Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

রেবেল গ্রেপ্তারে উচ্চারণ ব্যান্ডকে জড়িয়ে খবরে ক্ষুব্ধ আজম খান পরিবার

azam-khan-280424-01
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

কোটি টাকার মাদক ক্রিস্টাল মেথ বা আইসসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন সংগীতশিল্পী এনামুল কবির রেবেল। সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদনে রেবেলকে উচ্চারণ ব্যান্ডের সদস্য বলা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন উচ্চারণ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা পপগুরু আজম খানের পরিবার।

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আজম খানের মৃত্যুর পর উচ্চারণ ব্যান্ডের কোনও কার্যক্রমই আর নেই।

এভাবে ভুল তথ্য দিয়ে খবর পরিবেশন করে আজম খান ও উচ্চারণ ব্যান্ডের ‘মানহানি’ চলতে থাকলে তারা মামলা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শুক্রবার রাতে ঢাকার রামপুরা এলাকা রেবেলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। 

পুলিশের তথ্য বলছে, মাদক কারবারি মো. লিটন ওরফে লিটু ওরফে ভাইজানের হয়ে কাজ করেন রেবেল। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাদক কারবারে জড়িত তিনি।

অভিযানে এক কেজি আইস উদ্ধারের কথাও জানায় পুলিশ; যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।

এই খবর তুলে ধরতে গিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যম শিরোনামে এবং মূল প্রতিবেদনে রেবেলকে উচ্চারণ ব্যান্ডের সদস্য বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। অনেক খবরের শিরোনাম ছিল ‘কোটি টাকার আইসসহ উচ্চারণ ব্যান্ডের রেবেল গ্রেপ্তার’।

বিষয়টি নজরে আসায় আজম খানের পরিবারের পক্ষ থেকে এরশাদুল হক টিংকু ক্ষোভ প্রকাশ করেন, যিনি পপগুরুর গানের কপিরাইট নিয়ে কাজ করছেন।

বন্ধুদের নিয়ে ১৯৭২ সালে উচ্চারণ ব্যান্ড গড়ে তোলেন মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান  ওরফে আজম খান। বন্ধু নিলু, মনসুর এবং সাদেককে নিয়ে গান করেন। উচ্চারণ ব্যান্ড ও আজম খানের কণ্ঠে গান দ্রুত সাড়া ফেলে শ্রোতাদের কাছে।

ক্যানসারে ভুগে ২০১১ সালের ৫ জুন মারা যান এই পপসম্রাট।

পিআর প্রতিষ্ঠান কুল এক্সপোজারের প্রধান নির্বাহী টিংকু সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আজম ভাই যতদিন জীবিত ছিলেন, তখন উনি এটা (উচ্চারণ ব্যান্ড) টেক কেয়ার করতেন। আজম ভাই মারা যাওয়ার পর এটার অফিসিয়ালি আর কোনও এক্সিসটেন্স নেই। যে ব্যান্ডই নেই, তার আবার ভোকাল কোথা থেকে আসবে?”

রেবেলকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে আজম খানের পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ও প্রতিবাদ জানিয়েছে; বললেন এরশাদুল হক টিংকু।

পপগুরুর পরিবারের পক্ষ থেকে তিনি বলেন,  “এটা আজম ভাই এবং উচ্চারণ ব্যান্ডের জন্য ব্যাড একটা রিপোর্ট। 

“ও (রেবেল) ২০১৮ সালের পর আজম খান বা উচ্চারণ ব্যান্ডের কোনও কিছুর সঙ্গে জড়িত না। ও ব্যান্ড ছেড়ে দিয়েছে বহু আগে।”

ক্ষোভের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আজম ভাইয়ের যে ইমেজ … যে জায়গা … সেই জায়গা থেকে এরকম একটা নিউজ … উচ্চারণ ব্যান্ডের নামটা ইউজ করাতে আসলে সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।  আজম খানের পরিবার থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

“বিশেষ করে উনার গড়া উচ্চারণ ব্যান্ড নিয়ে কনফার্ম না হয়ে এরকম রিপোর্ট চলতে থাকলে তাহলে মানহানির মামলা হবে। তাই এ ব্যাপারে সাবধান হতে মিডিয়ার প্রতি অনুরোধ করা হচ্ছে।”

এ ধরনের সংবাদ শিরোনামে শিল্পীসমাজও ফোন করে উদ্বেগ জানাচ্ছে, বললেন তিনি।

“উচ্চারণ এবং আজম খানের সঙ্গে এক সময় অনেক আর্টিস্ট জড়িত ছিল। অনেক সিনিয়র মিউজিশিয়ান এখনও আছেন। আমাকে ফেরদৌস ওয়াহিদ ফোন দিয়েছিল। হাবলু ভাই (পারকাশন বাদক কাজী হাবলু) ফোন দিয়েছিল। ফোয়াদ নাসের বাবু (ফিডব্যাক ব্যান্ডের), মাকসুদ ভাই (ঢাকা ব্যান্ডের), লাবু ভাই (গিটারিস্ট লাবু রহমান), পিয়ারু ভাই (ড্রামার পিয়ারু খান), ওয়ারফেজ ব্যান্ডের টিপু ভাই (শেখ মনিরুল আলম টিপু) – এমন কোনও মিউজিশিয়ান নাই, যারা আজম ভাইয়ের সঙ্গে বাজাননি কিংবা গাননি।”  

এনামুল কবির রেবেল এক সময় সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন। পরে চাকরি চলে গেলে নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। ২০১৮ সালের পর থেকে গান নিয়ে কাজ করতেও দেখা যায়নি তাকে।

টিংকু বলেন, “রেবেল  এনটিভিতে চাকরি করতো; এডিটর হিসেবে। পরবর্তীতে ওর চাকরি চলে যায়। পরে আমি যতটুকু জানি ও ঘরে নিজের মতো থাকে। ও কোনও অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে ছিল না। হয়ত কোভিডের আগে-পরে সে এসবের (মাদকচক্র) সঙ্গে জড়িত হয়েছে।”

উচ্চারণ ব্যান্ডের সদস্যদের বিষয়ে তিনি বলেন, “ইরফান, জুবরান ছিল। বেজিস্ট জুবরান  মারা গেছে। গিটারিস্ট ইরফান এখন বাজায় না। আসলে পরবর্তীতে একটা ইয়ং গ্রুপ উচ্চারণ ব্যান্ডের দায়িত্ব নিয়েছিল।  … আজম ভাই মারা যাওয়ার পর ওরা এদিক-ওদিক শো করেছে। আজম খানের গানটান গায় … ওইটা ঠিক আছে। 

“কিন্তু আজম খানের গান করার মানে এই নয় যে সে (রেবেল) উচ্চারণ ব্যান্ডের সদস্য।”

উচ্চারণের বেঁচে থাকা সদস্যদের সঙ্গে রেবেল দুয়েকটি অনুষ্ঠান করেছে স্বীকার করেই টিংকু বলেন, “উচ্চারণ ব্যান্ড তো নেই। অথচ উচ্চারণ ব্যান্ডের নামটাম-গানটান দিয়ে যেভাবে নিউজ করছে… এটা আসলে বন্ধ করতে হবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত