Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

একীভূত হতে চায় না ন্যাশনাল ব্যাংক

SS-national-bank-280424
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক এখনই কোনও ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চায় না। বরং যেসব সংকটের কারণে ব্যাংকটির একীভূত করা নিয়ে আলোচনা চলছে, সেসব সমস্যা সমাধানে জোর তৎপরতা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি।

গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয় পরিচালকরা।

এর আগে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) উদ্যোক্তারা ন্যাশনাল ব্যাংককে তাদের ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করতে সম্মতি জানায়।

ন্যাশনাল ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানায়, ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই ইউসিবির সঙ্গে একীভূত করার কথা বলা হয়েছে। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে এ ধরনের একটি খবর কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এতে ব্যাংকটির আমানতকারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে অনেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে শুরু করে।

গত শনিবার অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় ন্যাশনাল ব্যাংকের সমস্যাগুলো সমাধানে কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন পরিচালকরা।

এ বিষয়ে ব্যাংকটির এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ন্যাশনাল ব্যাংক এখনও অনেক ব্যাংকের থেকে ভালো অবস্থানে আছে। এর অধিকাংশ শাখাই এখনও লাভজন অবস্থায় আছে।

“ফলে এখনও ব্যাংকটির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। এ জন্য ঋণ আদায় জোরদার করতে হবে বলে অভিমত জানিয়েছে পর্ষদ।”

তিনি আরও বলেন, “যেসব সংকটের কারণে এই একীভূত করার কথা হচ্ছে, সেই সংকটগুলো কাটিয়ে ওঠা গেলে তো আর একীভূত করার আলোচনা থাকে না।”

ন্যাশনাল ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, খেলাপি ঋণ আদায়ে পরিচালনা পর্ষদ শীর্ষ খেলাপিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় কর্মকর্তাদের ঋণ আদায়ের একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হবে।

গত ডিসেম্বরে সিকদার পরিবারের বিতর্কিত পরিচালকদের সরিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে।

গত শনিবার ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ৪৯৮তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় ২০২৩ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদিত ও স্বাক্ষরিত হয়েছে।

চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারের সভাপতিত্বে সভায় পরিচালকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন পারভীন হক সিকদার, পরিচালক ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম এবং পরিচালক লে. জেনারেল মো. শফিকুর রহমান, ওএসপি (বার), এসপিপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি (অবসরপ্রাপ্ত), ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম খান।

সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক খলিলুর রহমান ও স্বতন্ত্র পরিচালক এম কামাল হোসেন।

গত ১৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, আপাতত ১০টি ব্যাংকের বাইরে অন্য কোনও ব্যাংক স্বেচ্ছায় একীভূতকরণের আবেদন নেওয়া হবে না।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে এক্সিমের সঙ্গে পদ্মা একীভূত হওয়ার বিষয়ে এমওইউ সই করেছে। এছাড়া সিটির সঙ্গে বেসিক, সোনালীর সঙ্গে বিডিবিএল এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) একীভূত করার কথা জানা যায়।

গত বছরের ডিসেম্বরে দুর্বল ব্যাংক শনাক্ত করে সংস্কারমূলক ব্যবস্থা নিতে প্রমট্ কারেকশন অ্যাকশন (পিসিএ) ফ্রেমওয়ার্ক সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই পিসিএর আলোকে কোনও ব্যাংকের খেলাপি ঋণ, মূলধন পরিস্থিতি, ব্যবস্থাপনার সুশাসন ও তারল্য পরিস্থিতি— এই ৪টি সূচকের ভিত্তিতে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করে একীভূত করতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি একটি রোডম্যাপ হাতে নেয় ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

ওই রোডম্যাপের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় একীভূত না হলে আগামী বছরের মার্চ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

গত ৪ এপ্রিল ব্যাংক কীভাবে একীভূতকরণ করা হবে- সে বিষয়ে নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত