Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব

সংসদ
জাতীয় সংসদ ভবন
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়বে উৎসবসহ অন্যান্য ভাতাও।

সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ১০ হাজার টাকা বাড়ানোর পাশাপাশি যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। প্রস্তাবে বিশেষ দিনের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দ্বিগুণ করার কথা বলা হয়েছে।

কমিটি চায় আগামী ১ জুলাই থেকে এই নতুন ভাতা কার্যকর হোক।

বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এসব কথা জানা গেছে।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা হয়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাবগুলেই তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বর্তমান ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার করার প্রস্তাব দেয় কমিটি। ভাতা বাড়ানোর এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে আগামী  অর্থ বছরে (২০২৪-২৫) অতিরিক্ত দুই হাজার ৮৭০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের বর্তমানে যে হারে ভাতা দেওয়া হয় তাতে চলতি (২০২৩-২৪) অর্থ বছরে সরকারের ব্যয় হবে পাঁচ হাজার ৬৯৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত হারে ভাতা বাড়লে নতুন করে দুই হাজার ৮৬৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা লাগবে। সব মিলিয়ে আগামী অর্থ বছরে দরকার পড়বে আট হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, চলতি অর্থ বছরে দুই লাখ সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক ২০ হাজার টাকা হারে সম্মানী বাবদ ৪ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে মাসিক সম্মানী ৩০ হাজার করা হলে এ খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের দরকার হবে দুই হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

এ আগে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের বোর্ড সভায় প্রধানমন্ত্রী ১২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ওই বছর জুলাই থেকে ২০ হাজার টাকা হারে ভাতা দেওয়া শুরু হয়।

দুই লাখ সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য (শহীদ পরিবার, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত) ১২ হাজার ৫৮০ জন ক্যাটাগরি ভেদে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা হারে উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন।

এক্ষেত্রে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসব ভাতা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যার জন্য দরকার হবে ২০০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

চলতি অর্থ বছরে ৯৮ হাজার ৫৭০ জন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধার অনুকূলে ৫ হাজার হারে বিজয় দিবসের বিশেষ ভাতা বাবদ ৭০ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী এ ভাতা দ্বিগুণ হলে অতিরিক্ত ২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা দরকার পড়বে।

স্বাধীনতা দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোনও বিশেষ ভাতা দেওয়া হয়না। নতুন করে এ দিবসে ১০ হাজার টাকা হারে ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে আগামী অর্থ বছরে ৯৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার দরকার পড়বে।

মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের ওয়ারিশ মিলে মোট উপকারভোগী দুই লাখ ১২ হাজার ৫৮৫ জনকে দুই হাজার টাকা হারে চলতি অর্থ বছরে নববর্ষ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।। যা আগামী অর্থ বছরে পাঁচ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এজন্য ৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা অতিরিক্ত দরকার হবে।

বর্তমানে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার উপকারভোগী ৫৮২ জন। বীরশ্রেষ্ঠ ৩০ হাজার, বীর উত্তম ২৫ হাজার, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক ২০ হাজার টাকা হারে ভাতা পাচ্ছেন। এজন্য চলতি অর্থ বছরের বরাদ্দ ১৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। নতুন প্রস্তারে বীর উত্তমদের ৪০ হাজার, বীর বিক্রম ৩৫ হাজার ও বীর প্রতীকদের ৩০ হাজার টাকা মাসিক সম্মানী দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যার জন্য অতিরিক্ত ৮ কোটি ২২ লাখ টাকা লাগবে।

শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাটাগরি ভিত্তিতে ২৭ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা সম্মানী পান। এজন্য চলতি অর্থ বছরের বরাদ্দ রয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা।

কমিটির প্রস্তাবে সম্মানি বাড়িয়ে ক্যাটাগরি ভিত্তিতে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি  বাস্তবায়িত হলে লাগবে অতিরিক্ত দরকার হবে ৭০ কোটি টাকা।

দাফন, সৎকার, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও লাশ পরিবহনের ব্যয় বাবদ সর্বনিম্ন ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৯০০ টাকা দেওয়া হয়। এ খাতে সর্বনিম্ন ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ও ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা যেহেতু বাজেট সংশ্লিষ্ট তাই এই মুহূর্তে এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।”

তবে বৈঠকের পর সংসদ সচিবালয় থেকে যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে সেখানে বলা হয়, “শহীদ পরিবার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী বৃদ্ধির প্রস্তাব সরকারের বিবেচনাধীন বলে কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত