‘এক আনা’ লুটেরা গোষ্ঠি দেশের ‘পনের আনা’ মানুষকে রাজনৈতিকভাবে জিম্মি করে রেখেছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের।
তিনি বলেছেন, এই জিম্মিদশা থেকে জনগণকে মুক্ত করতে হলে রাজনীতির নেতৃত্ব শ্রমিকশ্রেণি ও মেহনতি মানুষকে নিতে হবে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়েই শ্রমিকশ্রেণিকে রাজনীতির হাল ধরতে হবে। শ্রমিকশ্রেণিই একমাত্র ভরসা।
বুধবার ঢাকার পুরনো পল্টনের কমরেড মণি সিংহ সড়কে বিভিন্ন শিল্প ও অসংগঠিত খাতের শ্রমিক সংগঠনগুলোর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কেন্দ্রীয় শ্রমিক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “ক্ষমতাসীনরা দেশের শ্রমিক ও মেহনতি জনগণকে একদিকে সীমাহীন চরম শোষণ-বঞ্চনার নিষ্ঠুর শিকারে পরিণত করেছে। অন্যদিকে প্রতিবাদের অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নিয়েছে।”
সমাবেশে অংশ নেন পোশাক শিল্প, পাটকল, পরিবহন, রিকশাচালক ও হকারসহ বিভিন্ন খাতের শ্রমিকরা।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে ও পরিবহন শ্রমিকনেতা হযরত আলীর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রাকসুর সাবেক ভিপি কৃষকনেতা রাগীব আহসান মুন্না, শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার, গার্মেন্ট টিইউসির সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম, বাংলাদেশ বস্তিবাসী ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, প্রাইভেটকার ড্রাইভার্স ইউনিয়নের যুগ্ম-আহ্বায়ক হোসেন আলীসহ অন্যরা।
সমাবেশ থেকে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, বিরাষ্ট্রীয়করণ বন্ধ করে পাট ও চিনিকল, সুতা ও বস্ত্রকলসহ বন্ধ সব কল-কারখানা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু করা, শ্রম আইন ও বিধিমালা বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন, নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিকের জন্য সস্তায় পূর্ণ-রেশনিং চালু, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করা, ইপিজেডসহ সব ক্ষেত্রে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, লে-অফ, লক-আউট, ছাঁটাই-নির্যাতন, মিথ্যা মামলা-গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ, পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ না করা; ইত্যাদি।
এছাড়া চা শ্রমিকের ভূমির অধিকার ও দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ, নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান- ইজিবাইকের লাইসেন্স ও রুট পারমিট দেওয়া এবং সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বন্ধেরও দাবি জানানো হয়।