Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

ঋণের সুদহার ঠিক করবে ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
বাংলাদেশ ব্যাংক। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

ঋণের সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে, ঋণের চাহিদা ও ঋণযোগ্য তহবিলের জোগান সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদহার নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করে। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা অনুসরণের মাধ্যমে ব্যাংক ঋণের সুদহার সম্পুর্ণরূপে বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে ঋণের সুদহার নির্ধাণের ক্ষেত্রে ‘সিকস মানথস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল’ বা স্মার্ট সুদহার প্রত্যাহার করা হলো।

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুদহার নির্ধারণের জন্য গত বছরের জুলাই মাস থেকে স্মার্ট ভিত্তিক সুদহার নির্ধারণের পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই স্মার্ট হারের সঙ্গে নির্ধারিত মার্জিন যোগ করে ব্যাংক খাতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হয়ে আসছিল। প্রতি মাসের শুরুতে স্মার্ট রেট ও মার্জিনের আলাদা ঘোষণাও দিত ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

চলতি মে মাস থেকে ওই পদ্ধতিতে আর সুদহার নির্ধারণ করা হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো ঋণের খাতভিত্তিক সুদের হার ঘোষণা করবে এবং তুলনামূলক ঝুঁকি বিবেচনায় গ্রাহকভেদে ঘোষিত হার থেকে ১ শতাংশ কম বা বেশি হারে ঋণ দিতে পারবে।

প্রতিমাসের ৭ তারিখের মধ্যে ওই মাসের ঘোষিত সুদহার বিবরণী ব্যাংকগুলোর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপলোড চলমান রাখতে হবে।

ঋণ বিতরণের জন্য গ্রাহকের নামে যখন মঞ্জুরীপত্র তৈরি করা হবে, তখন ওই ঋণের সুদহার পরিবর্তনশীল না অপরিবর্তনশীল তা উল্লেখ করতে হবে ব্যাংকগুলোকে। এতে গ্রাহক নিশ্চিত থাকতে পারবে, ঋণ নেওয়ার পর সুদহার আর বাড়বে কি, বাড়বে না।

এ ক্ষেত্রে ঋণের সুদহার পরিবর্তনশীল হলে তা বছরে সর্বোচ্চ কতবার বাড়ানো যাবে এবং এই বৃদ্ধি কত শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, তা অবশ্যই মঞ্জুরীপত্রে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন জারি করা নির্দেশনায়।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ঋণ সময়মতো পরিশোধ না করা হলে সর্বোচ্চ ১.৫ শতাংশ দণ্ড সুদ আরোপ করতে পারবে ব্যাংক। এক্ষেত্রে যে সময়ের জন্য ঋণটি মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, ওই সময়ে চলমান বা তলবী ঋণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ঋণস্থিতির ওপর এবং মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ওপর এই দণ্ড সুদ আরোপ হবে।

ব্যাংক ঘোষিত সুদহারের অতিরিক্ত কোনও সার্ভিস চার্জ আরোপ বা আদায় করা যাবে না বলেও উল্লেখ করা হয় সার্কুলারে।

ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোও এই নির্দেশনা অনুযায়ী বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা নির্ধারণ করতে পারবে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার ঘোষিত কোনও প্রণোদনা তহবিলের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ওই তহবিলের জন্য প্রণীত নীতিমালা প্রযোজ্য হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত সবশেষ এপ্রিল মাসের স্মার্ট রেট ছিল ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ মার্জিন যোগ করতে পারতো ব্যাংকগুলো। ফলে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ হার ছিল ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

নীতি সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ল

বুধবার নীতি সুদহার বাড়ানোরও ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এক রাতের জন্য রেপো নীতি সুদহার ৮ শতাংশ রয়েছে। এখন থেকে এই সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হলো।

এছাড়া নীতি সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ক্ষেত্রে সুদহার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে এবং নীতি সুদহার করিডরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হবে।

নীতি সুদহার বৃদ্ধির অর্থ হলো, ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত সুদ দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ করতে হবে। ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে ঋণ দেয়, তার সুদহার বাড়বে।

নীতি সুদহার বেশি থাকলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে নিরুৎসাহিত হয়। মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত