Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

‘অখ্যাত’ হোসেলুর বিখ্যাত হয়ে ওঠা

রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হোসেলু। ছবি: টুইটার
রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হোসেলু। ছবি: টুইটার
Picture of ক্রীড়া ডেস্ক

ক্রীড়া ডেস্ক

করিম বেনজেমা সান্তিয়াগো বার্নাব্যু ছাড়লেন। রিয়াল মাদ্রিদের প্রয়োজন পড়ল স্ট্রাইকারের। সবসময় বড় নামের পেছনে ছোটা মাদ্রিদের ক্লাবটি এবার দলবদলের বাজারে কৌশল পাল্টাল। এস্পানিওল থেকে এমন একজনকে ধরে আনলো, ইউরোপিয়ান ফুটবলে যার প্রভাব নেই বললেই চলে। তাও সরাসরি কেনার প্রক্রিয়ায় যায়নি, স্থায়ী চুক্তি করার শর্ত রেখে এক বছরের জন্য ধারে দলে টানে ওই খেলোয়াড়কে। কে জানতো মৌসুমের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ ম্যাচে সেই ‘অখ্যাত’ খেলোয়াড়টিই নায়ক বনে যাবেন!

বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠেছে রিয়াল। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর যে মহারণে উপসংহার টেনে দিলেন ধারে আসা খেলোয়াড়টি। তিনি হোসেলু। ০-১ গোলে পিছিয়ে থাকা স্বাগতিকদের শুধু সমতায় ফেরালেন না, যোগ করা সময়ে জাল খুঁজে নিয়ে ফাইনাল আনন্দে মাতালেন গোটা বার্নাব্যুকে। বেঞ্চ থেকে উঠে এসে জোড়া গোলে প্রশংসার বানে ভাসছেন ৩৪ পেরিয়ে যাওয়া এই স্ট্রাইকার।

রিয়ালে তার তৃতীয়-অধ্যায়

রিয়াল মাদ্রিদে এটি তার তৃতীয় অধ্যায়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মাদ্রিদের ক্লাবের অংশ হয়েছেন কাস্তিয়া বা ‘বি’ দল দিয়ে। ২০১১ সালে দ্বিতীয় দফায় কাটিয়েছিলেন এক বছর। সেবার এক ম্যাচে ১ গোলে থেমেছিল রিয়াল-অধ্যায়। এরপর জার্মানি ও ইংল্যান্ডে ক্যারিয়ার স্থায়ী করার চেষ্টা করেও হয়েছেন ব্যর্থ। শেষে দেপোর্তিভো আলাভেসে এসে আলোর দেখা মেলে তার। সেখানে তিন বছর কাটিয়ে ২০২২ সালে যোগ দেন এস্পানিওলে। সেখান থেকেই আবার বার্বান্যুতে ফেরেন ১১ বছর পর।

জার্মানির স্টুটগার্টে জন্ম নেওয়া হোসেলু চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে পাড়ি দেন স্পেনে। সেখানেই শুরু তার ফুটবল ক্যারিয়ার। দারুণ সম্ভাবনাময় এই স্ট্রাইকার সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পেরেছেন সামান্য। তবে গত বছর রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর একটু একটু করে নিজেকে ফিরে পেতে থাকেন। আর বায়ার্নের বিপক্ষে তো ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচটাই খেলে ফেললেন তিনি।

বায়ার্ন তখন ১-০ গোলে এগিয়ে। গোলের খোঁজে মরিয়া রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি ৮১ মিনিটে নামিয়ে দেন হোসেলুকে। মাঠে নামার ৭ মিনিটের মধ্যে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান এই স্ট্রাইকার। এরপর যোগ করা সময়ে আবারও জাল খুঁজে নিয়ে নাটকীয় জয় এনে দেন এই সুপার-সাব।

কী বলছেন হোসেলু

সর্বত্র চলছে এই নায়কের প্রশংসা। সিক্ত হচ্ছেন রিয়াল সমর্থকদের ভালোবাসায়। হোসেলু নিজে কি কখনও ভেবেছিলেন, এত বড় মঞ্চে নায়কের ভূমিকায় আবির্ভূত হবেন তিনি? রিয়াল স্ট্রাইকার জানালেন, এত বড় স্বপ্ন দেখার সাহসই হয়নি তার।

জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হোসেলু নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এভাবে, “আপনি অবশ্যই এই ধরনের পারফরম্যান্সের স্বপ্ন দেখবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে আমার সুন্দর স্বপ্নগুলো কখনও এত বড় ছিল না, যেমনটা ঘটেছে। নায়ক হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে আমি খুশি।”

সর্বত্র প্রশংসার জোয়ার

সঙ্গে যোগ করেছেন, “এটা আসলে অবিশ্বাস্য, দর্শনীয় ব্যাপার। এই দল কখনও হাল ছেড়ে দেয় না। এই দলটির রক্তেই আছে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার মানসিকতা। এবং আমরা সেটাই করে দেখিয়েছি।”

হোসেলুর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ রিয়াল মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম, “আমার মনে হয় না সে রাতে খুব একটা ঘুমাতে পারবে। সে এটার (প্রশংসার) দাবিদার। এই দলটার দারুণ এক সদস্য সে। এই রাতটা তার।”

রিয়াল-বায়ার্ন ম্যাচে উত্তেজনার সব রসদ জমা ছিল। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে কে নায়ক হবেন, সেই আলোচনাও হয়েছে ব্যাপক। তবে সেখানে হোসেলুর নাম কোথাও ছিল না। সেকারণেই রিয়ালের দুইবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী সাবেক ইংলিশ উইঙ্গার স্টিভ ম্যাকমানামান বলেছেন, “আপনি কখনও চিন্তাই করেননি ‘হোসেলু উদ্ধার করবে’। বরং সুযোগ নষ্ট করায় সে সমালোচনার শিকার হয়েছে, কিন্তু এই ধরনের পারফরম্যান্সের পর ওইসব (সুযোগ নষ্ট) আর কে মনে রাখে।”

মিশন ‘১৫’

রিয়ালের সামনে হাতছানি দিচ্ছে ১৫তম চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। ওয়েম্বলির ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। শিরোপা হাতছোঁয়া দূরত্বে রেখে বার্নাব্যুতে ট্রফি সংখ্যার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে লস ব্লাঙ্কোস। বায়ার্নকে হারানোর পর বেলিংহাম-ভিনিসিয়ুসরা পরেছিলেন ‘আ পোর লা ফিফটিন’ লেখা জার্সি। স্প্যানিশ এই বাক্যের অর্থ হলো ‘পনেরোর জন্য যাচ্ছি’।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত