রিভিউ’ লেখার চল? কোথায়-ই বা হলো লেখা? লিখলই বা কে?

এমন সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজব আমরা এ লেখায়। 

২০১৮ সালে আমেরিকার ক্লেয়ারমন্ট ম্যাককানা কলেজের শিক্ষার্থী অ্যাশার ওয়েইজ প্রফেসর জ্যামস মরিসনের অধীনে ২১ শতকের সিনেমার বিশ্লেষণ নিয়ে একটি থিসিস করেন। সিনেমা সমালোচনা নিয়ে করা এ থিসিসে অ্যাশার ওয়েইজ দেখান যে, প্রথম ফিল্ম রিভিউটি লেখা হয়েছিলো উনবিংশ শতকের প্রায় শেষদিকে। 

এতে জানা যায়, ১৮৯৫ সালে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’এ লুমিয়ের ভাতৃদ্বয় এর নির্মিত সিনেমা নিয়ে একটি ‘রিভিউ’ ছাপা হয়েছিল। সিনেমাটি দেখানো হয়েছিল প্যারিসে। অগাস্ট মেরি লুই নিকোলাস লুমিয়ের এবং লুই জ্যঁ লুমিয়েরে সিনেমাটি নির্মাণ করেন। 

অ্যাশারের থিসিসে আরও জানা যায় যে, ১৮৯৬ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস আরও একটি ‘রিভিউ’ ছাপে। নিউ ইয়র্কের ‘কোস্টার অ্যান্ড বায়ালস মিউজিক হল’ এ প্রদর্শিত এ সিনেমার নাম অবশ্য জানা যায়নি। এই দুটো সিনেমার রিভিউতেই গল্পের চাইতে কারিগরি দিকগুলোতেই নাকি অনেক বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। এই দুটো ‘রিভিউ’-ই কোন লেখকের নামে প্রকাশিত না হওয়ায় তাদের নাম জানা যায়নি।   

‘অনলাইন জার্নাল অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া টেকনলোজিস’ এ প্রকাশিত ‘ভারবাল ফিচারস অব ফিল্ম রিভিউজ ইন দ্য মডার্ন অ্যামেরিকান মিডিয়া ডিসকোর্স’ শিরোনামের আরেকটি গবেষণাপত্র অবশ্য বলছে ভিন্ন কথা।

এতে বলা হয়, ‘ফিল্ম রিভিউ’ র ইতিহাস শুরু হয়েছে ১৯০৭ সালে আমেরিকার ‘ভ্যারাইটি’ পত্রিকার মধ্য দিয়ে। এতে অবশ্য সুনির্দিষ্ট করে কোনও সিনেমা কিংবা লেখকের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

আমেরিকান লেখক, সাংবাদিক এবং গবেষক জেরি রবার্টস তার ‘দ্য কমপ্লিট হিস্ট্রি অব আমেরিকান ফিল্ম ক্রিটিসিজম’ এ লিখেছেন, ‘প্রথম রিভিউটি লেখা হয় নিউ ইয়র্ক টাইমসে’। তার দাবির সাথে অ্যাশারের দাবি কিছুটা মিলে যায়। তিনিও রিভিউ লেখকের কোনও সন্ধান দিতে পারেননি। জেরি যদিও ১৮৯৬ সালে ‘কোস্টার অ্যান্ড বায়ালস মিউজিক হল’ এ প্রদর্শিত সেই সিনেমাটির কথাই বলেছেন। 

ফিল্ম রিভিউর এই ঠিকুজি মিলিয়ে আমাদের অ্যাশার ওয়েইজের দেওয়া তথ্যেই আস্থা রাখতে হচ্ছে। আমরা ধরে নিতেই পারি যে লুমিয়ের ভাইদের সেই সিনেমার উপর লেখা রিভিউই ফিল্ম ইতিহাসের প্রথম রিভিউ। ১৮৯৫ সালে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এ যেটি প্রকাশিত হয়েছিল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত