Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধের বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত

বুয়েটে বিক্ষোভ থেকে দাবি ওঠে- ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধই রাখতে হবে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
বুয়েটে বিক্ষোভ থেকে দাবি ওঠে- ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধই রাখতে হবে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

পাঁচ বছর আগে যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তার কার্যকারিতা স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।

বুয়েট শিক্ষার্থী এক ছাত্রলীগ নেতার রিট আবদনে সোমবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।

২০১৯ সালে জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে আদালত রুলও দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

এদিন রিট আবেদনটি করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রাব্বি রাহিম, যাকে রাজনৈতিক কার্যক্রমের জন্য সম্প্রতি শাস্তি দিয়েছিল বুয়েট প্রশাসন।

আর সব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো দেশের প্রকৌশল শিক্ষার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটেও ছাত্র সংগঠনগুলোর সক্রিয়তা ছিল। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ইউকসু) ছাত্র সংগঠনের পরিচয়েই প্যানেল হতো।

তবে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বুয়েট প্রশাসন।

ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর পিটুনিতে নিহত হয়েছিলেন আবরার। সেই হত্যাকাণ্ডের মামলায় সংগঠনটির ২০ নেতা-কর্মীর মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হয়।

বুয়েটে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ রাখতে হবে।

গত পাঁচ বছর ধরে বুয়েটে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চললেও সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েটে উপস্থিতি নতুন করে আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়।

গত বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে গেলে তার প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ।

আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার পাশাপাশি ছাত্রলীগ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাওয়া বুয়েট শিক্ষার্থীদেরও শাস্তির দাবি তোলে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েট প্রশাসন পুরকৌশলের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজের হলের সিট বাতিল করে। তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যায় দুদিন। উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারের আশ্বাসে রবিবার থেকে কর্মসূচি বন্ধ রাখে।

এদিকে ইমতিয়াজের সিট বাতিলের প্রতিবাদ এবং বুয়েটে রাজনীতির পথ অবারিত করার দাবিতে রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। পরে তারা মিছিল নিয়ে বুয়েট ঘুরে আসে।

রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের সমাবেশে ইমতিয়াজ রাব্বি রাহিম (সবার সামনে বসা)

ছাত্রলীগ দাবি করছে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সুযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর এবং জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির আস্তানা গেঁড়েছে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আন্দোলনও তাদের মদদে হচ্ছে।

অন্যদিকে বুয়েটের আন্দোলনকারীরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট কোনও সংগঠনের বিপক্ষে নয়, সব রাজনৈতিক তৎপরতাই বিপক্ষে। শিবিরের প্রতিও তাদের কোনও সমর্থন নেই।

দুই পক্ষের পাল্টপাল্টি চলার মধ্যে রবিবার হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ইমতিয়াজ রাব্বি। তার সঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনও আদালতে যান।

আদালতের আদেশের পর সাদ্দাম সাংবাদিকদের বলেন, এখন সাংবিধানভাবে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি বুয়েটে আবার শুরু হবে বলে তিনি আশা করছেন। তারা নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির পক্ষে।

আদালতের আদেশের বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বুয়েট প্রশাসনের কোনও বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত