ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সেনাদের পাঠানো হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাইয়ানি।
ইতালির ভেরোনা শহরে শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ আশঙ্কার কথা জানান বলে আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাইয়ানির কাছে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়ে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো কোনও চিন্তাভাবনা করছে কি না।
জবাবে তাইয়ানি বলেন, “আমি মনে করি, ন্যাটোর সেনাদের ইউক্রেনের মাটিতে পা রাখা উচিত নয়। এটা হলে ভুল হবে। ইউক্রেন নিজেদের রক্ষায় যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, আমাদের উচিত তাদের পাশে থেকে সহায়তা করা।
“তবে দেশটিতে ঢুকে যদি আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামি, তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকিতে পড়বে বিশ্ব।”
ইউক্রেনের আত্মরক্ষার লড়াইয়ে ইতালি তার সেনাদের দেশটিতে পাঠাবে না বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাইয়ানি।
তখন তার কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, সেক্ষেত্রে ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশ বিশেষত ফ্রান্স তাদের সেনা ইউক্রেনে পাঠাবে কি না। জবাবে তাইয়ানি বলেন, “এর কোনও সম্ভাবনা নেই।”
ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংবাদিকদের ফ্রান্সের নাম উল্লেখ করার কারণ আছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সম্প্রতি ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা পাঠানোর বিষয়ে ফের মন্তব্য করেন।
সাক্ষাৎকারে রাশিয়াকে ‘প্রতিপক্ষ’ হিসেবে অভিহিত করেন মাখোঁ। অবশ্য একই সঙ্গে তিনি এও জানান, মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাবে না প্যারিস। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলমান লড়াইয়ে তারা কেবল ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে যাবে।
ফরাসি সেনাদের ইউক্রেনে পাঠানোর কোনও সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাওয়া হলে মাখোঁ পরিষ্কার করে কিছু বলেননি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে এক ধরনের ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’ বজায় রাখার পক্ষে তিনি। ইউক্রেনে আদৌ ফ্রান্স সেনা পাঠাবে কি না, এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু না বলার তার ‘নিজস্ব কারণ’ আছে।
এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সই প্রথম কথা বলে। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাখোঁ সে সময় বলেছিলেন, এ ধরনের চিন্তা একেবারে বাতিল করা হচ্ছে না।
মাখোঁর ওই মন্তব্য শুনে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর অন্য সদস্যরাষ্ট্রগুলো প্রতিক্রিয়া জানায়। শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো এ ধরনের সম্ভাবনাকে দ্রুত নাকচ করে দেয়।
যদিও ন্যাটোর কম শক্তিশালী দেশ ও জোটটির সদ্য সদস্যপদ পাওয়া ফিনল্যান্ড ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছিল।