Beta
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি কেন?

বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা গভর্নর ভবনের সামনের সিঁড়িতে বসে ঘণ্টা দেড়েক অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা গভর্নর ভবনের সামনের সিঁড়িতে বসে ঘণ্টা দেড়েক অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

তথ্যসংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধে যাতায়াত করতে পারলেও বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এ বিষয়টি স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছে সাংবাদিকরা।

পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য দেশের এই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অবাধে যাতায়াতের সুযোগের জন্য গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেও কোনও সুরাহা হয়নি।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হওয়া ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের গণমাধ্যমে কর্মরত অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়মিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের যাতায়াতের সুযোগ আগের মতো উন্মুক্ত রাখার দাবি তুলে ধরে ইআরএফ নেতারা। তবে বৈঠকে গভর্নর কোনও সমাধান দেননি।

এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে উপস্থিত ব্যাংক বিটের সাংবাদিকরা গভর্নর ভবনের সামনের সিঁড়িতে বসে ঘণ্টা দেড়েক অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

সাংবাদিকরা মনে করছে, বিগত কয়েক মাসে ব্যাংক খাত নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কতিপয় সংবাদ প্রতিবেদনের কারণে সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ধরনের প্রতিবেদন যাতে আর না হয় সেজন্য সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ কড়ায় নিয়মিত তথ্য-উপাত্ত্ব সংগ্রহ করা আগের থেকে কঠিন হয়ে পড়েছে, যা এই পেশার কর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য অনেকটা হুমকি স্বরূপ।

এ কারণে আবারও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অবাধে যাতায়াতের সুযোগ উন্মুক্ত করার দাবি করেছে সাংবাদিকরা।

এই দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়েই গভর্নরের সঙ্গে ইআরএফ নেতারা বৈঠক করেন। তারা সাংবাদিকদের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে গভর্নরকে বিষয়টি সুরাহা করার আহ্বান জানান।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যাংক বিটের সাংবাদিক রহিম শেখ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সাংবাদিকদের জন্য আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধ যাতায়াত ছিল। বেশ কিছু দিন ধরে সেখানে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

“গত কয়েকদিন কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের সঙ্গে দেখা করার জন্য সাংবাদিকদের নামে পাস ইস্যু করা হয়েছে। এতে সংবাদকর্মীদের ব্যাংক খাত নিয়ে সংবাদ পরিবেশন আগের থেকে কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।”

তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, কেননা, সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে হয় সোর্সের মাধ্যমে। তবে সোর্স পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারলে অনেক তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

বৃহস্পতিবার ইআরএফের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গভর্নরের বৈঠকের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, এখন থেকে সাংবাদিকরা পাস ইস্যুর মাধ্যমে ব্যাংকের শুধু নির্দিষ্ট কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। যে কর্মকর্তা পাস ইস্যু করবে, সেই কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনও ডেস্কে বা কোনও কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন না সাংবাদিকরা।

এখানে বলে রাখা দরকার, আগেও পাস ইস্যুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূলভবনসহ অন্য দুটি ভবনে প্রবেশ করতে পারত সাংবাদিকরা। তবে ওই পাস দিয়ে সংশ্লিষ্ট ভবনে থাকা একাধিক বিভাগ ও একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারত তারা।

নতুন নিয়মের ফলে এই সুযোগ আর থাকছে না বলে জানিয়েছেন ব্যাংক বিটের সাংবাদিকরা।

তবে মেজবাউল হক সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে বলে জানিয়েছেন।

এ নিয়ে ব্যাংক বিটের সাংবাদিকরা সপ্তাহখানেক আগেও মুখপাত্রের সঙ্গে কথা বলেন। তখনও তিনি সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপের কারণ হিসেবে ব্যাংক খাত নিয়ে সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণের কথা বলেন।

তার মতে, এ ধরনের প্রতিবেদন যে প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যমে উপস্থাপন করতে হয়, অনেক সংবাদকর্মী তা অনুসরণ না করায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের ব্যাংক খাতের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে আরও সচেতন করে তুলতে প্রয়োজনীয় কর্মশালার আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

আগামী মাসের শুরুতে এ ধরনের একটি কর্মশালা আয়োজন করা হবে বলেও জানান বাংলাদেশ ব্যাংক মুখপাত্র।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত