Beta
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

প্রথম বারেই চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বলী বাঘা শরীফ

জব্বারের বলীখেলায় টানা ১১ মিনিট ধরে চলে বাঘা শরীফ ও মোহাম্মদ রাশেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
জব্বারের বলীখেলায় টানা ১১ মিনিট ধরে চলে বাঘা শরীফ ও মোহাম্মদ রাশেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

ঘড়িতে সময় যখন বিকাল সাড়ে ৪টা, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে শুরু হয় বাঘা শরীফ ও মোহাম্মদ রাশেদের মধ্যে লড়াই। টানা ১১ মিনিট ধরে চলে প্রতিযোগিতা। একই জেলা, একই এলাকার বাসিন্দা হলেও খেলার মাঠে কেউ কাউকেই ছাড় দিতে রাজি হননি।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর এক পর্যায়ে হার মানেন মোহাম্মদ রাশেদ। বিজয়ী ঘোষণা করা হয় বাঘা শরীফকে। প্রথমবার অংশ নিয়েই বিজয়ীর মুকুট পরলেন তিনি। 

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসর বসেছিল লালদীঘির মাঠে। চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দুজনই কুমিল্লার হোমনায়। তৃতীয় হয়েছেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা। এই নিয়ে টানা তিনবার তৃতীয় হলেন তিনি।

এবার শক্তির লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ৮৪ বলী। অন্য রাউন্ডগুলো আগেই শেষ হয়েছে, বাকি ছিল কেবল চ্যাম্পিয়ন রাউন্ডের খেলা, যা হয় বৃহস্পতিবার।

দুপুর হতেই চূড়ান্ত পর্বের এই লড়াই দেখতে নামে মানুষের ঢল। লালদিঘীরর মাঠটি ২টা বাজতে না বাজতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কাছ থেকে ভালোভাবে লড়াই উপভোগের আশায় সময়ের আগেই নিজের অবস্থান নিতে পৌঁছে যান তারা।

গত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কুমিল্লার বাসিন্দা শাহজালাল বলী। চারবার শিরোপা জেতার পর এবার শিষ্যদের সম্মানে লড়াইয়ে নামেননি তিনি।

এছাড়া ১১৩তম আসরের চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন বলী গত বছর হয়েছিলেন রানার আপ। এবার লড়াইয়ের জন্য নিবন্ধন করলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে নামতে পারেননি তিনি।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

শক্তির লড়াইয়ে জয় পেয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসরে শক্তির লড়াইয়ে জয় পেয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

১৯০৯ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে লড়তে দেশের তরুণ-যুবকদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে বলী খেলার প্রচলন করেছিলেন চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার বাসিন্দা আবদুল জব্বার সওদাগর। তার নামেই একশ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে জব্বারের বলীখেলা।

এই আয়োজনকে ঘিরে প্রতিবছরই নগরীতে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলা।

কোতোয়ালী থানা মোড় থেকে জেল রোড, লালদীঘি হয়ে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল ও সিনেমা প্যালেস মোড় পর্যন্ত আশপাশের প্রায় দেড় বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে বসে মেলা। প্রথমদিন থেকেই মেলায় চলছে জমজমাট বেচাকেনা। মূলত ঘরোয়া ব্যবহার্য জরুরি জিনিসপত্র থেকে শুরু করে নানা সৌখিন সামগ্রীর বিক্রি হয় এই মেলায়।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসেন বিক্রেতারা, চট্টগ্রামের ক্রেতারাও সারাবছর অপেক্ষায় থাকেন এই আয়োজনের।

মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী সকাল সন্ধ্যাকে জানান, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকেও পণ্য নিয়ে অন্তত দুই হাজার বিক্রেতা মেলায় এসেছেন। প্রচণ্ড গরম থাকলেও বেচাকেনা কিংবা ক্রেতা সমাগমের কমতি নেই মেলায়।

বুধবার শুরু হওয়া এই মেলা চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত