Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

বার্নাব্যুর রোমাঞ্চ জিতে ফাইনালে রিয়াল

final
Picture of ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রিয়াল ২ : ১ বায়ার্ন

(দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলে অগ্রগামিতা রিয়ালের)

প্রবাদই আছে, ইউরোপে মৃত্যু আসে সাদা বাসে চড়ে। ১৪বারের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী রিয়াল মাদ্রিদের দাপট বোঝাতে বলা হয় এটা। কথাটা সত্যি হলো আরও একবার। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ বেলার হার না মানার অদম্য দৃঢ়তায় বায়ার্নকে ২-১ গোলে হারাল রিয়াল। দুটি গোলই ৮১ মিনিটে বদলি হয়ে নামা ফরোয়ার্ড হোসেলুর। গোল দুটি করেছেন তিন মিনিটের ব্যবধানে।

সেমিফাইনালের দুই লেগ মিলিয়ে ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্নকে ৪-৩ ব্যবধানে পেছনে ফেলল রিয়াল। ১ জুন ওয়েম্বলির ফাইনালে রিয়াল খেলবে পিএসজিকে হারানো জার্মান আরেক দল বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সঙ্গে। ১৫তম শিরোপার জন্য জয় করতে হবে ওয়েম্বলি।

সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আগে মিউনিখের ক্লাবটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে সবশেষ ৮ ম্যাচে হারেনি রিয়াল। বার্নাব্যুতে তাদের সঙ্গে হারেনি সবশেষ ৭ ম্যাচে। সেই ধারাটাই অব্যাহত থাকল বার্নাব্যুর পাগুলে ম্যাচে। ডেভিসের গোলে বায়ার্ন এগিয়ে গেলেও ৮৮ মিনিটে সমতা ফেরায় রিয়াল।

জোড়া গোল করেছেন হোসেলু। ছবি : এক্স

এভাবে বারবার প্রত্যাবর্তনের গল্প লিগে ২০২২ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল তারা। এবারও ধারাটা ধরে রাখল ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে হোসেলুর গোলে। সুপার সাব হোসেলু জোড়া গোল করে আরও একবার ফাইনালে নিয়ে গেলেন রিয়ালকে।

এবার শেষ ষোলতে লিপজিগের সঙ্গে ড্র করেছে ১-১ গোলে। এরপর  কোয়ার্টার ফাইনালে ৩-৩ গোলে ড্র ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে। তবে ব্যর্থতাটা কাটিয়ে সেমিফাইনালে বার্নাব্যুতেই বায়ার্ন বাধা পার হল রিয়াল।

শুরুতে দুই দলই খেলছিল উইং নির্ভর ফুটবল। তাতে যথেষ্ট জায়গা তৈরি হচ্ছিল মাঝমাঠে। ১২ মিনিটে দারুণ দুটো সুযোগ নষ্ট হয় রিয়ালের। দানি কারভাহালের পাস জামাল মুসিয়ালার পায়ের ফাঁক দিয়ে আসে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের কাছে।

ভিনিসিয়ুসের প্রথম টাচ, টার্ন ও শট-কিন্তু বল অবিশ্বাস্যভাবে ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ফিরতি বলে রোদ্রিগোর শটে দুর্দান্ত সেভ গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ারের। বার্নাব্যুর দর্শকদের বিশ্বাসই হচ্ছিল না কয়েক সেকেন্ডের দুটো মিস!

প্রথম লেগে শুরুর ২০ মিনিটে একপ্রকার ঘুমিয়ে ছিল রিয়াল। ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠে প্রথম ২০ মিনিটে বায়ার্ন মিউনিখের ঘুম কেড়ে নেওয়া ফুটবল খেলেন ভিনিসিয়ুস-রোদ্রিগো-বেলিংহামরা। বায়ার্ন খেলছিল প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবল। কয়েকটা সুযোগও নষ্ট করেছেন হ্যারি কেইন। ২৬তম মিনিটে চোট পাওয়া সার্জ জিনাব্রির বদলে নামেন আলফনসো ডেভিস।

ডেভিসের গোলে ৬৮ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল বায়ার্ন। ছবি : এক্স

বিরতির আগে ৫৮ শতাংশ বলের দখল নিয়ে খেলা রিয়াল পোস্টে শট নিয়েছিল ৮টি, বায়ার্ন সেখানে কেবল ২টি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দানি কারভাহালের ফেরাটা স্বস্তি দিয়েছে আনচেলেত্তিকে। প্রথম লেগে উইং থেকে আক্রমণ শাণিয়ে রিয়ালকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিল বায়ার্ন। কারভাহালের জন্য দ্বিতীয় লেগে সেটা পারেনি তারা।

৪০তম মিনিটে আবারও জার্মান দলটির ত্রাতা নয়ার। ভিনিসিয়ুস বক্সে বল পাঠিয়েছিলেন রোদ্রিগোকে। কিন্তু এই ব্রাজিলিয়ান বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি। তারপরও সেই বল বাঁক নিয়ে জড়াতে পারত জালে। ঝাঁপিয়ে সেই বল ঠেকান নয়ার।

বিরতির পর ভিনিসিয়ুসের গতি আর ড্রিবলে বারবার খেই হারাচ্ছিলেন জোশুয়া কিমিচ। বিরতির পর প্রথম ১০ মিনিটে চারবার কিমিচকে বোকা বানান ভিনিসিয়ুস। ৫৫তম মিনিটে আরও একবার  জাদু দেখিয়ে বাম প্রান্ত থেকে বক্সে রোদ্রিগোকে বল পাঠান ভিনিসিয়ুস। সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি রোদ্রিগো।

৬০তম মিনিটে টানা দুটি সেভ করেন নয়ার। প্রথমবার ঠিকান বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া রোদ্রিগোর বাঁকানো ফ্রিকিক। দ্বিতীয়বার কয়েকজনকে কাটিয়ে নেওয়া ভিনিসিয়ুসের শট ফেরান অবিশ্বাস্য দক্ষতায়।

বায়ার্ন অবশ্য একেবারে কোণঠাসা হয়ে ছিল না। পাল্টা আক্রমণ শানাচ্ছিল তারাও। ৫৩ মিনিটে হ্যারি কেইন আর ৬৬ মিনিটে জামাল মুসিয়ালার শট ঠেকান গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন। তবে ৬৮ মিনিটে পারেননি আর। হ্যারি কেইনের অ্যাসিস্টে বাম প্রান্ত দিয়ে ইনসাইড কাটে আলফনসো ডেভিসের রকেট শটে কিছুই করার ছিল না লুনিনের। চ্যাম্পিয়নস লিগে এটাই প্রথম গোল তার।

৭১ মিনিটে ডেভিসের পায়ে বল লেগেই জড়িয়েছিল জালে। তবে ভিএআরে বাতিল হয় রিয়ালের সেই গোল। আক্রমণ শুরুর  সময় নাচো ফাউল করেছিলেন কিমিচকে। ৮৩ মিনিটে  কর্নার থেকে আসা বলে কিম মিন জায়ের হেড ক্রসবারে না লাগলে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত বায়ার্ন।

রিয়াল সমতায় ফিরে ৮৮ মিনিটে হোসেলুর গোলে। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সাদামাটা শটে সাধারণ সেভ করতে পারতেন নয়ার। কিন্তু বল যায় তার হাত ফসকে। সামনে থাকা হোসেলু নষ্ট করেননি সুযোগটা। ৮১ মিনিটে বদলী হয়ে নেমেছিলেন তিনি।

ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হোসেলুই। আন্তোনিও রুডিগারের পাসে ছয় গজ বক্সের সামনে থাকা এই ফরোয়ার্ড বল জড়ান জালে। বায়ার্ন অফসাইডের আবেদন করলেও ভিএআরে বাতিল হয়নি গোল।

ইনজুরি টাইমের ১৩তম মিনিটে বল জালে পাঠিয়েছিলেন ডি লিখট। তবে অফসাইডের জন্য গোল দেননি রেফারি। তাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল যথেষ্ট।

চার ম্যাচ হাতে রেখে কদিন আগে লা লিগার শিরোপা নিশ্চিত করেছে রিয়াল। সেখানে বায়ার্ন টানা এক দশকেরও বেশি সময় পর হারিয়েছি বুন্দেসলিগা। বিদায় নিয়েছে জার্মান কাপ থেকেও। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়ে ২০১২ সালের পর মৌসুম শেষ হল ট্রফি না পাওয়ার হতাশায়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত