Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

চিড়িয়াখানায় ঈদ বিনোদনে বিষাদের ছায়া

ss-mirpur zoo-11-4-24
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বিকাল থেকেই ঢাকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বাড়তে থাকে মানুষের সমাগম।

রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জাতীয় চিড়িয়াখানা। প্রতি ঈদেই এখানে ব্যাপক মানুষের সমাগম থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

ঈদের দিন সকাল থেকে এই বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের ঢল নামে। বিকালে তাতে কিছুটা ভাটা পড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে। ঈদের দিন বেলা ১১টায় মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় হাতির আক্রমণে এক মাহুতের ছেলের মৃত্যু হয়। এরপরই বদলে যায় পরিস্থিতি।

সরেজমিনে বিকাল তিনটার দিকে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের মধ্যে একরকম আতঙ্ক ছড়িয়ে আছে। সেখানকার একজন কিউরেটর সকাল সন্ধ্যাকে জানান, সকালের ওই ঘটনার পর সবার মধ্যে চাপা ভয় কাজ করছে, অভিভাবকরা তাদের শিশুদের নিয়ে চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। অনেকে আবার গেট থেকেও ফিরে যান।

এমন আতঙ্ক ছড়ানো পরিস্থিতিতে গত বছরের তুলনায় এবার দর্শনার্থীর সংখ্যা কম ছিল বলে জানান সেখানকার টিকিট বিক্রেতা আবিদুর রহমান।

মিরপুর চিড়িয়াখানার সাপ্তাহিক ছুটি রবিবার, তবে ঈদের পরের রবিবার চিড়িয়াখানা খোলা রাখা হবে। এ কয়দিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিড়িয়াখানা খোলা থাকবে বলেও জানান সেখানকার কিউরেটর।

অন্যদিকে কয়েক বছর ধরে শাহবাগের জাতীয় শিশু পার্ক বন্ধ থাকায় বিভিন্ন দিবসে শিশুদের ভিড় বেড়েছে শ্যামলীর শিশুমেলায়। বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন পরিচালনা করছে এই পার্ক। শিশুদের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে সেখানকার বিভিন্ন রাইড রঙ করে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। ৪০টির মতো রাইডের মধ্যে পরিবারের সবার চড়ার উপযোগী আছে ১৭টি। বাকিগুলো শিশুদের।

শিশুমেলার কোনও সাপ্তাহিক ছুটি নেই জানিয়ে এর ব্যবস্থাপক রাজিবুল সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ঈদের জন্য নতুন সময়সূচি করা হয়নি। তবে দর্শনার্থীদের চাপ বাড়লে তখন সময় বাড়ানো বা কমানোর চিন্তা করা হবে।

শিশুমেলায় ১৭টি ফ্যামিলি রাইড ও ৭০টি কিডস রাইড আছে। এ ছাড়াও শিশুমেলার ভেতরে খাবারের দোকান আছে। শিশুদের জন্য স্বপ্নপুরী নামে একটি রাইড রয়েছে, যেটি অন্যান্য রাইডের থেকে বেশ জনপ্রিয়।

স্বপ্নপুরী রাইডে চড়ার জন্য মেয়েকে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন নাখালপাড়া থেকে আসা লিটন মিয়া। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “আমি দুই বছর পর আমার মেয়েকে নিয়ে এভাবে ঘুরতে বের হলাম। শিশুমেলার আগে আমি শাহবাগ, শাহাবুদ্দিন পার্ক এসব জায়গায় আজ ঘুরেছি। আমার মেয়েটা অনেক খুশি। এদেরকে তো এভাবে নিয়ে কখনও বের হওয়া হয় না। এতোদিন পর বের হতে পেরে নিজেরও ভালো লাগছে। ”

“শিশুমেলাসহ অন্যান্য যেসব জায়গাতে গিয়েছি কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। রাস্তাঘাট ফাঁকা আছে, খুব সহজেই আসা-যাওয়া করতে পারছি। ঢাকার রাস্তাঘাট সবসময় এমন ফাঁকা থাকলে খুব ভালো হতো।”

এদিকে শিশুদের জন্য রাইড ওয়ান্ডার ল্যান্ডের স্টাফ শহীদ আফ্রিদি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “শুধুমাত্র শিশুদের জন্য যেসব রাইড সেখানে চাপ কম। ঈদে চাপ থাকে অনেক তাই আলাদা করে অনেক স্টাফ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমিও তাদের একজন। সারাদিনে প্রায় ৫ শতাধিক শিশুকে রাইড সাপোর্ট দিয়েছি। এই সংখ্যাটা অনেক কম। তবে বড় রাইড যেগুলো, নাগরদোলা, ড্রাগন রোলার কোস্টার এগুলোতে হাজার হাজার দর্শনার্থী উঠেছে।”

টিকিট বিক্রেতা শারমিন আক্তার সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, সকাল থেকেই মানুষ আসছে। ১০০ টাকা দিয়ে এন্ট্রি ফি দিয়ে দর্শনার্থীরা যাচ্ছেন ভিতরে। আমরা হাজার হাজার টিকিট বিক্রি করেছি, কিন্তু ঠিক কত হাজার হয়েছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না কারণ আমরা এগুলো একেবারে শেষে হিসাব করি। তবে গতবারের তুলনায় সংখ্যাটা খানিকটা কম বলে মনে হয়েছে। প্রায় ৬ দিন যেহেতু টানা ছুটি, দর্শনার্থী কম হওয়ার এটা একটা কারণ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এছাড়াও রাজধানীতে প্রিয়জনদের সঙ্গে মনোরম পরিবেশে সময় কাটানোর আরেকটি জায়গা হাতিরঝিল। ঝিলের মনোরম দৃশ্য ও দৃষ্টিনন্দন সেতুগুলোতে অনেকেই ঈদের দিন বিকালে সময় কাটাতে আসেন। এছাড়াও ধানমন্ডির সংসদ ভবন ও রবীন্দ্র সরোবরেও দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। একই সঙ্গে টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যানসহ খোলামেলা সব জায়গায় ঘুরে বেড়িয়ে ঈদ উদযাপন করছেন ঢাকাবাসী। নভোথিয়েটার, বিজ্ঞান জাদুঘর, সামরিক জাদুঘর, বিমান জাদুঘরেও অনেক মানুষের আনাগোনা দেখা যায়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত